১১ বছরের অপেক্ষার অবসান, ফাইনালে প্রীতির পাঞ্জাব
Published: 2nd, June 2025 GMT
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে স্বপ্নপূরণের প্রতীক্ষায় ছিল প্রীতি জিনতার পাঞ্জাব কিংস। ২০১৪ সালে একবারের জন্য ফাইনাল ছুঁয়ে দেখা হলেও শিরোপা অধরা থেকে গিয়েছিল। এরপর অনেক সময় কেটে গেছে, বদলেছে অধিনায়ক, বদলেছে স্কোয়াড; কিন্তু ফাইনাল ও ট্রফির স্বাদ অধরাই থেকে গিয়েছিল।
অবশেষে ২০২৫ সালের আইপিএলে সেই দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটাল পাঞ্জাব। আবার তারা পৌঁছে গেছে ফাইনালের মঞ্চে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। আগামীকাল মঙ্গলবার রাত ৮টায় ফাইনালে মুখোমুখি হবে দল দুটি।
রোববার (০২ জুন) রাতে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে পাঞ্জাব ৫ উইকেটে শক্তিশালী মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারায়। এই জয়ে তারা পেয়ে গেল শিরোপা জয়ের সুযোগ।
আরো পড়ুন:
অপসারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট ফারুকের
আন্তর্জাতিক কোচ হতে চান মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক, জানালেন বিসিবি সভাপতি
এদিন টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় পাঞ্জাব। মুম্বাইয়ের ইনিংসের শুরুটা ছিল ধীরগতির। দলীয় মাত্র ১৯ রানেই হারায় রোহিত শর্মার উইকেট। এরপর জনি বেয়ারস্টো ও তিলক ভার্মার জুটিতে মুম্বাই কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। বিজয়কুমার এসে ভাঙেন এই ৫১ রানের জুটি। এরপর তিলক ও সূর্যকুমারের মধ্যে হয় ৭২ রানের আরেকটি জুটি। কিন্তু ওই একই ওভারে তারা দুজনেই ফিরে যান ৪৪ রান করে। শেষদিকে ধীরের ১৮ বলে ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস মুম্বাইকে এনে দেয় ২০৩ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ।
পাঞ্জাবের পক্ষে বোলিংয়ে উজ্জ্বল ছিলেন আফগান তারকা আজমতউল্লাহ ওমারজাই। দুটি উইকেট শিকার করেন তিনি।
২০৪ রানের বিশাল লক্ষ্য সামনে রেখে ব্যাটিংয়ে নামে পাঞ্জাব। ইনিংসের শুরুতেই হারায় প্রভসিমরন সিংকে। এরপর জস ইংলিশ ও আরিয়া কিছুটা চেষ্টা করলেও অশ্বনী কুমার তাদের জুটিকে বেশি বড় হতে দেননি। ৭২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপেই পড়ে যায় পাঞ্জাব।
ঠিক তখনই দৃঢ় কাঁধে দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। তার সঙ্গে হাত মেলান তরুণ ব্যাটার নেহাল ওয়াধেরা। দুজনের ব্যাটে ভর করেই দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়ায় পাঞ্জাব। ওয়াধেরা ফিরে যান ২৯ বলে ৪৮ রান করে। তবে আইয়ার থামেননি। শেষ পর্যন্ত ৪১ বলে ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে দলকে এনে দেন বহুল কাঙ্খিত জয়। ম্যাচ জয়ের সময় পাঞ্জাবের হাতে ছিল এক ওভার ও পাঁচটি উইকেট।
মুম্বাইয়ের পক্ষে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন অশ্বনী কুমার। যিনি দুটি উইকেট শিকার করেন। ৪১ বলে ৫টি চার ও ৮ ছক্কায় অপরাজিত ৮৭ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন আইয়ার।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ইন ল উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।