চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যাসহ পাঁচ মামলায় বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। অসুস্থতার কারণ উল্লেখ করে চিকিৎসার জন্য চিন্ময়ের জামিন আবেদন করা হয়।
আসামি চিন্ময়ের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ঘোষ বলেন, সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণের বিরুদ্ধে আইনজীবী আলিফ হত্যা, পুলিশের ওপর হামলাসহ পাঁচটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পাঁচ মামলায় তাঁর জামিন চেয়েছিলাম। ঘটনার সময় তিনি জেলে ছিলেন; কোনোভাবেই এ ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন না। বর্তমানে তিনি লিভার সিরোসিসসহ জটিল রোগে আক্রান্ত। এ অবস্থায় তাঁর উন্নত চিকিৎসায় জামিন প্রয়োজন। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।
গত বছরের ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। পরে ৩১ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এর পর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় তাঁকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর তিনি কারাগারে রয়েছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আইনজীবী হত্যাসহ ৫ মামলায় চিন্ময় দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যাসহ পাঁচ মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিক শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে থাকা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কোতোয়ালি থানার হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরসহ পাঁচ মামলায় জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে দাবি করেন তাঁর আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
মফিজ উদ্দিন আরও বলেন, চিন্ময় দাস অসুস্থ বলে আদালতকে জানান তাঁর আইনজীবীরা। এরপর আদালত কারাবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
চিন্ময়ের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনানিতে আমরা আদালতকে বলেছি, চিন্ময় দাস কারাগারে অসুস্থ। তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। এ ছাড়া ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁকে এসব মামলায় জড়ানো হয়েছে। তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ।’ এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জামিন চাইতে এসে কোনো বাধার সম্মুখীন হননি তাঁরা।
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ মে চিন্ময় দাসকে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলায় ভার্চ্যুয়াল শুনানি শেষে গ্রেপ্তার দেখান আদালত। পরে অন্য মামলাগুলোয় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এদিকে চিন্ময় দাসের জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধার, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাঁদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল ইসলাম হত্যার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন পিটিয়ে হত্যা করেন।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ওই মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।