সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন বা সংসদে নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কতটুকু স্বাধীনতা দেওয়া হবে, সে প্রশ্নে অনেকটাই কাছাকাছি অবস্থানে এসেছে রাজনৈতিক দলগুলো। কিছু সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে করার বিষয়েও অনেকটা ঐকমত্য হয়েছে। তবে সংরক্ষিত নারী আসন ১০০–তে উন্নীত করা এবং নারী আসনে নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মতপার্থক্য দূর হয়নি।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় গতকাল মঙ্গলবার এ তিন বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে নারী আসন–সংক্রান্ত আলোচনা শেষ হয়নি। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির পর ১৬ বা ১৭ জুন আবার আলোচনা হবে।

গত সোমবার দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। প্রথম পর্বের আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি, সেগুলো নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা হচ্ছে।

গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আলোচনা শুরু হয়। এক ঘণ্টার মতো মধ্যাহ্নবিরতি দিয়ে আলোচনা চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ ৩০টি দল ও জোটের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। গতকালের আলোচনাটি বিটিভি নিউজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

বিদ্যমান সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন না। তাতে বলা আছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি যদি ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন বা সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোট দেন, তাহলে সংসদে তাঁর আসন শূন্য হবে।

এই বিধানে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন। তাদের প্রস্তাব ছিল, অর্থবিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্যদের নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে প্রথম পর্বের আলোচনায় বেশির ভাগ দল ৭০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত ছিল। তবে অর্থবিলের সঙ্গে আরও কিছু বিষয় যুক্ত করার প্রস্তাব ছিল দলগুলোর। সেই আলোচনার ভিত্তিতে গতকালের আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব উত্থাপন করে, তা হলো অর্থবিল, আস্থা ভোট ও সংবিধান সংশোধন বিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন।

কোনো কোনো দল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত, এমন সব বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়া যাবে না, এমন শর্ত যুক্ত করার কথা বলে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিএনপির প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আস্থা ভোট, অর্থবিল, সংবিধান সংশোধন বিলের পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা জড়িত, এমন বিল বাদে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন।

এনসিপির অবস্থান তুলে ধরে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, তাঁদের অবস্থান হলো অর্থবিল ও আস্থা ভোট বাদে অন্য বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়া যাবে। সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে সংসদের উচ্চকক্ষ হচ্ছে কি না, হলে কীভাবে হচ্ছে, তা দেখে তাঁরা অবস্থান জানাবেন।

৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে আলোচনার সময় জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। তবে দলটি অর্থবিল, আস্থা ভোট ও সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে একমত হলেও জাতীয় নিরাপত্তা–সংক্রান্ত বিষয়ে বিএনপির প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নয়। দুপুরে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের দলের এ অবস্থানের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয় বলতে যেহেতু জরুরি মুহূর্তকে বলা হচ্ছে, আমাদের অবস্থান হলো জরুরি পরিস্থিতিকে জরুরিভাবেই মোকাবিলা করা হবে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অর্থবিল, আস্থা ভোট ও সংবিধান সংশোধন বিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন—এ বিষয়ে অনেকটাই ঐকমত্য হয়েছে। তবে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়নি।

বিরোধী দল থেকে সংসদীয় কমিটির সভাপতি

বিদ্যমান সংবিধানে কোন সংসদীয় কমিটির সভাপতি কোন দল থেকে হবে, তার উল্লেখ নেই। সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবে সব কটি সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে করার প্রস্তাব দিয়েছিল।

প্রথম পর্যায়ের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকালের আলোচনায় এ বিষয়ে নতুন প্রস্তাব তুলে ধরেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, প্রথম পর্বের আলোচনার সময় কমবেশি সবাই চারটি কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে করার উচিত বলে উল্লেখ করেছেন। সেগুলো হলো সরকারি হিসাব কমিটি, অনুমিত হিসাব কমিটি, সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটি ও বিশেষ অধিকার–সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। এর বাইরেও কেউ কেউ আরও কিছু কমিটির প্রস্তাব করেছেন।

গতকালের আলোচনায় বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই চারটির সঙ্গে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কিছু সংসদীয় কমিটির সভাপতিও বিরোধী দল থেকে করার প্রস্তাব দেয়। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, শিক্ষা, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি অন্যতম।

আবার কোনো কোনো দল ৫০ শতাংশ কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে দেওয়া, কেউ কেউ আনুপাতিক হারে কমিটির সভাপতি পদ বণ্টনের প্রস্তাবও দেয়।

তবে বিরোধী দলকে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কোন কোন কমিটির সভাপতি পদ দেওয়া হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়ার পক্ষে নয় বিএনপি। দলটির নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কমিশনের প্রস্তাবিত চারটি কমিটির বাইরে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কমিটিগুলো সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ, বিরোধী দল যদি আকারে ছোট হয়, তখন সভাপতি দেওয়ার মতো সদস্য পাওয়া যাবে না। তাঁরা মনে করেন, সংসদে আলোচনা ছাড়া এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে না। বিএনপির ‘নিয়ত’ আছে আরও বেশি সভাপতি বিরোধী দল থেকে দেওয়ার।

এ বিষয়ে দলগুলোর প্রতিনিধিদের বক্তব্যের শেষে আলী রীয়াজ বলেন, চারটি সুনির্দিষ্ট সংসদীয় কমিটির বিরোধী দলের নেতৃত্বে হবে, এটাতে সবাই একমত। এর বাইরে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কমিটি যাতে বিরোধী দলকে দেওয়া হয়, সে বিষয়ে উল্লেখ করা জরুরি। সেটা নির্ধারণের ক্ষেত্রে দুটি প্রস্তাব আছে। একটি সংখ্যানুপাতিক হারে, অপরটি হলো সর্বনিম্ন বা সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ। যখন চূড়ান্ত খসড়া করা হবে তখন এটা নিয়ে আলাপ করে নেওয়া হবে।

সংরক্ষিত নারী আসন নিয়ে বিতর্ক

বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী, সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন আছে ৫০টি। নির্বাচনে দল বা জোটগুলোর প্রাপ্ত আসনের অনুপাতে নারী আসন বণ্টন করা হয়।

সংসদের নিম্নকক্ষের মোট আসন ৪০০টি করা, এর মধ্যে নারী আসন ১০০টি করা এবং এসব আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাব করেছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশন।

গতকাল এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও তা শেষ হয়নি। সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ১০০টি নারী আসন করা নিয়েও ভিন্নমত দেখা গেছে।

আলোচনায় জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ঘূর্ণমান পদ্ধতিতে ভোট হলে জটিলতা হবে। আগে নির্বাচনের পদ্ধতির বিষয়ে একমত হতে হবে। যদি নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে হয়, তাহলে তারা আসনসংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে একমত।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেন, তাঁরা চান সংসদে ৪০০ আসন হউক। সবই উন্মুক্ত থাকবে, কোনো কোটার প্রয়োজন নেই।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই। এটি নারীদের জন্য সম্মানজনক নয়। তাঁরা আনুপাতিক পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষে ভোট চান। সেখানে মোট ভোটারের অর্ধেক নারী। তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য অর্ধেক পাবেন।

এর বাইরেও কোনো কোনো দল আসন বাড়ানোর প্রস্তাবে ভিন্নমত জানান। একপর্যায়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় ২৪টির বেশি দল ৪০০ আসন করার বিষয়ে দ্বিমত করেনি। এখন এসে দ্বিমত করলে সমস্যা তৈরি হয়।

তখন জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা শর্ত সাপেক্ষে একমত হয়েছিল। সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে তারা আসন ৪০০টি করার বিষয়ে একমত।

আলোচনার এক পর্যায়ে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা বলেন, সংসদের নিম্নকক্ষের আসন ৪০০টি করা এবং এর মধ্যে ১০০টি সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাবে তাঁরা একমত।

সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে বিএনপির মত ভিন্ন। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা নারী আসন ১০০টি করার বিষয়ে একমত। তবে তারা চায় বিদ্যমান পদ্ধতি নারী আসনে নির্বাচন হোক।

পরে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে আলোচনা হবে। ঈদের ছুটির পরপর ১৬ বা ১৭ জুন আবার দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।

দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় সনদ

গতকাল আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার কার্যক্রমে বিভিন্ন কমিশনের প্রস্তাবই চূড়ান্ত নয়। রাজনৈতিক দলগুলো যেসব মতামত দিয়েছে, তার ভিত্তিতে পরিবর্তিত প্রস্তাব নিয়েই রচিত হবে জাতীয় সনদ। তিনি বলেন, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, সেগুলো জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত হবে না।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা কিছু জায়গায় একমত হব। বাকিটা রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করবে। জনগণ কতটা গ্রহণ করবে, সেটা তাদের বিষয়।’

আলোচনায় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো.

এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান ও মো. আইয়ুব মিয়া উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র প রস ত ব স রক ষ ত ন র র য় জ বল ন ন ম নকক ষ প রথম পর অবস থ ন ব এনপ র দলগ ল র উল ল খ পর য য় দল থ ক

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।

জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।

জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।

এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।

জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।

জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের সুপারিশ, একমত নয় দলগুলো
  • ‘সংবিধান আদেশ’ জারির সুপারিশ করতে পারে কমিশন: আলী রীয়াজ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • কমিটি গঠন, প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত 
  • বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
  • বিএনপি নির্বাচনমুখী কর্মসূচিতে যাবে
  • দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন
  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হতে হবে
  • জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ফের এক মাস বাড়ল
  • সব দলের সম্মতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে এবি পার্টি