৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন প্রশ্নে কাছাকাছি অবস্থানে দলগুলো
Published: 4th, June 2025 GMT
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন বা সংসদে নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কতটুকু স্বাধীনতা দেওয়া হবে, সে প্রশ্নে অনেকটাই কাছাকাছি অবস্থানে এসেছে রাজনৈতিক দলগুলো। কিছু সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে করার বিষয়েও অনেকটা ঐকমত্য হয়েছে। তবে সংরক্ষিত নারী আসন ১০০–তে উন্নীত করা এবং নারী আসনে নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মতপার্থক্য দূর হয়নি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় গতকাল মঙ্গলবার এ তিন বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে নারী আসন–সংক্রান্ত আলোচনা শেষ হয়নি। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির পর ১৬ বা ১৭ জুন আবার আলোচনা হবে।
গত সোমবার দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। প্রথম পর্বের আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি, সেগুলো নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা হচ্ছে।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আলোচনা শুরু হয়। এক ঘণ্টার মতো মধ্যাহ্নবিরতি দিয়ে আলোচনা চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ ৩০টি দল ও জোটের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। গতকালের আলোচনাটি বিটিভি নিউজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
বিদ্যমান সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন না। তাতে বলা আছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি যদি ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন বা সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোট দেন, তাহলে সংসদে তাঁর আসন শূন্য হবে।
এই বিধানে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন। তাদের প্রস্তাব ছিল, অর্থবিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্যদের নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে প্রথম পর্বের আলোচনায় বেশির ভাগ দল ৭০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত ছিল। তবে অর্থবিলের সঙ্গে আরও কিছু বিষয় যুক্ত করার প্রস্তাব ছিল দলগুলোর। সেই আলোচনার ভিত্তিতে গতকালের আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব উত্থাপন করে, তা হলো অর্থবিল, আস্থা ভোট ও সংবিধান সংশোধন বিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন।
কোনো কোনো দল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত, এমন সব বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়া যাবে না, এমন শর্ত যুক্ত করার কথা বলে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিএনপির প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আস্থা ভোট, অর্থবিল, সংবিধান সংশোধন বিলের পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা জড়িত, এমন বিল বাদে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন।
এনসিপির অবস্থান তুলে ধরে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, তাঁদের অবস্থান হলো অর্থবিল ও আস্থা ভোট বাদে অন্য বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়া যাবে। সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে সংসদের উচ্চকক্ষ হচ্ছে কি না, হলে কীভাবে হচ্ছে, তা দেখে তাঁরা অবস্থান জানাবেন।
৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে আলোচনার সময় জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। তবে দলটি অর্থবিল, আস্থা ভোট ও সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে একমত হলেও জাতীয় নিরাপত্তা–সংক্রান্ত বিষয়ে বিএনপির প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নয়। দুপুরে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের দলের এ অবস্থানের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয় বলতে যেহেতু জরুরি মুহূর্তকে বলা হচ্ছে, আমাদের অবস্থান হলো জরুরি পরিস্থিতিকে জরুরিভাবেই মোকাবিলা করা হবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অর্থবিল, আস্থা ভোট ও সংবিধান সংশোধন বিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন—এ বিষয়ে অনেকটাই ঐকমত্য হয়েছে। তবে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়নি।
বিরোধী দল থেকে সংসদীয় কমিটির সভাপতিবিদ্যমান সংবিধানে কোন সংসদীয় কমিটির সভাপতি কোন দল থেকে হবে, তার উল্লেখ নেই। সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবে সব কটি সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে করার প্রস্তাব দিয়েছিল।
প্রথম পর্যায়ের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকালের আলোচনায় এ বিষয়ে নতুন প্রস্তাব তুলে ধরেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, প্রথম পর্বের আলোচনার সময় কমবেশি সবাই চারটি কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে করার উচিত বলে উল্লেখ করেছেন। সেগুলো হলো সরকারি হিসাব কমিটি, অনুমিত হিসাব কমিটি, সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটি ও বিশেষ অধিকার–সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। এর বাইরেও কেউ কেউ আরও কিছু কমিটির প্রস্তাব করেছেন।
গতকালের আলোচনায় বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই চারটির সঙ্গে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কিছু সংসদীয় কমিটির সভাপতিও বিরোধী দল থেকে করার প্রস্তাব দেয়। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, শিক্ষা, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি অন্যতম।
আবার কোনো কোনো দল ৫০ শতাংশ কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে দেওয়া, কেউ কেউ আনুপাতিক হারে কমিটির সভাপতি পদ বণ্টনের প্রস্তাবও দেয়।
তবে বিরোধী দলকে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কোন কোন কমিটির সভাপতি পদ দেওয়া হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়ার পক্ষে নয় বিএনপি। দলটির নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কমিশনের প্রস্তাবিত চারটি কমিটির বাইরে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কমিটিগুলো সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ, বিরোধী দল যদি আকারে ছোট হয়, তখন সভাপতি দেওয়ার মতো সদস্য পাওয়া যাবে না। তাঁরা মনে করেন, সংসদে আলোচনা ছাড়া এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে না। বিএনপির ‘নিয়ত’ আছে আরও বেশি সভাপতি বিরোধী দল থেকে দেওয়ার।
এ বিষয়ে দলগুলোর প্রতিনিধিদের বক্তব্যের শেষে আলী রীয়াজ বলেন, চারটি সুনির্দিষ্ট সংসদীয় কমিটির বিরোধী দলের নেতৃত্বে হবে, এটাতে সবাই একমত। এর বাইরে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কমিটি যাতে বিরোধী দলকে দেওয়া হয়, সে বিষয়ে উল্লেখ করা জরুরি। সেটা নির্ধারণের ক্ষেত্রে দুটি প্রস্তাব আছে। একটি সংখ্যানুপাতিক হারে, অপরটি হলো সর্বনিম্ন বা সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ। যখন চূড়ান্ত খসড়া করা হবে তখন এটা নিয়ে আলাপ করে নেওয়া হবে।
সংরক্ষিত নারী আসন নিয়ে বিতর্কবিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী, সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন আছে ৫০টি। নির্বাচনে দল বা জোটগুলোর প্রাপ্ত আসনের অনুপাতে নারী আসন বণ্টন করা হয়।
সংসদের নিম্নকক্ষের মোট আসন ৪০০টি করা, এর মধ্যে নারী আসন ১০০টি করা এবং এসব আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাব করেছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশন।
গতকাল এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও তা শেষ হয়নি। সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ১০০টি নারী আসন করা নিয়েও ভিন্নমত দেখা গেছে।
আলোচনায় জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ঘূর্ণমান পদ্ধতিতে ভোট হলে জটিলতা হবে। আগে নির্বাচনের পদ্ধতির বিষয়ে একমত হতে হবে। যদি নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে হয়, তাহলে তারা আসনসংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে একমত।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেন, তাঁরা চান সংসদে ৪০০ আসন হউক। সবই উন্মুক্ত থাকবে, কোনো কোটার প্রয়োজন নেই।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই। এটি নারীদের জন্য সম্মানজনক নয়। তাঁরা আনুপাতিক পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষে ভোট চান। সেখানে মোট ভোটারের অর্ধেক নারী। তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য অর্ধেক পাবেন।
এর বাইরেও কোনো কোনো দল আসন বাড়ানোর প্রস্তাবে ভিন্নমত জানান। একপর্যায়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় ২৪টির বেশি দল ৪০০ আসন করার বিষয়ে দ্বিমত করেনি। এখন এসে দ্বিমত করলে সমস্যা তৈরি হয়।
তখন জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা শর্ত সাপেক্ষে একমত হয়েছিল। সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে তারা আসন ৪০০টি করার বিষয়ে একমত।
আলোচনার এক পর্যায়ে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা বলেন, সংসদের নিম্নকক্ষের আসন ৪০০টি করা এবং এর মধ্যে ১০০টি সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাবে তাঁরা একমত।
সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে বিএনপির মত ভিন্ন। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা নারী আসন ১০০টি করার বিষয়ে একমত। তবে তারা চায় বিদ্যমান পদ্ধতি নারী আসনে নির্বাচন হোক।
পরে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে আলোচনা হবে। ঈদের ছুটির পরপর ১৬ বা ১৭ জুন আবার দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় সনদগতকাল আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার কার্যক্রমে বিভিন্ন কমিশনের প্রস্তাবই চূড়ান্ত নয়। রাজনৈতিক দলগুলো যেসব মতামত দিয়েছে, তার ভিত্তিতে পরিবর্তিত প্রস্তাব নিয়েই রচিত হবে জাতীয় সনদ। তিনি বলেন, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, সেগুলো জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত হবে না।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা কিছু জায়গায় একমত হব। বাকিটা রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করবে। জনগণ কতটা গ্রহণ করবে, সেটা তাদের বিষয়।’
আলোচনায় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র প রস ত ব স রক ষ ত ন র র য় জ বল ন ন ম নকক ষ প রথম পর অবস থ ন ব এনপ র দলগ ল র উল ল খ পর য য় দল থ ক
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের স্থায়িত্বের জন্য আস্থা ভোটের পক্ষে বিএনপি, এনসিপিসহ কয়েকটি দল
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের আস্থা ভোটের পক্ষে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ঐকমত্য পোষণ করেছে। বিএনপি ও এনসিপি বলেছে, সরকারের স্থায়িত্বের জন্য এই বিধান প্রয়োজন। তবে কোনো কোনো দল বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনার জন্য বলেছেন।
আজ মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় এ প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।
গতকাল সোমবার ছিল দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার উদ্বোধনী। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী মাসে জুলাই সনদ তৈরির লক্ষ্য রয়েছে ঐকমত্য কমিশনের।
আজকের বৈঠকে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, নিম্নকক্ষে নারী আসন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ও কার্যপরিধির একটি অংশ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক পরিস্থিতি ও সংস্কৃতি বিশ্লেষণ করে এবং উপমহাদেশের চর্চা বিবেচনা করে তাঁর দলের পক্ষ থেকে উপযুক্ত মত হচ্ছে, ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আস্থা ভোট না থাকলে সরকার পরিচালনায় স্থায়িত্ব থাকবে না। প্রতিনিয়ত সরকার পরিবর্তিত হতে থাকবে, যা শোভনীয় হবে না।
আস্থা ভোট, অর্থবিল এবং সংবিধান সংশোধন ছাড়া সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে মতামত প্রদান করবেন, এতে বিএনপি একমত। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে এই আস্থা ভোটের বিষয়টি ৭০ অনুচ্ছেদে যুক্ত করতে বিএনপি প্রস্তাব করেছে।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সংস্কার সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক সারোয়ার তুষার বলেন, অর্থ বিলের পাশাপাশি আস্থা ভোট থাকতে হবে, কারণ সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা যেমন দরকার, তেমনি সরকারের স্থিতিশীলতা দরকার।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ঐকমত্যের বিষয়গুলোয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাঁরা আরেকবার আলোচনা করবেন।
আস্থা ভোট রেখে দিলে প্রধানমন্ত্রী আনচ্যালেঞ্জড থেকে যাবেন, উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, এই প্রসঙ্গে কোনো উপায় বের করতে হবে। একদিনে শেষ না করে আরেকটি আলোচনায় বসে কোথায় ঐকমত্য হলো তা চূড়ান্ত করতে হবে।
আজকের আলোচনায় অংশ নিচ্ছে ৩০টি রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে রয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), গণ অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২–দলীয় জোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জাকের পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, আমজনতার দল, ভাসানী অনুসারী পরিষদ/ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও ইসলামী ঐক্যজোট।
আরও পড়ুনরাজনৈতিক দলগুলোর মতের আলোকেই হবে জুলাই সনদ: আলী রীয়াজ২ ঘণ্টা আগেজাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য মো. আয়ুব মিয়া, সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, এমদাদুল হক ও ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।