জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টায়
Published: 6th, June 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত আগামীকাল সকাল সাড়ে সাতটায় ঢাকায় হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে প্রধান জামাত বায়তুল মোকাররম মসজিদে সকাল আটটায় অনুষ্ঠিত হবে।
ঈদের এই জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক। বিকল্প ইমাম থাকবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দ্বিনি দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের উপপরিচালক মাওলানা মো.
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এই জামাতের আয়োজন করছে। ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লির একসঙ্গে নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান। তিনি জানান, নামাজ আদায়কারী মুসল্লিদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লির জন্য বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে। ভিআইপি ব্লকে একসঙ্গে ২৫০ জনের নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। অজু, পয়োনিষ্কাশন ও সুপেয় পানির সুব্যবস্থা, সার্বক্ষণিক মেডিকেল টিম ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পৃথক প্রবেশ ও প্রস্থান গেট এবং নারী মুসল্লিদের জন্য পৃথক ব্লকে নামাজের ব্যবস্থা ও পৃথক প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের বক্তব্যের সঙ্গে বাজেটের ব্যাপক অমিল
অর্থ উপদেষ্টার বাজেট বক্তৃতার সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট নথিপত্রের মিল পাওয়া যায়নি। যেমন অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, স্থানীয় শিল্পে ব্যবহৃত চুনাপাথর আমদানিতে বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য করা হয়েছে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নথিতে শুধু গ্লাস ও সিরামিক খাতের জন্য এই নিয়মের কথা বলা হয়েছে। তাহলে এখানে বৈষম্য কেন করা হয়েছে? কাঁচামাল হিসেবে স্থানীয় অন্যান্য শিল্পেও একই নিয়ম থাকতে পারত।
বাজেট প্রস্তাবে টার্নওভার ট্যাক্স বা লেনদেন কর বিদ্যমান শূন্য দশমিক ৬ শতাংশের পরিবর্তে ১ শতাংশ করা হয়েছে। এটি ব্যবসা বৃদ্ধিকে অনুৎসাহিত করবে। এমন কিছু পণ্য আছে যেগুলোর কাঁচামালের দাম অনেক বেশি। এ কারণে বেশি পরিমাণে ব্যাংকঋণ প্রয়োজন হয়। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক লেনদেন বা টার্নওভার বেশি হয়। কিন্তু বেশি টার্নওভার মানেই বেশি লাভ নয়; বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বেশি ঋণের বোঝা। বরং এটাকে শূন্য করা গেলে উৎপাদনশীলতা গতি পাবে।
ব্যাংকের ক্ষেত্রে এটি প্রচলিত থাকতে পারে, কেননা কয়েক বছর ধরে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক লোকসান বা সীমিত মুনাফা করলেও ব্যাংক খাত ব্যাপক হারে মুনাফা করেছে।প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর বাড়ানো হয়েছে। প্রশ্ন হলো, যারা তালিকাভুক্ত কোম্পানি তাদের কেন করপোরেট কর বেশি দিতে হবে। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে গ্রস প্রফিট থেকে করপোরেট কর দিতে হবে, একই কোম্পানি যখন শেয়ারধারীদের নিট প্রফিট থেকে লভ্যাংশ দেয় তখনো তাদের আবার উচ্চ হারে কর দিতে হবে। এভাবে একজন করপোরেট শেয়ারধারী বা উদ্যোক্তাকে মোট ৫৭ শতাংশের মতো কর দিতে হয়। বাকি ৪৩ শতাংশ নিজের লিভিং লাইফ বাবদ খরচ করার পরে কোনো কোনো ক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত থাকে না। ফলে নতুন শিল্প করার জন্য অথবা শিল্প বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় জোগান অসম্ভব হয়ে যায়।
এ বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে, উৎপাদনশীল শিল্প থেকে করপোরেট কর আরও কমানো উচিত। ব্যাংকের ক্ষেত্রে এটি প্রচলিত থাকতে পারে, কেননা কয়েক বছর ধরে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক লোকসান বা সীমিত মুনাফা করলেও ব্যাংক খাত ব্যাপক হারে মুনাফা করেছে। এটা ঋণের উচ্চ সুদের হারের কারণে সম্ভব হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে ২ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি দেখানো হয়েছে। এটি পূরণে ৯৬ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক সাহায্য এবং ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ ঋণ ধরা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ ঋণ ব্যাংক খাত থেকে ভর্তুকি হিসেবে নেওয়া হলে ব্যাংক খাত অভ্যন্তরীণ শিল্পায়নে চাহিদা অনুযায়ী ঋণের জোগান দিতে পারবে না। শিল্পায়ন ব্যাহত হতে পারে।
ব্যক্তিশ্রেণির আয়কর অনলাইনে দেওয়ার যে নিয়ম করা হয়েছে। তবে আরও সময় নিয়ে নতুন ও পুরোনো করদাতাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চালু করলে ভালো হতো। ব্যক্তিশ্রেণির আয়কর রিটার্ন অ্যাসেসমেন্ট অ্যামাউন্টের পুরোটা একসঙ্গে জমা দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। এতে বৃহৎ করদাতাদের একসঙ্গে কর দেওয়া কঠিন হবে। ফলে এ ক্ষেত্রে মামলার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বাড়বে। কারণ, বেশি পরিমাণ কর একসঙ্গে জমা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে সময় বাড়িয়ে কোনো জরিমানা ছাড়া কমপক্ষে চারটি কিস্তির সুযোগ রাখা যেতে পারে।
আগে কোনো ব্যবসায়ী শিল্পের জন্য কাঁচামাল আমদানির সময় উৎসে অগ্রিম আয়কর হিসেবে ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত কেটে নেওয়া হয়। এটি পরে সমন্বয় হতে পারে। তবে এটিকে চূড়ান্ত দায় রাখা হয়েছে। অর্থাৎ মুনাফা না করেও আয়কর প্রদান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ শেয়ারধারীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন। এই ব্যবস্থাকে আমরা কোনভাবেই ব্যবসাবান্ধব বলতে পারি না।