রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৭ জুন) সকাল সাড়ে ৭টায় জামাত শুরু হয়। এতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব, প্রখ্যাত আলেমেদীন মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক। 

জামাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, বিদেশি কূটনীতিক, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের জনগণ অংশ নেন। নারীদের জন্য ছিল পৃথক নামাজের আয়োজন, নিরাপত্তা ও প্রবেশ গেট।

৩৫ হাজার মুসল্লির উপস্থিতি
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এ জামাতে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। সকাল থেকেই রাজধানীর পল্টন মোড়, মৎস্য ভবন, হাইকোর্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা হয়ে মুসল্লিদের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা যায়। প্রবেশপথে ছিল কড়া নিরাপত্তা, তল্লাশি এবং দিকনির্দেশনা।

আরো পড়ুন:

বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত

ঈদুল আজহা শান্তি, ত্যাগ ও সাম্য শেখায়: প্রধান উপদেষ্টা

সিটি করপোরেশনের প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্রস্তুতির দায়িত্বে ছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। প্রায় ৩ লাখ ২২ হাজার ৮০০ বর্গফুট আয়তনের এই মাঠকে ঘিরে নেওয়া হয় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি। ডিএসসিসির এক কর্মকর্তা জানান, প্রধান উপদেষ্টা ও কূটনীতিকসহ সব শ্রেণি-পেশার মুসল্লিদের জন্য প্রস্তুত করা হয় নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন ও স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশ।

মাঠে মুসল্লিদের প্রবেশের জন্য দুইটি গেট এবং নির্বিঘ্ন প্রস্থানের জন্য পাঁচটি গেট চালু রাখা হয়। নারীদের জন্য ছিল আলাদা গেট ও নামাজের জায়গা। গোটা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন ছিলেন। ওজু, টয়লেট, মেডিকেল টিম, অ্যাম্বুলেন্স, প্রাথমিক চিকিৎসা ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখা হয় পর্যাপ্ত হারে মুসল্লিদের জন্য।

স্বাচ্ছন্দ্য ও সেবা নিশ্চিত
ডিএসসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঈদগাহে আগত মুসল্লিদের জন্য আরামদায়ক কার্পেট বিছানো হয়। ফলে আলাদা করে জায়নামাজ বা পানির বোতল নিয়ে আসার প্রয়োজন হয়নি মুসল্লিদের। পুরো জামাতজুড়ে স্বেচ্ছাসেবক দল সুশৃঙ্খলভাবে মুসল্লিদের চলাচল, বসার স্থান এবং প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করে।

শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জামাত সমাপ্ত
সকাল পৌনে ৮টার আগেই শান্তিপূর্ণভাবে জামাত সম্পন্ন হয়। নামাজ শেষে ইমাম দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন। 

জাতীয় ঈদগাহের এই জামাত শুধুমাত্র নামাজের আয়োজন নয়, বরং ধর্মীয় ঐক্য, রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও মানুষের সম্মিলিত উৎসবের প্রতীক হয়ে উঠেছে। প্রতিবারের মতো এবারও শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনায় জামাত সম্পন্ন হওয়ায় আয়োজক সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশংসা করেন মুসল্লিরা।

সেগুনবাগিচার বাসিন্দা আব্দু  রাজ্জাক বলেন, “ঈদ মানেই মিলন, শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা। জাতীয় ঈদগাহের এবারের আয়োজন সেই বার্তাকেই নতুন করে তুলে ধরেছে। একসাথে হাজারো মানুষের সেজদাহর এই দৃশ্য শুধু ঈদের নয়, বরং একটি জাতির ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক।”

ঢাকা/এএএম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ উৎসব প রস ত ত দ র জন য ঈদগ হ

এছাড়াও পড়ুন:

গাবতলীতে পরিবহন সঙ্কট, ঘরমুখো মানুষের ভিড়

একদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে শেষ সময়ে রাজধানী ছাড়ছে হাজার হাজার মানুষ। ঢাকার বাইরে মহাসড়কে যানজট হওয়ায় যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ফিরে আসা যানবাহনের সংখ্যা কম। তাই গাবতলীতে পরিবহন সঙ্কট দেখা গেছে।

বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অংসখ্য মানুষকে। বৈরি আবহাওয়ার কারণেও ভোগান্তি বেড়েছে।

গাবতলীতে সকাল থেকে উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীর চাপ ছিল বেশি। শ্যামলী পরিবহন, এস আর পরিবহন, শাহ ফতেহ আলী পরিবহন, সুপার সনিসহ বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টারে যাত্রীদের গাড়ির জন্য বসে থাকতে দেখা গেছে। টিকিট কেটেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাউন্টারে অপেক্ষা করতে হচ্ছে দূর-দূরান্তের যাত্রীদের।

আরো পড়ুন:

টাঙ্গাইলে ট্রেন ও বাসের ছাদ থেকে পড়ে ২ জন নিহত

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ২ ট্রাকের সংঘর্ষ, আহত ১০

বাস কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা জানান, লম্বা ছুটির কারণে এবার ঘরমুখো যাত্রীর চাপ তুলনামূলক বেশি। গত দুই দিনে বহু মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষ বাড়ির উদ্দেশে গেছেন। তবে আজ শুক্রবার (৬ জুন) সকাল থেকেও যাত্রীর চাপ আছে।

শাহজাদপুর ট্রাভেলসের কাউন্টার ম্যানেজার কামাল হোসেন বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের প্রচুর গাড়ি গেছে। আমাদের আধা ঘণ্টা, ১৫ মিনিট পরপর বাস যায়। যাত্রীর চাপ আছে কিন্তু সিডিউল রাখা যাচ্ছে, না কারণ বাস ফিরে আসছে কম।’’

অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, সড়কে একাধিক দুর্ঘটনা ও যানবাহন বিকল হওয়ায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের করটিয়া থেকে সেতু পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটারে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হয়। শুক্রবার (৬ জুন) ভোরেও মহাসড়কে ২৫ কিলোমিটারে যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

যানজট না থাকলেও ঢাকা-আরিচা সড়কেও গাড়ির চাপ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাস কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা।

যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক আছে। গাবতীয় টার্মিনালের প্রবেশমুখে রয়েছে পুলিশ ও র‌্যাবের কন্ট্রোল রুম। একইসঙ্গে গাবতলী সড়কের যানজট নিরসনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা রাখতে দেখা গেছে। টার্মিনালের মাইকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে অভিযোগের আহ্বান ও পরিবহন কাউন্টার থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।

ঢাকা/হাসান/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বরিশালে কোস্ট গার্ডকে ‘হুমকি’, গ্রেপ্তার ২
  • উত্তরায় সেনাবাহিনীর অভিযান, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার
  • রাজধানীর নিরাপত্তা নিয়ে আমরা ১০০ ভাগ কনফিডেন্ট: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ভিড় কমলেও কমলাপুরে এখনো ঘরমুখী মানুষের চাপ
  • গাবতলীতে পরিবহন সঙ্কট, ঘরমুখো মানুষের ভিড়
  • যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযানে সারা দেশে গ্রেপ্তার ৩৮৪
  • নিয়ম মানলে আইনশৃঙ্খলা-যানজট নিয়ন্ত্রণে থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ঈদযাত্রা: কমলাপুরে ঘরমুখো মানুষের ঢল
  • মব ভায়োলেন্সের চ্যালেঞ্জ