আবারও নীতি সুদহার কমিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)। শুক্রবার ঋণনীতির ঘোষণায় টানা চতুর্থবারের মতো সুদহার কমিয়েছে তারা। এবার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট রেপো হার কমিয়ে ৫ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট ১ শতাংশ সুদ কমিয়েছে আরবিআই।

৪ থেকে ৬ জুন অনুষ্ঠিত মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি নগদ জমার অনুপাতও (সিআরআর) ১০০ ভিত্তি পয়েন্ট কমিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থায় তরল অর্থের জোগান বাড়ানো হয়েছে। এতে ব্যাংক খাতে আড়াই লাখ কোটি রুপির জোগান বাড়বে। ব্যাংকগুলোও সহজে ঋণ দিতে পারবে—এই পরিস্থিতি বাজারে চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এনডিটিভির সংবাদে বলা হয়েছে, সুদের হার কমায় আবাসন ও গাড়ির ঋণের সুদ কমবে। কমবে মাসিক কিস্তির বোঝা। ফলে ভোক্তাদের ব্যয়ের সক্ষমতা বাড়বে। সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে সহায়ক হবে এই সিদ্ধান্ত। এ পরিস্থিতিতে ভারতের প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগাতে এই সিদ্ধান্ত প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা মনে করছেন, এ সিদ্ধান্তে আবাসন খাতে চাহিদা বাড়বে।

আরবিআইয়ের গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা বলেন, ভবিষ্যতে সুদের হার আরও কমার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখন থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থনীতিকে ধারণ করার নীতির বদলে নিরপেক্ষ অবস্থান নেবে। অর্থাৎ প্রয়োজনে সুদ বাড়ানোর পথও খোলা থাকছে।

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, পণ্যের দামের ওঠানামা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে আরবিআই এখন আরও সতর্ক। বন্ধন ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ সিদ্ধার্থ সান্যাল বলেন, ‘আমরা ধারণা করেছিলাম, ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট সুদ কমানো হবে; কিন্তু ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট কমানো আমাদের বিস্মিত করেছে। এ ছাড়া স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটির হার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি ও ব্যাংক রেট ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে।’

গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তার মধ্যেও ভারতীয় অর্থনীতি শক্তিমত্তা দেখিয়েছে; সেই সঙ্গে আছে স্থিতিশীলতা। ভারতীয় অর্থনীতি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। বিকশিত ভারতের লক্ষ্য পূরণের জন্য সেই গতি আরও বাড়াতে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

গত অর্থবছরের জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে ভারতীয় অর্থনীতি ৭ দশমিক ৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বলে জানিয়েছে শীর্ষ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের চার ত্রৈমাসিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হতে পারে যথাক্রমে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ, ৬ দশমিক ৭ শতাংশ, ৬ দশমিক ৬ শতাংশ ও ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আরবিআই।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ র কম য় প রব দ ধ ৬ দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

‎পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আরো পড়ুন:

সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা

‎গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি। 

এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

‎ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • সেপ্টেম্বরের ১৬ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২০ হাজার কোটি টাকা
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন