গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশনের ঘেরে ডাকাতি, আহত ৪
Published: 11th, June 2025 GMT
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশনের ঘেরে ডাকাতি হয়েছে। এ সময় ঘেরের চার কর্মচারী আহত হন। মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে চকরিয়া উপজেলার রামপুর মৌজায় ৩০০ একর আয়তনের ঘেরে এই ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশনের খামার ব্যবস্থাপক উৎপল কান্তি চৌধুরী বলেন, 'এখন আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।'
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘খামার ব্যবস্থাপকের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তাদেরকে লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দিতে বলা হলেও বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত কোন অভিযোগ জমা দেয়নি।’
ডাকাতির এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলেও জানান ওসি শফিকুল ইসলাম।
গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশনের খামার ব্যবস্থাপক উৎপল কান্তি চৌধুরী সমকালকে জানান, 'রাত আড়াইটার দিকে অস্ত্রধারী ৭-৮ জন ডাকাত আমাদের খামার অফিস এলাকায় ঢুকে পড়ে। প্রত্যেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও কিরিচ ছিল। ডাকাতরা খামার অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিম্মি করে বিক্রির জন্য প্যাকেট করা বাগদা, কোরাল, বাটাসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫০ হাজার টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়। ঘের কর্মচারীদের দুটি মোবাইল ও ছয়টি টর্চলাইটও লুট করে তারা। বিষয়টি চকরিয়া থানার ওসিকে অবহিত করা হয়েছে।'
উৎপল জানান, ডাকাত দল যখন মাছ লুট করছিল, তখন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাধা দিলে তাদের মারধর করা হয়। মারধরে ঘেরের মসজিদের ইমাম মোজাম্মেল হক, কর্মচারী নাসির উদ্দিন, মো.
তার তথ্য অনুযায়ী, এর আগে ২০২১ সালের ৫ জুলাই ও ২০২৪ সালের ৩ জুন দুই দফা ঘেরটি দখলে নিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সন্ত্রাসীরা ঘের ছেড়ে পালিয়ে গেলে গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ আবার মাছ চাষ শুরু করে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।