দুই মাস আগে ভেঙে গেছে মরা ভদ্রা নদীর ওপর নির্মিত পুরোনো কাঠের সাঁকোটি। তিন বছর আগে সেখানে স্থায়ী সেতু নির্মাণ শুরু করলেও বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে বিপাকে পড়েছেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার দুটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। ভাঙা সাঁকোটি দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। 
এলাকাবাসী জানায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২০২১ সালে মরা ভদ্রা নদীর খননকাজ শেষ করে। নদী পারাপারে জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনায় এনে তারা নদীর ওপর ২৭০ ফুট দীর্ঘ কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে। বছর পার হতে না হতেই পলি জমে নদীটি ছোট নালায় পরিণত হয়। ২০২২ সালের জুলাই মাসে সরকার, বিশ্বব্যাংক-আইডিবির অর্থায়নে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা খরচে সেখানে ৯৬ দশমিক ০৯ মিটার সেতু নির্মাণকাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাজ শুরুর আগে মানুষের চলাচলের জন্য মরা ভদ্রা নদীর ওপর বিকল্প বাঁধ বা সাঁকো নির্মাণ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড। ফলে পুরোনো ভাঙা সাঁকো দিয়েই দুই ইউনিয়নের মানুষ যানবহনসহ ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতেন। 
সম্প্রতি এ বিষয়ে কথা হয় খর্নিয়া গ্রামের ভ্যানচালক আমিন শেখ, সবজি চাষি এনামুল গাজী ও মাছ চাষি জামাল শেখের সঙ্গে। তারা বলেন, বিভিন্ন গ্রাম থেকে চাঁদা তুলে তিনবার কাঠের সাঁকোটি মেরামত করা হয়েছে। যানবহনের চাপে কাঠের সাঁকোটি এখন পুরোপুরি নষ্ট। মাস দুয়েক আগে পুরো চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। ঠিকাদারের লোকজন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় গ্রামবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই।   
শোভনা ইউপি চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত কুমার বৈদ্য বলেন, ডুমুরিয়া কৃষিপ্রধান এলাকা। শাকসবজি ও মাছের জন্যও খ্যাতি রয়েছে। এসব পণ্য পরিবহনে কৃষক ও মাছ চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। ভারী যান চলাচল একেবারই বন্ধ রয়েছে। বিকল্প বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হলেও তারা তা করেননি।  
আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক প্রলয় সরকারের ভাষ্য, ঈদের ছুটিতে সবাই (নির্মাণ শ্রমিক) বাড়িতে চলে গেছেন। কাঠের সাঁকো ভাঙবে, আবার ঠিক করা হবে। এতে সমস্যা কী? একটু কষ্ট হলেও মানুষ এভাবে চলাচল করবেন। 
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মাদ দারুল হুদা বলেন, বিকল্প সড়কে কাঠের সাঁকোটি ভেঙে গেছে বলে শুনেছেন। দ্রুতই এটি সংস্কারে ব্যবস্থা নেবেন। ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিনের ভাষ্য, সাঁকো বা বিকল্প সড়ক ঠিকাদারের নির্মাণ করার কথা। না করলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। 

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নদ ন র ম ণ কর ব যবস থ ব কল প

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ