বিকল্প না রেখেই সেতু নির্মাণ, দুর্ভোগে মানুষ
Published: 12th, June 2025 GMT
দুই মাস আগে ভেঙে গেছে মরা ভদ্রা নদীর ওপর নির্মিত পুরোনো কাঠের সাঁকোটি। তিন বছর আগে সেখানে স্থায়ী সেতু নির্মাণ শুরু করলেও বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে বিপাকে পড়েছেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার দুটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। ভাঙা সাঁকোটি দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের।
এলাকাবাসী জানায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২০২১ সালে মরা ভদ্রা নদীর খননকাজ শেষ করে। নদী পারাপারে জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনায় এনে তারা নদীর ওপর ২৭০ ফুট দীর্ঘ কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে। বছর পার হতে না হতেই পলি জমে নদীটি ছোট নালায় পরিণত হয়। ২০২২ সালের জুলাই মাসে সরকার, বিশ্বব্যাংক-আইডিবির অর্থায়নে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা খরচে সেখানে ৯৬ দশমিক ০৯ মিটার সেতু নির্মাণকাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাজ শুরুর আগে মানুষের চলাচলের জন্য মরা ভদ্রা নদীর ওপর বিকল্প বাঁধ বা সাঁকো নির্মাণ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড। ফলে পুরোনো ভাঙা সাঁকো দিয়েই দুই ইউনিয়নের মানুষ যানবহনসহ ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতেন।
সম্প্রতি এ বিষয়ে কথা হয় খর্নিয়া গ্রামের ভ্যানচালক আমিন শেখ, সবজি চাষি এনামুল গাজী ও মাছ চাষি জামাল শেখের সঙ্গে। তারা বলেন, বিভিন্ন গ্রাম থেকে চাঁদা তুলে তিনবার কাঠের সাঁকোটি মেরামত করা হয়েছে। যানবহনের চাপে কাঠের সাঁকোটি এখন পুরোপুরি নষ্ট। মাস দুয়েক আগে পুরো চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। ঠিকাদারের লোকজন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় গ্রামবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই।
শোভনা ইউপি চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত কুমার বৈদ্য বলেন, ডুমুরিয়া কৃষিপ্রধান এলাকা। শাকসবজি ও মাছের জন্যও খ্যাতি রয়েছে। এসব পণ্য পরিবহনে কৃষক ও মাছ চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। ভারী যান চলাচল একেবারই বন্ধ রয়েছে। বিকল্প বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হলেও তারা তা করেননি।
আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক প্রলয় সরকারের ভাষ্য, ঈদের ছুটিতে সবাই (নির্মাণ শ্রমিক) বাড়িতে চলে গেছেন। কাঠের সাঁকো ভাঙবে, আবার ঠিক করা হবে। এতে সমস্যা কী? একটু কষ্ট হলেও মানুষ এভাবে চলাচল করবেন।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মাদ দারুল হুদা বলেন, বিকল্প সড়কে কাঠের সাঁকোটি ভেঙে গেছে বলে শুনেছেন। দ্রুতই এটি সংস্কারে ব্যবস্থা নেবেন। ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিনের ভাষ্য, সাঁকো বা বিকল্প সড়ক ঠিকাদারের নির্মাণ করার কথা। না করলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নদ ন র ম ণ কর ব যবস থ ব কল প
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।