সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তথ্য অনুসারে, ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে তিন হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে সহকারী সার্জন নেওয়া হবে ২ হাজার ৭০০ জন আর সহকারী ডেন্টাল সার্জন নেওয়া হবে ৩০০ জন। দেশে চিকিৎসকের সংকটের কারণে এ বিশেষ বিসিএসকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে। তাই সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই জোরালো প্রস্তুতি নিতে হবে।

অনেক দিন পর বিশেষ বিসিএস হচ্ছে, তাই প্রতিযোগীর সংখ্যাটা বেশি। গুছিয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রথমে পিএসসির সিলেবাস নম্বর বিন্যাস অনুযায়ী বুঝে নিতে হবে। এরপর নিজের দুর্বলতা ও সবলতার বিষয়গুলো ভাগ করে নিতে হবে। সিলেবাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে ১০০ নম্বর সাধারণ বিষয়াবলি এবং বাকি ১০০ নম্বর চিকিৎসাবিদ্যা বিষয় থেকে। সাধারণ বিষয়াবলির ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলায় ২০, ইংরেজি ২০, বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২০, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ২০, মানসিক দক্ষতা ১০ ও গাণিতিক যুক্তিতে ১০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।

বাংলা অংশে ব্যাকরণে ১৫, সাহিত্যে ৫ নম্বরসহ মোট ২০ নম্বর। ভাষার প্রয়োগ–অপপ্রয়োগ, বাগ্‌ধারা, শুদ্ধি, সমার্থক-বিপরীতার্থক মোটামুটি সহজ। প্রত্যয় সন্ধিও সমাস কিছুটা কঠিন। তাই প্রস্তুতির সময় সেভাবেই পরিকল্পনা করে নিতে হবে। আবার সাহিত্যের ক্ষেত্রে সব যুগ থেকেই প্রশ্ন আসে, প্রাথমিক আর মধ্যযুগের পরিধি তুলনামূলক কম এবং এখানে সহজেই নম্বর তোলা সম্ভব। আধুনিক যুগের রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল, জসীমউদ্‌দীন, ফররুখ আহমদ ও গোলাম মোস্তফা বেশ প্রাসঙ্গিক। ইংরেজিতে ব্যাকরণ থেকে ১৫ এবং সাহিত্যে ৫ নম্বর। সাহিত্য থেকে সিলেবাসের সব বিষয় পড়লে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আগের বছরের প্রশ্নগুলো পড়লে কাজে দেবে।

বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ২০ নম্বর। জাতীয় রাজনৈতিক ইতিহাস থেকে ৪ নম্বরের পুরোটাই ওঠানো সম্ভব, যদি গুছিয়ে ইতিহাসের ঘটনাগুলো গল্পের মতো করে পড়তে পারেন। ইতিহাস মুখস্থ করতে যাবেন না, রাজনৈতিক ঘটনাগুলো গল্পের আদলে রিডিং পড়ে যাবেন। এরপর কৃষিজ সম্পদ, অর্থনীতি, শিল্প-বাণিজ্য—প্রতিটি বিষয় থেকে ২ নম্বর আছে, যা বাংলাদেশ বিষয়াবলির তুলনামূলক কঠিন অংশ। এ ক্ষেত্রে আগের বছরের প্রশ্নগুলোর ওপর জোর দিতে হবে। সংবিধান থেকে ২ নম্বরই ওঠানো সম্ভব, যদি বর্তমান ঘটনাবলির সঙ্গে সমন্বয় করে পড়া যায়। এগুলো ছাড়াও আছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা, সরকারব্যবস্থা, জাতীয় অর্জন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান—এগুলোর প্রতিটি থেকে ২ নম্বর আছে। এসব বিষয় কমন পাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো দৈনিক পত্রিকা পড়ার অভ্যাস। জুলাই অভ্যুত্থানের সবকিছু ভালো করে দেখে নিতে হবে। সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোর ব্যাপারে প্রাথমিক ধারণা নিতে হবে।

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে ২০ নম্বর আছে। আন্তর্জাতিক সংগঠন, ভূরাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপট, ভারত–পাকিস্তান সম্পর্ক, ইউক্রেন যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনা, হামাস, গাজা ইত্যাদি চলতি বিষয়গুলো ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে হবে। এ জন্য নিয়মিত পত্রিকা পড়ার বিকল্প নেই। আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো পড়তে অনেকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না, কিন্তু এই বিষয়ে নম্বর ওঠানো তুলনামূলক সহজ। শুধু একটু গুছিয়ে নিয়ে আগের বছরের প্রশ্নের প্যাটার্ন ফলো করতে পারলে বেশ ভালো নম্বর ওঠানো সম্ভব।

গাণিতিক যুক্তির ১০ নম্বরের প্রস্তুতির জন্য অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির বইয়ের সাধারণ গণিতের মৌলিক অংশগুলো দেখতে হবে। গণিতের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি সময় নিয়ে উত্তর বের করতে যাবেন না। একেবারে প্রথম চেষ্টায় যতটুকু পারবেন, সেটাই করবেন। একই পরামর্শ মানসিক যুক্তির ক্ষেত্রেও।

চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকে মোট ১০০ নম্বর থাকছে। ৩৯তম বিসিএস ও ৪২তম বিসিএসের প্রিলির প্রশ্নগুলো দেখলে একটা প্রাথমিক ধারণা পাবেন। এরপর সিলেবাস অনুযায়ী সব কটি বিষয়ে মৌলিক ধারণা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, যেকোনো বিষয়ের গভীরে না গিয়ে সব কটি বিষয়ের ব্যাপারে সাধারণ ধারণা থাকলে নম্বর বেশি পাবেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সিলেবাসে ৫০ নম্বর নন–ক্লিনিক্যাল বিষয়গুলোর জন্য এবং ক্লিনিক্যাল বিষয়গুলোর জন্য ৫০ নম্বর বরাদ্দ। ডেন্টাল অংশের জন্যও মৌলিক ডেন্টাল অ্যানাটমি, ডেন্টিস্ট্রি–সম্পর্কিত ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, ডেন্টাল ম্যাটেরিয়াল ও অন্যান্য মিলে ৫০ এবং ডেন্টাল সায়েন্স থেকে ৫০ নম্বর বরাদ্দ।

মেডিকেল অংশের বেসিক অংশ থেকে মূল ফোকাস রাখতে হবে অ্যানাটমি ও ফিজিওলজিতে যেখানে ২০ নম্বর বরাদ্দ। বেসিক অংশের তুলনায় বেশি নম্বর পেতে ক্লিনিক্যাল অংশে বেশি জোর দেওয়াই যুক্তিযুক্ত। ক্লিনিক্যাল বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য নজর রাখতে হবে আমাদের দেশের কমন রোগগুলোর উপসর্গ এবং সেগুলোর মৌলিক চিকিৎসাপদ্ধতি সম্পর্কে।

কোনো একটি পরীক্ষায় কারও পক্ষে সব প্রশ্নের উত্তর করা প্রায় অসম্ভব। তাই প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এবং পরীক্ষায় উত্তর দেওয়ার সময় মাথায় রাখতে হবে যেটা সবাই পারছে, সেটা আপনাকে পারতে হবে। বাকি আনকমন বা কঠিন বিষয়গুলো পারলে সেটা আপনার নম্বর বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। তাই প্রস্তুতি নিতে হবে পরিকল্পনা করে। সবার জন্য শুভকামনা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ত র ব ষয়গ ল র জন য র জন ত পর ক ষ ব স এস

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২

ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলন কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে নগরের আম্বরখানাস্থ বাসদ কার্যালয় থেকে তাদের আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। 

বাসদ নেতারা অভিযোগ করেছেন, সকালে নিয়মিত পাঠচক্র চলাকালে হঠাৎ পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও করে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যায়। 

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিল শিবির

বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে সিকৃবি উপাচার্যের অঙ্গীকার

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আজ (শনিবার) ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা নগরে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করেছিল। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। গ্রেপ্তারদের নাম পরবর্তীতে জানানো হবে।’’ 

বাসদের সিলেট জেলা সভাপতি আবু জাফর বলেন, ‘‘ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ (শনিবার) চৌহাট্টা থেকে আমাদের পূর্বঘোষিত ‘ভুখা মিছিল’ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি। তবে সব শ্রমিককে তা জানানো সম্ভব হয়নি। সকালে শহীদ মিনার এলাকায় কয়েকজন শ্রমিক জড়ো হন। কিন্তু কার্যালয়ে শুধু পাঠচক্র চলছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২২ নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে গেছে।’’

এর আগে একই ইস্যুতে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ী এলাকার বাসা থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনকেও আটক করে পুলিশ।

গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকরা। ওই সময় আনোয়ার হোসেন সুমনসহ কয়েকজন বামঘরানার রাজনীতিকও আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা ব্যাটারি রিকশা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে তা মেনে নিতে রবিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। সেই আলটিমেটাম শেষ হওয়ার একদিন আগে সিপিবির সুমন ও বাসদের ২২ নেতাকর্মীকে আটক করা হলো।

শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সংঘাতের আশঙ্কায় রবিবারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’ 

গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে শতাধিক রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর থেকে নগরে ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে। 
 

ঢাকা/নুর/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিলাসবহুল প্রমোদতরিতে খুন, এরপর...
  • ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
  • সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২