সমু চৌধুরীর গামছা পরা ছবির আসল গল্প কী, এখন কেমন আছেন তিনি
Published: 13th, June 2025 GMT
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনেতা সমু চৌধুরীর একটি ছবি ভাইরাল হয়। ছবিতে দেখা যায়, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের একটি মাজারে গামছা পরা অবস্থায় গাছের নিচে তিনি শুয়ে আছেন। গতকাল দুপুরে ছবিটা ছড়িয়ে পড়লে অনেকে জানতে চান, কী হয়েছে অভিনেতার? ছবিটি আসল নাকি শুটিংয়ের? ছবির সূত্র ধরে অভিনেতাকে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নের একটি মাজার থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। এরপর রাখা হয় নিরাপদ স্থানে। দিবাগত রাত তিনটায় সেখানে যান সমু চৌধুরীর চাচাতো ভাই রাইসুল ইসলাম এবং অভিনয়শিল্পী সংঘের দুই সদস্য সুজাত শিমুল ও জুলফিকার চঞ্চল। এরপর পুলিশ সবার উপস্থিতিতে সমু চৌধুরীকে পরিবারের জিম্মায় তুলে দেয়। এখন এই অভিনয়শিল্পী যশোর সদরের নতুন বাজারের বাসায় বিশ্রামে আছেন। প্রথম আলোকে আজ শুক্রবার দুপুরে খবরটি নিশ্চিত করেছেন রাইসুল ইসলাম।
রাইসুল জানান, সমু চৌধুরী মাজারভক্ত। কাজ না থাকলে প্রায় সময় তিনি মাজারে যান। এবার ঈদ কাটিয়েছেন যশোরে, মায়ের সঙ্গে। ঈদের ছুটি শেষে গত মঙ্গলবার যশোর থেকে ঢাকার মিরপুরের বাসায় ফেরেন তিনি। পরদিন পরিচিত একজনের সঙ্গে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের একটি মাজারে যান, এক কাপড়ে।
রাইসুল ইসলাম বললেন, ‘এক কাপড়ে ময়মনসিংহ যাওয়াতে কোনো কারণে পরনের কাপড় ময়লা হয়। সেখানে তাঁর কয়েকজন ভক্তও ছিলেন। ময়লা কাপড় ধোঁয়ার পর তা শুকাতে দিয়ে তিনি গামছা পরে গাছের নিচে ঘুমাচ্ছিলেন। বাসায়ও তিনি সাদামাটাভাবে এভাবেই চলাফেরা করেন, লুঙ্গি ও গামছা পরে থাকেন, কখনো এভাবে রান্নাবান্নাও করেন। মাজারে গামছা পরে বিশ্রাম নেওয়ার সময় কেউ একজন ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়। এতে তিনি ওই সময়ে মানসিকভাবে ট্রমাটাইজড হয়ে পড়েন ভাইয়া। তিনি কিন্তু সম্পূর্ণ সুস্থ, শারীরিক ও মানসিক—দুইভাবে তিনি ভালো আছেন। আমরা তাঁর কাছে যাওয়ার পর পুলিশের সামনেই বলল, আমার তিন ভাই চলে আসছে, এখন আর কোনো সমস্যা নাই। এরপর আমরা গাড়িতে করে তাঁকে নিয়ে যশোরে চলে আসছি।’
ছেলে সমু চৌধুরীর সেলফিতে মা জয়নব চৌধুরী.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র একট
এছাড়াও পড়ুন:
মাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের প্রত্যন্ত গ্রামের মাজারে গাছের নিচে শুয়ে আছেন অভিনেতা সমু চৌধুরী—এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কীভাবে এলেন এখানে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সমু চৌধুরী মাজারে আসেন। আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে গেলেও তিনি মাজার ছেড়ে যেতে চাইছেন না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নের মুখী গ্রামের শাহ্ মিসকিন জয়নাল আবেদিনের (রহ.) মাজারের পাশে গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় সমু চৌধুরীকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় আজ দুপুরে ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন।
আল মামুন হৃদয় প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাজারের পাশে মোটরসাইকেলচালকের সঙ্গে এক ব্যক্তির বাগ্বিতণ্ডা শুনে এগিয়ে যাই আমিসহ কয়েকজন। তখন অভিনেতা সমু চৌধুরীকে চিনে ফেলি। মোটরসাইকেলচালককে ভাড়া না দেওয়ায় সমু চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর বাগ্বিতণ্ডা চলছিল। মোটরসাইকেলচালক বলছিলেন, ঢাকা থেকে তাঁকে এখানে নিয়ে এসেছেন। সমু চৌধুরী এ সময় খালি গায়ে ছিলেন। পরনে ছিল ট্রাউজার, সঙ্গে ছিল একটি ব্যাগ। এ সময় অভিনেতার আচরণে তাঁকে সুস্থ মনে হয়নি। পরে আমরা মোটরসাইকেলচালককে বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিই।’
আল মামুন বলেন, গতকাল রাতে সমু চৌধুরী মাজারের ফকিরদের সঙ্গেই ছিলেন। পুলিশ এসেছে অভিনেতাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য, কিন্তু তিনি যাচ্ছেন না। তিনি আরও জানান, আজ দুপুরের পর অভিনেতা সমু চৌধুরীকে স্থানীয় লোকজন নতুন লুঙ্গি দিয়েছেন। সেটি পরেই তিনি মাজারের পাগলদের সঙ্গে কথা বলছেন, ঘুরছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। মাজারের ফকিরদের বাইরে অন্যদের সঙ্গে তিনি কথা বলতে চান না।
মাজারের খাদেম শাহ মোহাম্মদ ফাহাদ ফকির বলেন, এ মাজারে সমু চৌধুরীকে আগে কখনো দেখেননি। তবে তিনি এখন মাজারে সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকছেন।
পাগলা থানার ওসি ফেরদৌস আলম বলেন, ‘অভিনেতার অবস্থান জানতে পেরে তাঁকে উদ্ধারের জন্য মাজারে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু রাত পৌনে আটটা পর্যন্ত মাজার থেকে অভিনেতাকে আনা যায়নি। তাঁকে বেশি প্রশ্ন করলে উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছেন। ওই অবস্থায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাজার এলাকায় অবস্থান করছে। আমরা পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছি। পরিবারের সদস্যরা এখানে আসছেন। অভিনেতার এখানে আসা সম্পর্কে পরিবারও তেমন কিছু বলতে পারেনি।’