ইউনূস-তারেকের বৈঠক দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো
Published: 13th, June 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক সব আশঙ্কার অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্রের পথে উত্তরণের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন ১২–দলীয় জোটের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে যে ঐকমত্য হয়েছে, তা অনিশ্চয়তা কাটিয়ে দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো এনেছে।
আজ শুক্রবার লন্ডনে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে ওই বৈঠকের পর সন্ধ্যায় ১২–দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা এক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সংযোগ ঘটিয়ে এপ্রিল থেকে সরে এসে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’
আজকের এ বৈঠক যেন শুধু কথার কথায় না থাকে, সেই প্রত্যাশা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচারপ্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের এই সৌহার্দ্য ও সহমতের মধ্য দিয়ে জয় হবে গণতন্ত্রের, জয় হবে বাংলাদেশের, জয় হবে জনগণের।’
১২–দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান ও জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম, জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুর রাকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দলের (পিএনপি) চেয়ারম্যান ফিরোজ মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, কমিশনের বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন। এর জন্য কোনো অবস্থাতেই এক মাস লাগবে বলে মনে করেন না তিনি। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। তিনি আশা করছেন, এ ব্যাপারে দ্রুত একটি পরিণতি দেখা যাবে।
আজ বুধবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন আলী রীয়াজ।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের তৃতীয় ধাপের তৃতীয় দিনের বৈঠক হচ্ছে আজ।
কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়িয়ে গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে কমিশনের মেয়াদ আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে। সে হিসাবে কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ানোর পর আজ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম বৈঠক হচ্ছে। সূচনা বক্তব্যে আলী রীয়াজ কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ানোর কথা উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, কমিশনের সভাপতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা সার্বিক বিষয় জানেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে ২১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যাবেন তিনি। এর আগেই সনদ বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ে তাঁকে জানানো হবে।
সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কমিশন চূড়ান্ত খসড়া পাঠিয়েছে বলে উল্লেখ করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ছয়টি উপায়ের পরামর্শ দিয়েছে। কেউ বলছে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে কার্যকর করতে। আবার কেউ কেউ সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে।
আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো গণভোট ও বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে করতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। আর যেগুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে করা যাবে, তা যেন সরকার দ্রুত সম্পন্ন করে, সে পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
সনদে স্বাক্ষর করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে দুজন করে প্রতিনিধির নাম পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, বেশির ভাগ দলই তা পাঠিয়েছে। তারা চায়, এ ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেবে।
আজকের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজকের বৈঠকে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত আছেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার।