দীর্ঘদিনের কান্না যেন থেমে গেছে আজ লর্ডসের আকাশে। বহু যন্ত্রণার পর যেন দেখা মিলেছে বিজয়ের রৌদ্রোজ্জ্বল সকালে। দক্ষিণ আফ্রিকা, যাদের নাম উচ্চারণ করলেই ভেসে উঠতো ‘চোকার্স’ শব্দটি, অবশেষে তারা ইতিহাসের পাতায় নতুন এক পরিচয়ে উদ্ভাসিত হলো— চ্যাম্পিয়ন নামে।

যারা একের পর এক সেমিফাইনালে হেঁটেছে মাথা নিচু করে, যারা ৯ বার আইসিসির বড় মঞ্চে হতাশার গল্প লিখেছে, তারা এবার লিখলো রূপকথার নতুন অধ্যায়। ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল হারার পর যারা আরও একবার কান্নায় ভেসেছিল, সেই তারাই আজ শনিবার (১৪ জুন) সবচেয়ে বেশি ট্রফিজয়ী অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিলো ‘ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের’ মুকুট। এটাই দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম কোনো আইসিসি শিরোপা, একটি বহুপ্রতীক্ষিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন।

লর্ডসের সবুজ মাঠে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। তবে কাগিসো রাবাদা ও মার্কো জানসেনের বল যেন বয়ে আনছিল বজ্রপাত। রাবাদার আগুনঝরা স্পেল আর জানসেনের ধারালো সুইংয়ে ৫৬.

৪ ওভারে গুটিয়ে যায় অজিদের ইনিংস, স্কোরবোর্ডে মাত্র ২১২ রান।

আরো পড়ুন:

লর্ডসে ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে দ. আফ্রিকা

২৮২ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে দ. আফ্রিকা

প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকাও জর্জরিত হয় প্যাট কামিন্স নামক এক গতির ঝড়ে। তার ৬ উইকেটের ঝলকে প্রোটিয়ারা অলআউট হয় মাত্র ১৩৮ রানে। প্রথম ইনিংসে ৭৪ রানের লিড নিয়ে যখন অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে নামে তখনও কপালে যেন লেখা ছিল প্রোটিয়াদের আরও এক ট্র্যাজেডি। কিন্তু এবার গল্পটা ছিল ভিন্ন।

অজিদের দ্বিতীয় ইনিংসে দাপট দেখায় রাবাদা-লুঙ্গি এনগিদি জুটি। তাতে ৬৫ ওভারে ২০৭ রানে থেমে যায় তাদের ইনিংস। প্রোটিয়াদের সামনে দাঁড়ায় ২৮২ রানের কঠিন লক্ষ্যমাত্রা। ইতিহাস লিখতে হলে পাড়ি দিতে হবে এই পাহাড়।

আর সেই পথচলায় নায়ক হয়ে উঠলেন দুই ব্যাটসম্যান এইডেন মার্করাম এবং টেম্বা বাভুমা। মার্করামের রাজকীয় সেঞ্চুরি (১৩৬) এবং বাভুমার লড়াকু ৬৬ রানের ইনিংসে ভর করেই দক্ষিণ আফ্রিকা ছুঁয়ে ফেলে বিজয়ের কেতন।

কোনো হঠাৎ ঝড় নয়, এটি ছিল দীর্ঘ প্রতীক্ষার ফল। এটি ছিল চোখের জলে গড়া সাহসিকতার গল্প। আর সে গল্পে আজ প্রোটিয়ারা ‘চোকার্স’ নয়, ক্রিকেটের ইতিহাসে চ্যাম্পিয়নের প্রথম স্বাক্ষর রেখে গেল।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট স ট চ য ম প য়নশ প প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

আমদানি বৃদ্ধি ইতিবাচক, ধারাবাহিকতা থাকতে হবে

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও ভোগ্যপণ্যের ঋণপত্র খোলার হারে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, সেটিকে আমি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। তবে তিন মাসের চিত্র দিয়ে সামগ্রিক অবস্থা এখনো মূল্যায়ন করার সময় হয়নি।

মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে হঠাৎ প্রায় ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। এটা সুখবর হলেও কোনো বড় প্রকল্পের মালামাল আমদানিতে এত বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। যদি সত্যিকারের নতুন নতুন কারখানার যন্ত্রপাতি আমদানির মাধ্যমে এ প্রবৃদ্ধি ঘটে, তাহলে তা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।

মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ধারাবাহিকতা থাকলেই বলা যাবে, দেশে বিনিয়োগ হচ্ছে। বিনিয়োগ হলে সামনে কর্মসংস্থানও বাড়বে। আর তাতে অর্থনীতিতেও গতি সঞ্চার হবে।

মূলধনি যন্ত্রপাতির মতো ভোগ্যপণ্যের ঋণপত্র খোলার হারও বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তিন মাসের যে তুলনা করে দেখিয়েছে, তাতে ঋণপত্র খোলার হার ২০ শতাংশ বেড়েছে।

সব মিলিয়ে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তা আগামী কয়েক মাস অব্যাহত থাকলে অর্থনীতিতে কর্মচাঞ্চল্য বাড়বে।

মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার, পরিচালক, টি কে গ্রুপ

সম্পর্কিত নিবন্ধ