Samakal:
2025-06-18@01:35:48 GMT

শিশুর মনোযোগ বাড়াতে কী করবেন

Published: 17th, June 2025 GMT

শিশুর মনোযোগ বাড়াতে কী করবেন

আমার ছেলে কিছুতেই মনোযোগ দিতে পারে না। মেয়ে পড়ার সময় একবার বইয়ে তাকায়, পরক্ষণেই জানালার বাইরে– এমন অভিযোগ প্রায় সব মা-বাবার মুখে শোনা যায়। আমাদের চোখের সামনে বড় হচ্ছে একেকটা ছোট মানুষ। তারা শেখে, ভুল করে, আবার শেখে। আমরা কি সবসময় বুঝি তাদের শেখার পেছনের সেই ছোট্ট মনটার চলাফেরা কেমন? 
আজকের ডিজিটাল দুনিয়ায় শিশুর মন যেন আরও বেশি অস্থির হয়ে ওঠছে। মোবাইল, টিভি, চার পাশের হইচই– সবকিছু মিলিয়ে তারা যেন নিজের ভেতরের কথাগুলো শুনতে পায় না। অথচ মনোযোগ শেখার সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি। এটি জন্মগত নয়– তৈরি করতে হয় ধীরে ধীরে, সঠিক দিকনির্দেশনায়। শিশুর মনোযোগ বাড়াতে কিছু কৌশল অনুসরণ করতে পারেন। যেমন–
সুসংগঠিত দৈনন্দিন রুটিন করে দিন। আপনি হয়তো ভাবছেন রুটিন দিলে তো বাচ্চা রোবট হয়ে যাবে। না, আসলে ঠিক উল্টোটা। যদি সে জানে, সকাল ৭টায় উঠে ব্রাশ করবে, ৮টায় খাবে, বিকেলে খেলবে আর সন্ধ্যায় পড়বে– তবে তার মন অনেক বেশি শান্ত থাকবে। এ শান্ত মনই মনোযোগের প্রথম ধাপ। 
আরেকটা কথা, ঘুম ঠিক না হলে কিছুই ঠিক হয় না। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও ওঠার অভ্যাস তাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখে।  
কাজটা ছোট ভাগে ভাগ করে দিন: শিশুকে এক বসায় ২০টা অঙ্ক দিয়ে বলবেন, তাড়াতাড়ি শেষ করো– এটি তার জন্য পাহাড় টপকানোর মতো। তার চেয়ে বরং বলুন, চলো ৫টা অঙ্ক করি। তারপর একটা ছোট খেলা খেলি। আপনি ভাবতেই পারবেন না, এতটুকু পরিবর্তনে শিশুর মুখে কী আনন্দ ফুটে উঠবে। 
শেখাটিকে খেলায় রূপ দিন। রঙিন বোর্ড, স্টিকার পুরস্কার, কুইজ– এসবই ওর মনোযোগ ধরে রাখে। ছোট ছোট বিরতি দিন, পানির গ্লাস দিন, একসঙ্গে বসে পড়ুন। 
শারীরিক চলাফেরায় মনোযোগ দিন: বাস্তবতা হলো শরীর যত চলবে, মন তত সজাগ থাকবে। প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা খেলাধুলা, দৌড়ঝাঁপ, সাইকেল চালানো, এমনকি নাচ– এসব শিশুর মস্তিষ্কে অক্সিজেন বাড়ায়। 
শুধু বাইরের খেলা নয়, ঘরে ব্লকস, পাজল বা দাবা-ক্যারমের মতো খেলাও শিশুর মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। 
পুষ্টিকর খাবার দিন: একটি শিশুর মনোযোগ শুরু হয় তার খাবার প্লেট থেকে। সকালে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন– ডিম বা ওটমিল খেলে তার চিন্তাশক্তি ভালো থাকে। মাছের ওমেগা-৩, আখরোটের ভালো ফ্যাট, শাকসবজির আয়রন সবই মস্তিষ্কের বন্ধু। 
অন্যদিকে চিনি, সফট ড্রিংকস বা ফাস্টফুড শিশুর মুড বদলে দেয়, মন অস্থির করে তোলে। তাই এমন খাবার বেছে নিন যা সুস্বাদু, পুষ্টিকর আর শিশুর মস্তিষ্ককে কাজে লাগায়। 
স্ক্রিন টাইম সীমিত করুন: এ সময় এসে স্ক্রিন পুরোপুরি বাদ দেওয়া কঠিন। তবে সীমিত করা জরুরি। শিশুর বয়স যদি ২-৫ হয়, দিনে এক ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন নয়। 
মনে রাখবেন, শিশুর মন সবচেয়ে বেশি শেখে বাস্তব স্পর্শ, চেহারা, শব্দ, গন্ধ আর অনুভবে। বইয়ের পাতার গন্ধ, কাগজে আঁকার খুশি, গল্প বলার সময় আপনার চোখে চোখ রাখা– এসবেই তার মন আটকে থাকে। 
শিশুর প্রশংসা করুন, তিরস্কার নয়: তুমি ভালো করেছ। আমি তোমার চেষ্টাটা দেখেছি–এ ছোট বাক্যগুলো শিশুর মনে আত্মবিশ্বাসের আলো জ্বালায়। চেষ্টা করলে বাহবা দিন, ভুল হলে বুঝিয়ে বলুন– ভুল করেছ, মানে শিখছ। 
শিশুর মন একটা ফুলের মতো– স্নেহ আর সম্মান পেলে সে ফোটে। চিৎকার বা হুমকিতে সে হয়তো চুপ থাকে, কিন্তু শেখে না। 
তার কথা শুনুন, সময় দিন: আপনি হয়তো সারাদিন কাজের চাপে ব্যস্ত। তবু প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট সময় দিন শুধু তার জন্য– কোনো ফোন নয়, টিভি নয়। তার খেলায় অংশ নিন, গল্প শুনুন, চোখে চোখ রাখুন। 
তাকে বোঝার চেষ্টা করুন– সে কীভাবে শেখে? ছবি দেখে, গান শুনে না কি নিজ হাতে কিছু করে?  
শিশুর মনোযোগ বাড়ানো কোনো ম্যাজিক নয়। এটি ধৈর্য, ভালোবাসা আর সচেতনতার মিশেলে গড়ে ওঠে। কখনও হাল ছাড়বেন না। ছোট ছোট উন্নতিতে খুশি হোন, তাকে জড়িয়ে ধরুন, বলুন– আমি তোমার পাশে আছি। এ কথাটাই শিশুর সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে উঠবে। v 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ শ র মন য গ ব ড়

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়ানডের যে ১০টি রেকর্ড (হয়তো) ভাঙবে না কোনো দিন

রেকর্ড নাকি হয়ই ভেঙে যাওয়ার জন্য। তারপরও কিছু রেকর্ড থাকে, যা কোনো দিন ভাঙবে বলে বিশ্বাস হতে চায় না। ওয়ানডে ক্রিকেটের এমন সব রেকর্ড থেকে ১০টি বেছে নিয়েছেন উৎপল শুভ্র।১. শচীন টেন্ডুলকারের ১৮,৪২৬ রানওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক শচীন টেন্ডুলকার

সম্পর্কিত নিবন্ধ