ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় তারকা জুটি শুভশ্রী গাঙ্গুলি ও দেব। তাদের পর্দার রসায়ন ব্যক্তিগত জীবনেও গড়িয়েছিল। দীর্ঘ দিন চুটিয়ে প্রেম করেছেন এই যুগল। কিন্তু শেষটা ভালো হয়নি এই জুটির। দুজনের পথ দুটো আলাদা হয়ে গেছে।

দীর্ঘ বিরতির পর গত বছর একই মঞ্চে দেখা যায় শুভশ্রী-দেবকে। অতিথি হিসেবে শুভশ্রীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন দেব। এ মুহূর্তের একটি ভিডিও ক্লিপ ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, দেব যখন শুভশ্রীকে পুরস্কারটি তুলে দেন, তখন শুভশ্রীও চোখ তুলে দেবের দিকে তাকায়নি।

দেব-শুভশ্রীর প্রেম ভাঙার পর ‘ধূমকেতু’ সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করেন দেব-শুভশ্রী। ২০১৫ সালে সিনেমাটির শুটিং করেন তারা। তারপর কেটে গেছে এক দশক। কিন্তু মুক্তির আলো পায়নি সিনেমাটি। অবশেষে সব বাধা কাটিয়ে ১৪ আগস্ট মুক্তি পেতে যাচ্ছে সিনেমাটি। কিন্তু সিনেমাটির প্রচারে কি দেব-শুভশ্রীকে একসঙ্গে দেখা যাবে? তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল। সব সংশয় কাটিয়ে একসঙ্গে দেখা দিলেন দেব-শুভশ্রী।

আরো পড়ুন:

আমার ফেলে আসা প্রত্যেকটি সম্পর্কই গুরুত্বপূর্ণ: জয়া

প্রাক্তন প্রেমিক মিঠুনের জন্মদিনে যে বার্তা দিলেন মমতা

দেব তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা যায়, শুভশ্রীর পরনে কালো রঙের টপ, জিন্স। শুভশ্রী বলেন, “নমস্কার, আমি শুভশ্রী গাঙ্গুলি।” তারপরই ভেসে ওঠে দেবের মুখ। তাকেও কালো টি শার্ট ও নীল জিন্সে দেখা যায়। তিনি বলেন, “নমস্কার আমি দেব।” ফের ক্যামেরার সামনে আসেন শুভশ্রী। এ নায়িকা বলেন, “১২ বছর পর।” দেব বলেন, “আমরা আবার একসঙ্গে।”

এরপর শুভশ্রী বলেন, “সমস্ত অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে।” দেব বলেন, “আপনাদের কাছের সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে ধূমকেতু।” তারপর অভিনেত্রীকে বলতে শোনা যায়, “ধূমকেতু আসছে বড় পর্দায়।” নায়িকার কথার রেশ টেনে অভিনেতা বলেন, “অবশেষে এই ১৪ আগস্ট।” শেষে শুভশ্রী বলেন, “আর অপেক্ষা নয়, দেখা হচ্ছে সকলের সঙ্গে বড় পর্দায়।” দেব বলেন, “আমাদের সিনেমা ধূমকেতু আসছে ১৪ আগস্ট।”

দেব-শুভশ্রীর ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পর তাদের ভক্ত-অনুরাগীরা ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন কমেন্ট বক্স। একজন লেখেন, “দেবের আইডিতে শুভশ্রী, এ যেন সত্যিই ধূমকেতু।” আরেকজন লেখেন, “পর্দায় আবার সেরা জুটি ফিরছে।” অন্যজন লেখেন, “প্লিজ একসঙ্গে সিনেমার প্রচারে আসবেন।” একজন লেখেন, “আনন্দটা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।” এমন অসংখ্য মন্তব্য শোভা পাচ্ছে কমেন্ট বক্সে।

দেবের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান শুভশ্রী। ২০২০ সালে বিয়ে করেন তারা। এ সংসারে তাদের একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। অন্যদিকে, অভিনেত্রী রুক্মিণীর সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন দেব।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র একসঙ গ

এছাড়াও পড়ুন:

‘ঘাড়ে, বুকে, হাতে গরম কিছু এসে লাগল, লুটিয়ে পড়েছিলাম মাটিতে’

চারদিকে গুলির শব্দ। শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। ছত্রভঙ্গ হয়ে দিগ্‌বিদিক ছুটছিলেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আচমকাই শরীরে তীব্র একটা ঝাঁকুনি অনুভব করেন খালেদ মাহমুদ। বুঝে ওঠার আগেই লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। জামাও ভিজে যায় রক্তে। সেই চিত্র আজও চোখে ভাসে তাঁর।

গত বছরের ৪ আগস্টের ঘটনা এটি। সেদিনের ঘটনার পর এক বছর কেটে গেছে। তবে সেদিনের যন্ত্রণা শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন খালেদ। এখনো তাঁর শরীরে রয়েছে সাতটি গুলি। বাঁ হাত ও ডান পা অচল। হুইলচেয়ারে বসেই করেন চলাফেরা।

সেদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কর্মসূচিতে লক্ষ্মীপুর শহরে অবস্থান নিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ করে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা–কর্মীরা বাড়ির ছাদ থেকে গুলি ছুড়তে শুরু করেন। টানা ছয় ঘণ্টা ধরে চলা এ হামলায় নিহত হন চার শিক্ষার্থী। গুলিবদ্ধ হন শতাধিক। ২০ বছর বয়সী খালেদ তাঁদের একজন।

খালেদ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর রুহিতা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। সেদিনের ঘটনার কথা মনে করলে কেঁপে ওঠেন তিনি। প্রথম আলোকে খালেদ বলেন,‘সাড়ে চারটার দিকে হঠাৎ আমার বুক, ঘাড়, হাত—সব জায়গায় একসঙ্গে গরম কিছু এসে লাগল। তীব্র ব্যথায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। হাত-পা বাঁকা হয়ে যাচ্ছিল। পাশে অনেকে চিৎকার করছিল। কেউ চ্যাংদোলা করে, কেউ রিকশায় তুলে নিয়ে যাচ্ছিল আহতদের।’

খালেদ জানান, তাঁর শরীরে ১০টি গুলি লাগে। এর মধ্যে একটি গুলি শরীর ভেদ হয়ে বের হয়ে যায়। পরে অস্ত্রোপচার করে একটি গুলি লিভার থেকে বের করা হয়। আরেকটি বের করা হয় পেট থেকে। বাকি সাতটি শরীরে রয়ে গেছে।

সেদিনের ঘটনার পর দীর্ঘ দেড় মাস তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তবে স্বাভাবিক জীবনে আর ফিরতে পারেননি। বাড়িতেই এখন তাঁর চিকিৎসার কার্যক্রম চলছে। প্রতিদিন তাঁর চলাফেরার জন্য পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা লাগে। নিজের দুর্ভোগের কথা জানিয়ে খালেদ বলেন, ‘সেদিন শুধু আমার শরীরে নয়, আমাদের ভবিষ্যতেও গুলি লেগেছিল। আমি দেশের তরুণদের জন্য আওয়াজ তুলেছিলাম, কোনো অপরাধ করিনি। এখন সাতটা গুলি শরীরে নিয়ে বেঁচে আছি, কিন্তু জীবন আর আগের মতো নেই।’

খালেদের চিকিৎসার ব্যয় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে তাঁর পরিবার। জানতে চাইলে বাবা শাহীন কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিল। পড়াশোনায় ভালো ছিল। গুলি খেয়ে এখন পঙ্গু হয়ে গেছে। চিকিৎসা চালাতে ধারদেনায় ডুবে গেছি। সরকার যদি না দেখে ছেলেোকে কীভাবে বাঁচাব? সে তো কোনো সন্ত্রাসী নয়। দেশকে ভালোবাসত।’

লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, খালেদের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। একজন তরুণ ছাত্রকে এভাবে কষ্ট করতে দেখা মর্মান্তিক। বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে সহায়তা দেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আবুল হাসানকে নিয়ে নতুন গল্পগাছা ও পূর্বাপর
  • সরকারের কাছ থেকে ভোট আদায় করেই ছাড়ব: মির্জা আব্বাস
  • অচলায়তন ভেঙে সক্রিয় হওয়ার অপেক্ষায় কোয়াব
  • রক্তাক্ত ৪ আগস্ট: ফেনীতে গুলিতে ঝরে যায় ৭ তরুণের প্রাণ
  • হাতকড়াসহ নৌকা থে‌কে হাওরে ঝাঁপ দি‌য়ে আওয়ামী লীগ নেতার পলায়ন
  • ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা: সাদিক কায়েম
  • কন্যা ফাতিমাকে নবীজির ৫ উপদেশ
  • ‘ঘাড়ে, বুকে, হাতে গরম কিছু এসে লাগল, লুটিয়ে পড়েছিলাম মাটিতে’
  • আজ বন্ধু দিবস
  • রোকেয়া হল ও একটি চিঠি