ভেরামারার পদ্মায় তীব্র ভাঙন, হুমকিতে বাঁধ
Published: 30th, June 2025 GMT
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মুন্সিপাড়াসহ আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। হুমকির মুখে পড়েছে বিভিন্ন স্থাপনা ও নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে নদীপাড়ের দশ হাজার মানুষের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়রা জানান, উজান থেকে নেমে আসা পানি, অতিবৃষ্টি আর প্রবল স্রোতের কারণে পদ্মায় ভাঙন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া, ১২ মাইল টিকটিকিপাড়া ও মসলেমপুরে ভাঙন সবচেয়ে বেশি।
এদিকে, ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে নদীর পাড়ে মানববন্ধনও করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। নতুন করে আর কোনো আশ্বাস নয়, দ্রুত ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে পদক্ষেপ নিতে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা।
আরো পড়ুন:
কুড়িগ্রামে ভাসমান তেল ডিপো চালুর দাবিতে মানববন্ধন
মুরাদনগরে নারী ধর্ষণ: জবি ও কুবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
ভুক্তভোগী রাকিব হোসেন বলেন, “গত এক সপ্তাহ হলো নদী ভাঙছে। কেউ আসছে না। জিও ব্যাগ ফেললে আমারা বেঁচে যেতাম। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আমাদের রাস্তায় রাত কাটাতে হবে।”
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান বলেন, “তালবাড়ীয়া থেকে নয় কিলোমিটার ভাঙন স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে ১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প চলমান রয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকা রক্ষায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এরই মধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই ভাঙনরোধে কাজ শুরু করা হবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫