দুই ভাইয়ের বিরোধের জেরে মব সৃষ্টি ও ভিডিও ছড়ানো হয়: র্যাব
Published: 4th, July 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীকে নির্যাতন করে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার ‘পরিকল্পনাকারী’ শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার কুমিল্লার বুড়িচং থানার কাবিলা বাজার এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। র্যাব বলছে, বড় ভাই ফজর আলীর সঙ্গে বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে মব সৃষ্টি, নারীকে নির্যাতন ও ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছড়িয়ে দেন তিনি।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে র্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘটনার ১৫ দিন আগে ভুক্তভোগী নারী তার স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ওই গ্রামের (বাহেরচর) ফজর আলী ও তার ছোট ভাই শাহ পরান দীর্ঘদিন ধরে তাকে উত্যক্ত করে আসছিল। ঘটনার দুই মাস আগে তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের জের ধরে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাম্য শালিসে জনসম্মুখে ফজর আলী তার ছোট ভাই শাহ পরানকে চড়-থাপ্পড় মারেন। পরবর্তীতে শাহ পরান তার বড় ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সুযোগের সন্ধানে থাকে। শালিসের কিছু দিন পর ভুক্তভোগী নারীর মা ফজর আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে ঋণ নেন। ঘটনার দিন (২৬ জুন) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর মা-বাবা সনাতন ধর্মালম্বীদের মেলা দেখতে যান। এই সুযোগে ফজর আলী সুদের টাকা আদায়ের অজুহাতে রাত সাড়ে ১১টায় কৌশলে ভুক্তভোগীর ঘরে প্রবেশ করেন। এরপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওই বাড়ির আশপাশে অবস্থান করা শাহ পরান ও একই গ্রামের আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজানসহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢোকে।
তারা নারীকে শারীরিক নির্যাতন, শ্লীলতাহানী ও অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ঘটনার পর মূল হোতা শাহ পরানসহ আবুল কালাম ও অন্যান্য আসামিরা আত্মগোপন করে। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহ পরান স্বীকার করেন যে, পূর্ব শত্রুতার কারণে ফজর আলীর ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে তার নির্দেশনা অনুযায়ী অন্যান্য আসামীর সহায়তায় ভুক্তভোগী ও ফজর আলীকে নির্যাতন, শ্লীলতাহানী ও অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটান।
এক প্রশ্নের উত্তরে র্যাব-১১ অধিনায়ক বলেন, ফজর আলী ৫০ হাজার টাকা ঋণ দিয়েছেন, মাঝে মাঝে টাকা আদায় করার জন্য ওই বাসায় যেতেন। সেই অনুযায়ী মবটা প্ল্যান করেন শাহ পরান। তিনি অন্যদের একটা মেসেজ দেন ইমোর মাধ্যমে। মেসেজটা আমাদের কাছে আছে।
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, অপরাধ অপরাধই, রাজনৈতিক পরিচয় এখানে গুরুত্বপূর্ণ না। পরান পেশায় সিএনজিচালক। তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাইনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম র দনগর শ হ পর ন পর প র র কল প ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
চাকসু নির্বাচন: চার হলের ভিপি-জিএস হলেন যারা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এ গণনার কার্যক্রম শুরু হয়। গণনার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ হচ্ছে সিসি ক্যামেরায়, প্রদর্শন করা হচ্ছে সব কেন্দ্রের এলইডি স্কিনে।
আরো পড়ুন:
প্রাণ ফিরে পেতে যাচ্ছে রাকসু, রাত পোহালেই ভোট
চাকসুর ফল: এক কেন্দ্রে ভিপি-এজিএসে এগিয়ে ছাত্রদল, জিএসে বাম
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ি, পাঁচটি কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার তথা ডিন কার্যালয়ে ভোট গণনা শেষে সেখান থেকেই আলাদাভাবে হল সংসদের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। আর চাকসুর ফল ঘোষণা হবে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে।
নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বলেছিলেন, “ভোট গণনার পুরো বিষয়টি সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রের এলইডি স্কিনে প্রদর্শন করা হচ্ছে। কোনো কারণে স্কিন বন্ধ হয়ে গেলে ভোট গণনাও বন্ধ রাখা হবে।”
তিনি বলেন, “ওএমআর পদ্ধতিতে ভেন্ডর মেশিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল- এই দুই প্রক্রিয়ায় ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। পুরোদমে ভোট গণনার কাজ চলছে। যত দ্রুত সম্ভব ফলাফল ঘোষণা করা হবে।”
ইতোমধ্যে হল সংসদের ভোটের ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়েছে।
মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল
চাকসু নির্বাচনে মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল সংসদের ফলাফল রাত পৌনে ১টায় ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
ফলাফলে ১৮২ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি) হয়েছেন তাজিন ইবনে হাবিব, ১৪৪ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হয়েছেন সাদমান আল-তাছিন এবং ২৯০ ভোট পেয়ে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) হয়েছেন শাখাওয়াত হোসেন।
হলটিতে মোট ভোটার ছিলেন ৫১৬ জন। হলটির কেন্দ্র ছিল বিজ্ঞান অনুষদে।
সোহরাওয়ার্দী হল
সোহরাওয়ার্দী হল সংসদের ফলাফল রাত ১টার পর ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
ঘোষিত ফলাফলে ভিপি হয়েছেন নেয়ামত উল্লাহ ফারাবি, জিএস হয়েছেন নুরন্নবী সোহান এবং এজিএস হয়েছেন রেসালাতুর রহমান।
এ হলে ছাত্রশিবিরের পুরো প্যানেল বিজয়ী হয়েছে।
এফ রহমান হল
এরপর এফ রহমান হল সংসদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ৩৬৯ ভোট পেয়ে ভিপি হয়েছেন শাহরিয়ার সোহাগ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রবিউল পেয়েছেন ৩৪৩ ভোট।
৩৭৯ ভোট পেয়ে জিএস হয়েছেন মো. তামিন চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. জাবের আহমদ পেয়েছেন ৩২ ভোট।
এছাড়া ২৯৮ ভোট পেয়ে এজিএস হয়েছেন সাইদুল ইসলাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাইফুর রহমান পেয়েছেন ২৬০ ভোট।
শাহজালাল হল
শাহজালাল হল সংসদের ফলাফল রাত দেড়টার দিকে ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, হলটিতে ভিপি পদে ৯৩৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আলাউদ্দিন। তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী মামুনুর রশিদ পেয়েছেন ৭৩৪ ভোট।
৬৯৭ ভোট পেয়ে জিএস হয়েছেন রায়হান চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়াহিদুল ইসলাম পেয়েছেন ৬৭৩ ভোট।
এছাড়া ১১০১ ভোট পেয়ে এজিএস হয়েছেন ইমতিয়াজ জাবের। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল্লাহ আল নোমান পেয়েছেন ৫৯১ ভোট।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী