মোদির তৃতীয় মেয়াদে এক বছরেই ৯৪৭টি ঘৃণা অপরাধ, নিশানা মুসলিমসহ সংখ্যালঘুরা
Published: 5th, July 2025 GMT
ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা অপরাধ (হেট ক্রাইম) বেড়েই চলেছে। শুধু মুসলিম ও খ্রিষ্টান নয়, ঘৃণা অপরাধ বেড়ে গেছে দলিত ও আদিবাসীদের বিরুদ্ধেও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় দফার শাসনের প্রথম বছরে এ ধরনের অপরাধের হার মারাত্মকভাবে বেড়েছে। মানবাধিকার রক্ষা সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রটেকশন অব সিভিল রাইটস (এপিসিআর)’–এর সাম্প্রতিকতম প্রতিবেদনে এ প্রবণতার চিত্র উঠে এসেছে।
মোদি সরকারের তৃতীয় দফার শাসনের প্রথম বছরে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি, সেসব ঘটনায় রাজনৈতিক, সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক মদদ, তাদের উৎসাহদান এবং সামাজিক–রাজনৈতিক আদর্শগত পরিবর্তনগুলো এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুন মাসে নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় দফার শাসন শুরু হওয়ার পর থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত সারা দেশে ৯৪৭টি ঘৃণা অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৩৪৫টি ঘৃণা ভাষণ, বাকি ৬০২টি ঘৃণা অপরাধ, যাতে হিন্দুত্ববাদীরা সংখ্যালঘুদের জানমালের ওপর সরাসরি ভয়ানক আক্রমণ করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ৬০২ ঘৃণা অপরাধের ঘটনার মধ্যে ১৭৩টিতে সংখ্যালঘুরা শারীরিকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৫টি ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিহত হয়েছেন। তাঁদের সবাই মুসলিম। এই এক বছরে ঘৃণা অপরাধে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৫ জন হিন্দুও আছেন। অবশ্য তাঁরা আক্রমণের মূল নিশানা ছিলেন না। ঘটনাস্থলে থাকার কারণে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের মধ্যে নারীর সংখ্যা পুরুষের তুলনায় বেশি।
এপিসিআর সংগঠনটি তৈরি হয়েছিল ২০০৬ সালে। তাদের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ভারতে দিন দিন ঘৃণা ভাষণ ও ঘৃণা অপরাধ বাড়লেও এবং তাতে প্রধানত ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এসব অপরাধ রেকর্ড বা নথিভুক্ত করার কোনো পদ্ধতিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রচেষ্টা নেই। দলিত হিন্দুদের বিরুদ্ধে অত্যাচার ও অপরাধ নথিভুক্ত করা হয় ১৯৮৯ সালের তফসিল জাতি ও উপজাতি (অত্যাচার নিরোধ) আইন মোতাবেক। এ আইনে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার বিশেষ বিধান রয়েছে; কিন্তু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা অপরাধ মোকাবিলায় এ ধরনের কোনো আইনি ব্যবস্থা এখনো তৈরি করা হয়নি।
জাতিসংঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী, সামাজিক পরিচয়ের দরুন কোনো ব্যক্তি যখন আক্রান্ত হন, তাঁর জীবন বিপন্ন ও সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন তা ঘৃণা অপরাধের আওতায় পড়ে। ঘৃণা ভাষণ মানুষকে হিংসাত্মক করে তোলে। সামাজিক শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করে। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে। ঘৃণা ভাষণ হলো সেই সব আপত্তিকর কথা, যার লক্ষ্য ব্যক্তির সামাজিক ও ধর্মীয় পরিচয়।
মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ভাষণ ও ঘৃণা অপরাধের প্রতিবাদে ভারতে বিক্ষোভ। ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১, নয়াদিল্লি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অপর ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
মোদির তৃতীয় মেয়াদে এক বছরেই ৯৪৭টি ঘৃণা অপরাধ, নিশানা মুসলিমসহ সংখ্যালঘুরা
ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা অপরাধ (হেট ক্রাইম) বেড়েই চলেছে। শুধু মুসলিম ও খ্রিষ্টান নয়, ঘৃণা অপরাধ বেড়ে গেছে দলিত ও আদিবাসীদের বিরুদ্ধেও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় দফার শাসনের প্রথম বছরে এ ধরনের অপরাধের হার মারাত্মকভাবে বেড়েছে। মানবাধিকার রক্ষা সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রটেকশন অব সিভিল রাইটস (এপিসিআর)’–এর সাম্প্রতিকতম প্রতিবেদনে এ প্রবণতার চিত্র উঠে এসেছে।
মোদি সরকারের তৃতীয় দফার শাসনের প্রথম বছরে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি, সেসব ঘটনায় রাজনৈতিক, সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক মদদ, তাদের উৎসাহদান এবং সামাজিক–রাজনৈতিক আদর্শগত পরিবর্তনগুলো এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুন মাসে নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় দফার শাসন শুরু হওয়ার পর থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত সারা দেশে ৯৪৭টি ঘৃণা অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৩৪৫টি ঘৃণা ভাষণ, বাকি ৬০২টি ঘৃণা অপরাধ, যাতে হিন্দুত্ববাদীরা সংখ্যালঘুদের জানমালের ওপর সরাসরি ভয়ানক আক্রমণ করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ৬০২ ঘৃণা অপরাধের ঘটনার মধ্যে ১৭৩টিতে সংখ্যালঘুরা শারীরিকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৫টি ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিহত হয়েছেন। তাঁদের সবাই মুসলিম। এই এক বছরে ঘৃণা অপরাধে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৫ জন হিন্দুও আছেন। অবশ্য তাঁরা আক্রমণের মূল নিশানা ছিলেন না। ঘটনাস্থলে থাকার কারণে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের মধ্যে নারীর সংখ্যা পুরুষের তুলনায় বেশি।
এপিসিআর সংগঠনটি তৈরি হয়েছিল ২০০৬ সালে। তাদের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ভারতে দিন দিন ঘৃণা ভাষণ ও ঘৃণা অপরাধ বাড়লেও এবং তাতে প্রধানত ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এসব অপরাধ রেকর্ড বা নথিভুক্ত করার কোনো পদ্ধতিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রচেষ্টা নেই। দলিত হিন্দুদের বিরুদ্ধে অত্যাচার ও অপরাধ নথিভুক্ত করা হয় ১৯৮৯ সালের তফসিল জাতি ও উপজাতি (অত্যাচার নিরোধ) আইন মোতাবেক। এ আইনে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার বিশেষ বিধান রয়েছে; কিন্তু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা অপরাধ মোকাবিলায় এ ধরনের কোনো আইনি ব্যবস্থা এখনো তৈরি করা হয়নি।
জাতিসংঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী, সামাজিক পরিচয়ের দরুন কোনো ব্যক্তি যখন আক্রান্ত হন, তাঁর জীবন বিপন্ন ও সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন তা ঘৃণা অপরাধের আওতায় পড়ে। ঘৃণা ভাষণ মানুষকে হিংসাত্মক করে তোলে। সামাজিক শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করে। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে। ঘৃণা ভাষণ হলো সেই সব আপত্তিকর কথা, যার লক্ষ্য ব্যক্তির সামাজিক ও ধর্মীয় পরিচয়।
মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ভাষণ ও ঘৃণা অপরাধের প্রতিবাদে ভারতে বিক্ষোভ। ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১, নয়াদিল্লি