রাজশাহী নগরীর ভদ্রা পারিজাত আবাসিক এলাকার একটি ভবনের ফ্ল্যাটে নগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনির সন্ধানে সেখানে তল্লাশি চালানোর নামে মব সৃষ্টি করে নগদ ২ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার ‘লুট’ করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

আজ শনিবার বেলা ১১টায় নগরীর একটি রেস্তোরায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সেই ফ্ল্যাট মালিকের স্ত্রী হাবিবা আক্তার মুক্তা।

তিনি বলেন, ভদ্রা পারিজাত আবাসিক এলাকার ২ নম্বর রোডের ১৫ নম্বর বাড়ির লিফটের ৫ এর ৬ নম্বর ফ্ল্যাটের বাসিন্দা। গত ৩ জুলাই দুপুর আনুমানিক দুইটার দিকে আমার একমাত্র মেয়ের জামাইয়ের ভাই মাহমুদ হাসান সিসিল একদল সন্ত্রাসী এনে আমার ফ্ল্যাটের সামনে মব সৃষ্টি করে বাড়িতে থাকা নগদ দুই লাখ টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায় এবং আমাকে নির্যতন করে, যা ডাকাতির সামিল। এ সময় আমি বাসায় একা ছিলাম। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সিসিল বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে পুলিশ ও স্থানীয় কিছু মানুষ নিয়ে এনে আবারও আমার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তল্লাশির নাটক সাজায়। যার পুরো সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পুলিশসহ আমাদের কাছে রয়েছে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা লিপিবদ্ধ করেছি। সেই সাথে পুলিশকে সব তথ্যাদি প্রদান করা হয়েছে।

হাবিবা আক্তার মুক্তা আরও বলেন, মব সৃষ্টিকারী সিসিলের এসবের পেছনে রয়েছে তার ভাই ও আমার মেয়ে জামাই সিজারের পৈত্রিক সম্পত্তি আত্মসাৎ করা। আমার জামাই মেহেদী হাসান সিজারের বাবা রাজশাহীর একজন পরিচিত ঠিকাদার ছিলেন। তিনি ২০২১ সালে মারা যান। এরপর তার রেখে যাওয়া বহু মূল্যবান সম্পত্তি নিজে ভোগ দখলের জন্য আমার জামাইকে নানাভাবে হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে এই সিসিল। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৯ জুন আমার জামাইয়ের বাড়িতে সিসিল সন্ত্রাসী নিয়ে গিয়ে হামলা চালায়। কোনোক্রমে তিনি লুকিয়ে থেকে রক্ষা পান। আমার স্বামী ও আমি যেহেতু সিজারের শ্বশুর ও শাশুড়ি। সে কারণে আমাদেরকে জিম্মি করে সিজারকে তার কথামতো পরিচালনা করতে পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালায় সিসিল। এর পেছনে রাজনৈতিক কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্য নিয়ে এই হামলা করা হয়। সিসিল নিজে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

মুক্তা আরও বলেন, আমার স্বামী এবং আমার মেয়ে জামাই কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নয়। তবে সিসিল তার ভাই সিজারকে তার পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে পুরো সম্পত্তি নিজে আত্মসাতের জন্য এই মব সৃষ্টি করে আমাদেরকে জিম্মি করার পাশাপশি বাড়িতে ডাকাতি ও আমার মেয়ে জামাই সিজারকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই ষড়যন্ত্র করে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মব স ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

চাকসু: ভিপি, জিএস, এজিএসে ৮ কেন্দ্রে এগিয়ে যারা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের ভোট গণনা শেষে আটটি কেন্দ্রে পূর্ণাঙ্গ অনানুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। বেশিরভাগ কেন্দ্রে শীর্ষ তিন পদের মধ্যে দুটিতে ইসলামী ছাত্রশিবি এবং একটিতে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন। তবে এই তিন পদে আট কেন্দ্রেই শিবির-ছাত্রদলের প্রার্থীদের লড়াই বেশ চোখে পড়ার মতো; অবশ্য বামপন্থিরা লড়াইয়ে আসতেই পারেননি।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে গণনা শুরু হয় সন্ধ্যার পর। ভোটার সংখ্যা কম-বেশি থাকায় কোনো কেন্দ্রে আগে, কোনো কেন্দ্রে দেরিতে ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছে। রাত ২টায় পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী আটটি কেন্দ্রের ফলাফল হলো এমন: 

আরো পড়ুন:

চাকসু নির্বাচন: পাঁচ হলের ভিপি-জিএস হলেন যারা

প্রাণ ফিরে পেতে যাচ্ছে রাকসু, রাত পোহালেই ভোট

আলাওল হল কেন্দ্র
চাকসুর ভোটে এই কেন্দ্রে ভিপি পদে শিবিরের ইব্রাহিম রনি ৩৯৩টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন; তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের সাজ্জাদ হৃদয় পেয়েছেন ২৫১টি ভোট।

জিএস পদে শিবিরের সাঈদ বিন হাবিব ৩৯৩টি ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন; আর ছাত্রদলের শাফায়াত ২০০টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন। 

এজিএস পদে ছাত্রদলের তৌফিক ৪৭১টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন, যেখানে শিবিরের সাজ্জাদ মুন্না পেয়েছেন ২২৫টি ভোট।

বিজয় ২৪ হল কেন্দ্র (ছাত্রী হল) 
এই হলে ভিপি পদে শিবিরের রনি ৬৪৪টি ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন, যেখানে ছাত্রদলের সাজ্জাদ ২২৮ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন।

জিএস পদে শিবিরের সাঈব হাবিব ৬৮৯টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ছাত্রদলের শাফায়াত, তার প্রাপ্ত ভোট ১৬৪টি।

এজিএস পদে ছাত্রদলের তৌফিক ৫৬৭ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। শিবিরের মুন্না 
৩৫১ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন।

এফ রহমান হল কেন্দ্র
এই হলে ভিপি পদে রনি (শিবির) ৩৮১টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন, যেখানে হৃদয় (ছাত্রদল) ২২৬ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন।

জিএস পদে সাঈদ (শিবির) ৩৫১ ও শাফায়াত (ছাত্রদল) ২২০টি ভোট পেয়েছেন।

এজিএস পদে তৌফিক (দল) ৪৪২টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন এবং মুন্না (শিবির) ২৩১ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন।

শাহজালাল হল কেন্দ্র 
এই হলে ভিপি পদে রনি (শিবির) ৭৭৯ ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন; আর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সাজ্জাদ হৃদয় (ছাত্রদল) ৪৮১ ভোট পেয়েছেন।

জিএস পদে সাঈদ (শিবির) ৭৮০ পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন; শাফায়াত (দল) ২৮৫টি দ্বিতীয় হয়েছেন।

শাহজালাল হল কেন্দ্রে শিবিরের সাজ্জাদ মুন্না ছাত্রদলের তৌফিকের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। এই হলে মুন্না মুন্না (শিবির) ৭৮৩টি এবং তৌফিক (দল) ৫৮৯টি ভোট পেয়েছেন।

শিল্পী আব্দুর রশিদ চৌধুরী হোস্টেল কেন্দ্র
এখানে ভিপি পদে সাজ্জাদ (ছাত্রদল) ৩৪টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। ২৭ ভোট নিয়ে শিবিরের রনি দ্বিতীয় এবং ২৬টি ভোট নিয়ে বামের ধ্রুব বড়ুয়া তৃতীয় হয়েছেন।

জিএস পদে সুদর্শন চাকমা (বাম) ২৯টি ভোট নিয়ে এগিয়ে আছেন। এখানে সাঈদ (শিবির) ২৮টি এবং শাফায়েত (ছাত্রদল) ১৪টি ভোট পেয়েছেন।

এজিএস পদে ছাত্রদলের তৌফিক ৩৮টি এবং শিবিরের মুন্না ১১টি ভোট পেয়েছেন।

অতীশ দীপংকর হল কেন্দ্র
এই হলে ভিপি পদে সাজ্জাদ (ছাত্রদল) ২২৩টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। ধ্রুব বড়ুয়া (বৈচিত্র্যের ঐক্য) ও ইব্রাহিম রনি (শিবির) ‍উভয়েই ৯০টি করে ভোট পেয়েছেন। 

জিএস পদে শাফায়েত (ছাত্রদল) ১৬৪টি ভোট নিয়ে এখানে এগিয়ে রয়েছেন। সুদর্শন চাকমা (বামজোট) ১৩১টি ভোট নিয়ে দ্বিতীয় এবং সাঈদ (শিবির) ৮৩টি ভোট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন।

এজিএস পদে তৌফিক (ছাত্রদল) পেয়েছেন ২৬৬টি। যেখানে পলাশ দে (বিনির্মাণ শিক্ষার্থী জোট) ৬২টি এবং মুন্না (শিবির) ৪৫টি ভোট পেয়েছেন।

এই হলে ৬০ শতাংশ অমুসলিম শিক্ষার্থী থাকেন।

সোহরাওয়ার্দী হল কেন্দ্র
এই হলে ভিপি পদে রনি (শিবির) ১ হাজার ৪৮৮টি ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন। এখানে সাজ্জাদ (ছাত্রদল) পেয়েছেন ৬৮০টি ভোট।

জিএস পদে সাঈদ (শিবির) ১ হাজার ৪০৪টি ভোট নিয়ে ব্যাপক ব্যবধানে পেছনে ফেলেছেন ৪৫৮টি ভোট পাওয়া শাফায়েতকে।

এজিএস পদে তৌফিক (ছাত্রদল) ৯৬৮ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন; যেখানে  
৯০৬ নিয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়েছেন মুন্না (শিবির)। 

শহীদ আব্দুর রব হল কেন্দ্র 
এই হলে ভিপি পদে রনি (শিবির) ৬৪৯ ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন; যেখানে হৃদয় (ছাত্রদল) পেয়েছেন ২৮২টি ভোট।

জিএস পদে সাঈদ (শিবির) ৬৩৬টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। আর ছাত্রদলের শাফায়েত পেয়েছেন ১৫৭টি ভোট।

এজিএস পদে তৌফিক (ছাত্রদল) ৫৪০ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন; শিবিরের মুন্না পেয়েছেন ৩৬৩টি ভোট। 

ঢাকা/মিজান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ