‘জীবনে অনেক গুজব শুনেছি। তবে এর মধ্যে একটা হচ্ছে- আমার নাকি দুইটা বিয়ে হয়েছে, তিন নম্বর বিয়ের অনুসন্ধান চলছে! আর আমার একটা বেবি আছে, যাকে তার দাদির কাছে লুকিয়ে রেখেছি- এসব গুজব শুনে আমি আমার পরিবার, সকলে মিলে অনেক হাসছি। কারণ বেবিটা আমার না, ওই আমার বোনের বেবি।’

শনিবার নিউইয়র্ক ঠিকানা টিভিতে সঞ্চালক জায়েদ খানের অতিথি ছিলেন তানজিন তিশা। সেখানে একটি প্রশ্নের জবাবে কথাগুলো বলেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী তানজিন তিশা। 

দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন মুলুকে বাস করছেন জায়েদ খান। সেখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত পারফর্ম করছেন তিনি। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত গণমাধ্যম ঠিকানা-টিভিতে শো নিয়ে হাজির হয়েছেন জায়েদ। তার অনুষ্ঠানে প্রথম অতিথি ছিলেন তানজিন তিশা। যেখানে উঠে এসেছে অভিনেত্রীর ক্যারিয়ার পরিকল্পনা, তাকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন গুজবের উত্তরও।

গুজবের বাইরেও বাস্তবে বিয়ের পরিকল্পনায় আছেন তিশার। পাঁচ বছর পর বিয়ে করবেন তিনি।  এ প্রসঙ্গে তানজিন তিশা বলেন,‘আমি ঠিক করেছি বিয়ের জন্য আরও পাঁচ বছর সময় নেব। তখন আমি মা হব, সংসার করব। আমাদের পেশাগত জীবনের পাশাপাশি ব্যক্তিজীবনও আছে। এটা এড়িয়ে যাওয়া যায় না। তাই আজ হোক বা কাল, বিয়ে করতেই হবে।’

তিশা কথায়, ‘দেখুন এভাবে হয় তো কেউ বলবে না, যেভাবে আমি বলেছি। কারণ, মানুষের প্রফেশনাল লাইফের সঙ্গে পারসোনাল লাইফটাও গুরুত্বপূর্ণ। সেটিকে এড়িয়ে চলার সুযোগ নেই। লুকানোরও কিছু নেই।’

প্রসঙ্গত, অবকাশযাপনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন তানজিন তিশা। সেখানকার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘোরাঘুরির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ভক্তদের মাঝে বাড়ে কৌতূহল। সফর শেষে তিনি আবার দেশে ফিরে কাজ শুরু করেছেন পুরোদমে।

বর্তমানে তিনি কাজ করছেন ভিকি জাহেদের পরিচালনায় একটি নাটকে। নাম ‘খোয়াবনামা’। এতে তিশার বিপরীতে অভিনয় করছেন জনপ্রিয় অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব। ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে এর শুটিং চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অভ ন ত র করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

শক্ত হস্তে দমনই সংগত

দেশে অব্যাহত মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাম গণতান্ত্রিক জোট, গণতন্ত্র মঞ্চসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন যেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাইয়াছে, উহা সংগত। আমরাও মনে করি, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের ১০ মাসাধিকাল পরেও উচ্ছৃঙ্খল জনতা এইভাবে আইন স্বীয় হস্তে তুলিয়া লইতে পারে না। চট্টগ্রামের পটিয়া, কুমিল্লার মুরাদনগর, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, ফরিদপুরসহ সমগ্র দেশে ‘মব সন্ত্রাস’ অব্যাহত থাকিবার কারণে উক্ত রাজনৈতিক জোট ও দলগুলি শুক্রবার পৃথক বিবৃতি দিয়া উদ্বেগ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্টদের নিদ্রাভঙ্গ হইবে বলিয়া আমরা প্রত্যাশা করি। 

সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমসূত্রে আমরা দেখিতেছি, শুধু গত সপ্তাহেই মব সন্ত্রাসের বলি হইয়াছেন ছয়জন মানুষ। বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির হিসাব অনুসারে, গত বৎসরের ৫ আগস্টের পর হইতে ১০ মাসে অন্তত ১৪৩ জন মব সন্ত্রাসে প্রাণ হারাইয়াছেন। অপর মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতে, সংখ্যাটা ১৭৯। এই একই সময়ে মব সৃষ্টি করিয়া অনেক মাজার ও আখড়া ভাঙিবার পাশাপাশি ভিন্ন মতাবলম্বীদের উপরও হামলা হইয়াছে। ধর্মীয় ও নৃগোষ্ঠীগত সংখ্যালঘুর ওপর নির্যাতন চলিয়াছে, নারীর ক্রীড়া আয়োজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পণ্ড হইয়াছে। পাঠাগারও পায় নাই রেহাই। একই বেআইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন, ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভাঙার ঘটনাও অব্যাহত রহিয়াছে।

দুর্ভাগ্যবশত, এই সকল ঘটনার বহুলাংশেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করিয়াছে। কোনো কোনো ঘটনায় পুলিশ নিজেও মব সন্ত্রাসের শিকার হইয়াছে। এই ক্ষেত্রে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ নিজেরাই চাপের মুখে রহিয়াছে, সত্য; কিন্তু মূলধারার রাজনৈতিক দলসমূহের ভূমিকাও বিস্ময়ের জন্ম দেয় বৈকি। অন্যদিকে, মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকার নিছক বিবৃতি দিয়াই দায়িত্ব শেষ করিতে চাহিয়াছে। সরকার যদি আন্তরিকভাবেই পুলিশকে স্বাধীনভাবে তাহার দায়িত্ব পালন করিতে দিত তাহা হইলে ঘটনাগুলি এড়ানো যাইত বলিয়া আমরা মনে করি। ইহাও উল্লেখ করা প্রয়োজন, যেই পুলিশকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের আন্দোলন বন্ধে ইতোমধ্যে বেশ তৎপর দেখা গিয়াছে, সেই পুলিশের মব সন্ত্রাসের ঘটনা নীরবে সহ্য করিবার কথা নহে। 

এই কথা আমরা পূর্বেও বলিয়াছি, কোনো অন্যায় বা অবিচারের বিরুদ্ধে জনরোষ এক কথা আর মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে কাহারও বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা চরিতার্থ সম্পূর্ণ ভিন্ন। উপরন্তু, আইনের শাসন রহিয়াছে এইরূপ কোনো রাষ্ট্রে কোনো অবস্থাতেই কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হস্তে আইন তুলিয়া লইবার সুযোগ নাই। একটা রাষ্ট্রে বা সমাজে যখন দীর্ঘদিন ধরিয়া মব সন্ত্রাস চলে, তখন সেইখানকার সমাজও মাৎস্যন্যায়ে ভরিয়া যায়। শুভ বোধসম্পন্ন নাগরিকগণ এই পরিস্থিতি কামনা করিতে পারে না। তাই মব সন্ত্রাসসহ সকল সহিংসতা বন্ধে অবিলম্বে সরকারকে যদ্রূপ জাগিয়া উঠিতে হইবে তদ্রূপ রাজনৈতিক দলসমূহকেও দায়িত্বশীল আচরণ করিতে হইবে। সমাজের সচেতন মানুষেরও সক্রিয় হইবার প্রয়োজন রহিয়াছে বৈকি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ