কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে যারা ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করেছে, বাংলাদেশে তাদের ঠাঁই হয় নাই : নাহিদ ইসলাম
Published: 7th, July 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ব্যানার ছিঁড়ে, কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে যারা ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করেছে, এই বাংলাদেশে তাদের ঠাঁই হয় নাই। যদি এখনো তারা শিক্ষা না নেয়, যদি এখনো স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন থেকে শিক্ষা না নেয়, তবে তাদের পরিণতিও সেই দিকেই যাবে।
আজ সোমবার দুপুরে নাটোরের মাদ্রাসা মোড়ের স্বাধীনতা চত্বরে এক পথসভায় নাহিদ এ কথা বলেন।
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে এনসিপির নাটোর জেলা শাখা এ পথসভার আয়োজন করে। এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
এ কর্মসূচি উপলক্ষে গতকাল রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত দলের পক্ষ থেকে নাটোর শহরের স্টেশনবাজার, এনএস কলেজ চত্বর, কানাইখালী ও মাদ্রাসা মোড়ে বিপুলসংখ্যক ব্যানার ও ফেস্টুন ঝোলানো হয়েছিল। তবে আজ সকালে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবিসংবলিত অনেকগুলো ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে কেটে ফেলা হয়েছে। এ সম্পর্কে পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘নাটোরের এই কর্মসূচিতে ন্যক্কারজনকভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। হুঁশিয়ারি দিতে চাই, মাত্র এক বছর আগের ঘটনা, এই ব্যানার ছিঁড়ে, কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে যারা ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করেছে, তাদের এই বাংলাদেশে ঠাঁই হয় নাই। যদি এখনো শিক্ষা না নেয়, যদি এখনো সেই স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদি সরকারের পতন থেকে শিক্ষা না নেয়, তবে তাদের পরিণতিও সেই দিকেই যাবে।’
আরও পড়ুননাটোরে এনসিপির জুলাই পদযাত্রার ফেস্টুন-ব্যানার ছিঁড়েছে দুষ্কৃতকারীরা৪ ঘণ্টা আগেসংস্কার প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবেই বলছি, শুধু ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হলেই হবে না, দেশ সংস্কারের মাধ্যমে নতুন করে বাংলাদেশকে গঠন করতে হবে। এমন একটি বাংলাদেশ গঠন করতে হবে, যেখানে গণতন্ত্র থাকবে, যেখানে সমতা থাকবে, যেখানে ইনসাফ থাকবে। একটি দুর্নীতিমুক্ত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া এই তরুণ প্রজন্মের ,এই গণ–অভ্যুত্থানের ছাত্র–জনতার আকাঙ্ক্ষা ছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পর সেই আকাঙ্ক্ষা থেকে নানা পক্ষ সরে গিয়েছে। আমরা বলছি, দেশের মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। আমরা বলছি, জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে, গণ-অভ্যুত্থানের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। এই গণ–অভ্যুত্থানে যে ভাইয়েরা-বোনেরা নেমে এসেছিল, যেসব মানুষ শহীদ হয়েছিল, তাদের সেই শহীদি মর্যাদা রাষ্ট্রকে দিতে হবে। সংবিধানে স্বীকৃতি থাকতে হবে। এর জন্য আমাদের প্রয়োজন জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই সনদ। এসব দাবি বাস্তবায়নে আমরা কোনো ধরনের টালবাহানা, কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র মেনে নেব না।’
জনতার উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আপনারা আমাদের প্রতি আস্থা রাখুন। যেভাবে গণ–অভ্যুত্থানে আমাদের প্রতি আস্থা রেখেছিলেন। আমরা অন্যায়ের সঙ্গে এর আগেও আপস করিনি। আগামী দিনেও আপস করব না। আপনাদের অধিকারের জন্য সব সময় রাজপথে থাকব।’ এ কর্মসূচিকে সফল করেছেন, সেসব নেতা-কর্মীকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘নাটোর একটি শক্তিশালী কমিটি পেতে যাচ্ছে। যাদের হাত ধরে নাটোর থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ বিতাড়িত হবে। আগামী ৩ আগস্ট ঢাকায় শহীদ মিনারে আবারও দেখা হবে।’
পথসভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সংগঠক ফয়সাল আহমেদ,এনসিপি নাটোর জেলার প্রধান সমন্বয়ক এস এম জার্জিস কাদির, সিনিয়র যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুল মান্নাফ প্রমুখ।
এর আগে দুপুরে রাজশাহী থেকে গাড়ি বহর নিয়ে নাটোর আসেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। বেলা একটার দিকে নাটোর সদর উপজেলার ঢালান এলাকায় জেলার প্রবেশ মুখে তাঁদের ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান দলের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা।
নাটোরের পথসভা শেষে এনসিপির গাড়িবহর সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া বাইপাস মোড়ে আরেকটি পথসভা করার কথা আছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাকসু নির্বাচন: চার হলের ভিপি-জিএস হলেন যারা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এ গণনার কার্যক্রম শুরু হয়। গণনার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ হচ্ছে সিসি ক্যামেরায়, প্রদর্শন করা হচ্ছে সব কেন্দ্রের এলইডি স্কিনে।
আরো পড়ুন:
প্রাণ ফিরে পেতে যাচ্ছে রাকসু, রাত পোহালেই ভোট
চাকসুর ফল: এক কেন্দ্রে ভিপি-এজিএসে এগিয়ে ছাত্রদল, জিএসে বাম
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ি, পাঁচটি কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার তথা ডিন কার্যালয়ে ভোট গণনা শেষে সেখান থেকেই আলাদাভাবে হল সংসদের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। আর চাকসুর ফল ঘোষণা হবে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে।
নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বলেছিলেন, “ভোট গণনার পুরো বিষয়টি সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রের এলইডি স্কিনে প্রদর্শন করা হচ্ছে। কোনো কারণে স্কিন বন্ধ হয়ে গেলে ভোট গণনাও বন্ধ রাখা হবে।”
তিনি বলেন, “ওএমআর পদ্ধতিতে ভেন্ডর মেশিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল- এই দুই প্রক্রিয়ায় ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। পুরোদমে ভোট গণনার কাজ চলছে। যত দ্রুত সম্ভব ফলাফল ঘোষণা করা হবে।”
ইতোমধ্যে হল সংসদের ভোটের ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়েছে।
মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল
চাকসু নির্বাচনে মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল সংসদের ফলাফল রাত পৌনে ১টায় ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
ফলাফলে ১৮২ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি) হয়েছেন তাজিন ইবনে হাবিব, ১৪৪ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হয়েছেন সাদমান আল-তাছিন এবং ২৯০ ভোট পেয়ে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) হয়েছেন শাখাওয়াত হোসেন।
হলটিতে মোট ভোটার ছিলেন ৫১৬ জন। হলটির কেন্দ্র ছিল বিজ্ঞান অনুষদে।
সোহরাওয়ার্দী হল
সোহরাওয়ার্দী হল সংসদের ফলাফল রাত ১টার পর ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
ঘোষিত ফলাফলে ভিপি হয়েছেন নেয়ামত উল্লাহ ফারাবি, জিএস হয়েছেন নুরন্নবী সোহান এবং এজিএস হয়েছেন রেসালাতুর রহমান।
এ হলে ছাত্রশিবিরের পুরো প্যানেল বিজয়ী হয়েছে।
এফ রহমান হল
এরপর এফ রহমান হল সংসদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ৩৬৯ ভোট পেয়ে ভিপি হয়েছেন শাহরিয়ার সোহাগ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রবিউল পেয়েছেন ৩৪৩ ভোট।
৩৭৯ ভোট পেয়ে জিএস হয়েছেন মো. তামিন চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. জাবের আহমদ পেয়েছেন ৩২ ভোট।
এছাড়া ২৯৮ ভোট পেয়ে এজিএস হয়েছেন সাইদুল ইসলাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাইফুর রহমান পেয়েছেন ২৬০ ভোট।
শাহজালাল হল
শাহজালাল হল সংসদের ফলাফল রাত দেড়টার দিকে ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, হলটিতে ভিপি পদে ৯৩৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আলাউদ্দিন। তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী মামুনুর রশিদ পেয়েছেন ৭৩৪ ভোট।
৬৯৭ ভোট পেয়ে জিএস হয়েছেন রায়হান চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়াহিদুল ইসলাম পেয়েছেন ৬৭৩ ভোট।
এছাড়া ১১০১ ভোট পেয়ে এজিএস হয়েছেন ইমতিয়াজ জাবের। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল্লাহ আল নোমান পেয়েছেন ৫৯১ ভোট।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী