স্বতন্ত্র কাউন্সিলের দাবিতে ইউনানি-আয়ুর্বেদিক শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি
Published: 10th, July 2025 GMT
বাংলাদেশ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা অর্ডিন্যান্স জারি এবং কাউন্সিল গঠনের একদফা দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আজ চতুর্থ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ এবং হামদর্দ ইউনানি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় দুই মেডিকেলের প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী আহসান হাবীব প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৯৬ সালের নীতিমালা অনুসারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অস্থায়ী কাউন্সিল হিসেবে বিএএমএস ও বিইউএমএস চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন প্রদান করবে এবং বিএমডিসির আদলে একটি পৃথক কাউন্সিল গঠনের জন্য বলা হয়। কিন্তু আজ ২৯ বছর পার হওয়ার পরও কাউন্সিল গঠিত হয়নি। এতে চিকিৎসকেরা পেশাগত জীবনে বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। আইন ও কাউন্সিল ছাড়া আন্দোলন থামবে না। দাবি মানা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
গত ৩০ জুন থেকে ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ৭ জুলাই থেকে পৃথক আইন প্রণয়ন করে কাউন্সিল গঠনের দাবিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন তাঁরা।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে বিভ্রান্তি, আজ আবার বৈঠক হতে পারে
দেশে সয়াবিন তেল ও পাম তেলের দাম বাড়ানো নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়বে কি না, বাড়লেও কত টাকা বাড়বে, সেটি ফয়সালা হতে পারে এ বৈঠকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ভোজ্যতেল পরিশোধন ও উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল ওয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন গত সোমবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর কথা জানায়। এতে বাজারে একধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়। তবে সরকার এ বিজ্ঞপ্তিকে আমলে নেয়নি। গত মঙ্গলবার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন, সরকার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায়নি।
পুরো পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে গতকাল বুধবার বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম কার্যকর করেনি বাংলাদেশ ভেজিটেবল ওয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) এত দিন যা ছিল, তা-ই আছে। নতুন এমআরপির কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, কারখানার মালিকেরা মঙ্গলবার তাঁকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত খুচরা পর্যায়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়েনি।
প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের বর্তমান দাম ১৮৯ টাকা। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন দাম হবে ১৯৫ টাকা। আর প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের নতুন দাম ১৭৭ টাকা, যার বর্তমান দাম ১৬৯ টাকা। এ ছাড়া খোলা পাম তেলের দাম ১৫০ টাকা লিটার থেকে বেড়ে ১৬৩ টাকা করার কথা বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
জানা গেছে, ভোজ্যতেলের দাম বাড়াতে কয়েক মাস ধরেই চেষ্টা করে আসছেন পরিশোধন কারখানার মালিকেরা। গত ২২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। এ বৈঠক শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছিল, ‘কারখানামালিকেরা দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক বেশি।’
সাধারণত বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদন দেয়। গত মাসে বিটিটিসি ভোজ্যতেল নিয়ে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবার এ নিয়ে আরও পর্যালোচনার দায়িত্ব দেয় দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এবং দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশকে (আইসিএমএবি)।
আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট মাহতাবউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে আমরা কাজটা করছি।’
সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল গত এপ্রিল মাসে। তখন বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮৯ টাকা করা হয়েছিল। এ ছাড়া প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৬৯ টাকা এবং বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৭০ টাকা বাড়িয়ে ৯২০ টাকা করা হয় তখন।
অবশ্য আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে এসে খোলা পাম তেলের দাম লিটারে ১৯ টাকা কমিয়ে ১৫০ টাকা করা হয়। ব্যবসায়ীরা তখন প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছিল, বাড়তে পারে লিটারে বড়জোর ১ টাকা।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিটিটিসির মাধ্যমে ভোজ্যতেলসহ সব নিত্যপণ্য নিয়ে পর্যালোচনা করার নির্ধারিত নিয়মকানুন আছে। তা অনুসরণ না করার ফলেই বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। আর এ কারণে ভোক্তারা অহেতুক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। ক্যাবের পক্ষ থেকে আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।’