আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছিলেন হত্যাকাণ্ড চালানোর জন্য, সেটা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রমাণিত হয়েছে। কাজেই শেখ হাসিনার বিচারে আর কোনো বাধা থাকার কথা নয়।

আজ শুক্রবার বিকেলে ‘জুলাই বিপ্লব-২৪’–এর শহীদ পরিবারের সদস্য, পঙ্গুত্ববরণকারী ও আহত ব্যক্তিদের নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখা এ সভার আয়োজন করে।

সভায় মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমি আশা করব, বর্তমান সরকার তার (শেখ হাসিনা) বিচার দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করে বাংলাদেশের আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি যেটি আছে, সেই শাস্তি নিশ্চিত করবে।’

ভারত সরকারের উদ্দেশে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আপনাদের কাছে আজ শেখ হাসিনা আশ্রয় নিয়ে আছে। কাজেই আপনারা আর কালবিলম্ব না করে তাকে বাংলাদেশের কাছে প্রত্যার্পন করুন, যাতে আমরা শেখ হাসিনার বিচার করে তার সাজা কার্যকর করতে পারি।’

দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘কোনো শহীদকে দলীয়করণ করবেন না। সব শহীদ আমাদের গর্বের মানুষ। তাঁরা দেশের সম্পদ। আশা করব, রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই যোদ্ধাদের উপযুক্ত সম্মান করবে। সেখানে কোনো দল-মত দেখবে না। সবার প্রতি একই রকম সম্মান থাকবে।’

ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের দোসর ও শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিবাদ যাতে আর ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান মাহমুদুর রহমান।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘শহীদ পরিবারগুলোকে অবহেলা করা যাবে না। কিছু রাজনৈতিক দল, দলের নেতা–কর্মী চব্বিশকে টিটকারি মারেন, আবার ক্ষমতায়ও যেতে চান। চব্বিশের দিকে যারা আঙুল উঠাবে, তাদের পরিণতি ফ্যাসিবাদীদের মতো হবে। আমরা একাত্তরের শহীদদের শ্রদ্ধা করি, তার মানে এটা নয়, চব্বিশকে আমরা অবহেলা করব।’

সেলিম উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্টের মধ্যে সব শহীদ পরিবারের কাছে বাজেটে নির্ধারিত টাকা পৌঁছে দিতে হবে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁদের অবস্থা গুরুতর, তাঁদের তালিকা করে বিদেশে পাঠাতে হবে, যাঁদের দেশে চিকিৎসা সম্ভব, তাঁদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় ভালো হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

মতবিনিময় সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর এলাকার শহীদ পরিবারের সদস্য, পঙ্গুত্ববরণকারী ও আহত পাঁচ শতাধিক জুলাই যোদ্ধা অংশগ্রহণ করেন এবং কয়েকজন বক্তব্য দেন।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মূসা, মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ফখরুদ্দিন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন বল ন ত তর র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

চাকসু: ভিপি, জিএস, এজিএসে ৮ কেন্দ্রে এগিয়ে যারা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের ভোট গণনা শেষে আটটি কেন্দ্রে পূর্ণাঙ্গ অনানুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। বেশিরভাগ কেন্দ্রে শীর্ষ তিন পদের মধ্যে দুটিতে ইসলামী ছাত্রশিবি এবং একটিতে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন। তবে এই তিন পদে আট কেন্দ্রেই শিবির-ছাত্রদলের প্রার্থীদের লড়াই বেশ চোখে পড়ার মতো; অবশ্য বামপন্থিরা লড়াইয়ে আসতেই পারেননি।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে গণনা শুরু হয় সন্ধ্যার পর। ভোটার সংখ্যা কম-বেশি থাকায় কোনো কেন্দ্রে আগে, কোনো কেন্দ্রে দেরিতে ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছে। রাত ২টায় পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী আটটি কেন্দ্রের ফলাফল হলো এমন: 

আরো পড়ুন:

চাকসু নির্বাচন: পাঁচ হলের ভিপি-জিএস হলেন যারা

প্রাণ ফিরে পেতে যাচ্ছে রাকসু, রাত পোহালেই ভোট

আলাওল হল কেন্দ্র
চাকসুর ভোটে এই কেন্দ্রে ভিপি পদে শিবিরের ইব্রাহিম রনি ৩৯৩টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন; তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের সাজ্জাদ হৃদয় পেয়েছেন ২৫১টি ভোট।

জিএস পদে শিবিরের সাঈদ বিন হাবিব ৩৯৩টি ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন; আর ছাত্রদলের শাফায়াত ২০০টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন। 

এজিএস পদে ছাত্রদলের তৌফিক ৪৭১টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন, যেখানে শিবিরের সাজ্জাদ মুন্না পেয়েছেন ২২৫টি ভোট।

বিজয় ২৪ হল কেন্দ্র (ছাত্রী হল) 
এই হলে ভিপি পদে শিবিরের রনি ৬৪৪টি ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন, যেখানে ছাত্রদলের সাজ্জাদ ২২৮ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন।

জিএস পদে শিবিরের সাঈব হাবিব ৬৮৯টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ছাত্রদলের শাফায়াত, তার প্রাপ্ত ভোট ১৬৪টি।

এজিএস পদে ছাত্রদলের তৌফিক ৫৬৭ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। শিবিরের মুন্না 
৩৫১ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন।

এফ রহমান হল কেন্দ্র
এই হলে ভিপি পদে রনি (শিবির) ৩৮১টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন, যেখানে হৃদয় (ছাত্রদল) ২২৬ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন।

জিএস পদে সাঈদ (শিবির) ৩৫১ ও শাফায়াত (ছাত্রদল) ২২০টি ভোট পেয়েছেন।

এজিএস পদে তৌফিক (দল) ৪৪২টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন এবং মুন্না (শিবির) ২৩১ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন।

শাহজালাল হল কেন্দ্র 
এই হলে ভিপি পদে রনি (শিবির) ৭৭৯ ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন; আর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সাজ্জাদ হৃদয় (ছাত্রদল) ৪৮১ ভোট পেয়েছেন।

জিএস পদে সাঈদ (শিবির) ৭৮০ পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন; শাফায়াত (দল) ২৮৫টি দ্বিতীয় হয়েছেন।

শাহজালাল হল কেন্দ্রে শিবিরের সাজ্জাদ মুন্না ছাত্রদলের তৌফিকের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। এই হলে মুন্না মুন্না (শিবির) ৭৮৩টি এবং তৌফিক (দল) ৫৮৯টি ভোট পেয়েছেন।

শিল্পী আব্দুর রশিদ চৌধুরী হোস্টেল কেন্দ্র
এখানে ভিপি পদে সাজ্জাদ (ছাত্রদল) ৩৪টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। ২৭ ভোট নিয়ে শিবিরের রনি দ্বিতীয় এবং ২৬টি ভোট নিয়ে বামের ধ্রুব বড়ুয়া তৃতীয় হয়েছেন।

জিএস পদে সুদর্শন চাকমা (বাম) ২৯টি ভোট নিয়ে এগিয়ে আছেন। এখানে সাঈদ (শিবির) ২৮টি এবং শাফায়েত (ছাত্রদল) ১৪টি ভোট পেয়েছেন।

এজিএস পদে ছাত্রদলের তৌফিক ৩৮টি এবং শিবিরের মুন্না ১১টি ভোট পেয়েছেন।

অতীশ দীপংকর হল কেন্দ্র
এই হলে ভিপি পদে সাজ্জাদ (ছাত্রদল) ২২৩টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। ধ্রুব বড়ুয়া (বৈচিত্র্যের ঐক্য) ও ইব্রাহিম রনি (শিবির) ‍উভয়েই ৯০টি করে ভোট পেয়েছেন। 

জিএস পদে শাফায়েত (ছাত্রদল) ১৬৪টি ভোট নিয়ে এখানে এগিয়ে রয়েছেন। সুদর্শন চাকমা (বামজোট) ১৩১টি ভোট নিয়ে দ্বিতীয় এবং সাঈদ (শিবির) ৮৩টি ভোট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন।

এজিএস পদে তৌফিক (ছাত্রদল) পেয়েছেন ২৬৬টি। যেখানে পলাশ দে (বিনির্মাণ শিক্ষার্থী জোট) ৬২টি এবং মুন্না (শিবির) ৪৫টি ভোট পেয়েছেন।

এই হলে ৬০ শতাংশ অমুসলিম শিক্ষার্থী থাকেন।

সোহরাওয়ার্দী হল কেন্দ্র
এই হলে ভিপি পদে রনি (শিবির) ১ হাজার ৪৮৮টি ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন। এখানে সাজ্জাদ (ছাত্রদল) পেয়েছেন ৬৮০টি ভোট।

জিএস পদে সাঈদ (শিবির) ১ হাজার ৪০৪টি ভোট নিয়ে ব্যাপক ব্যবধানে পেছনে ফেলেছেন ৪৫৮টি ভোট পাওয়া শাফায়েতকে।

এজিএস পদে তৌফিক (ছাত্রদল) ৯৬৮ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন; যেখানে  
৯০৬ নিয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়েছেন মুন্না (শিবির)। 

শহীদ আব্দুর রব হল কেন্দ্র 
এই হলে ভিপি পদে রনি (শিবির) ৬৪৯ ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন; যেখানে হৃদয় (ছাত্রদল) পেয়েছেন ২৮২টি ভোট।

জিএস পদে সাঈদ (শিবির) ৬৩৬টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। আর ছাত্রদলের শাফায়েত পেয়েছেন ১৫৭টি ভোট।

এজিএস পদে তৌফিক (ছাত্রদল) ৫৪০ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন; শিবিরের মুন্না পেয়েছেন ৩৬৩টি ভোট। 

ঢাকা/মিজান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ