প্রতিবছরের মতো এবার যে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাড়ম্বর আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন ছিল না, এটা ভালো দৃষ্টান্ত। অতীতে এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিয়ে আনুষ্ঠানিকতার নামে সরকারের মাহাত্ম্য প্রচার করা হতো। 

তবে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল খুবই হতাশাজনক।  বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩১০ জন পরীক্ষার্থী। পাস করেছে ১০ লাখ ৬ হাজার ৫৫৪ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৪ লাখ ৭২ হাজার ৪৪৬ জন। পাসের হার ৬৮ দশমিক শূন্য ৪; যা গতবার ছিল ৮৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড যুক্ত করলে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী ৬ লাখের বেশি।  

এই যে জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হলো, এর জন্য তাদের দায়ী করা যায় না। দায়ী হলেন শিক্ষার অভিভাবক বা রক্ষকেরা। বাংলাদেশে যখন যেই সরকার আসে, তাদের মতো করে একটি শিক্ষানীতি বা কমিশন করে। কিন্তু সেই শিক্ষানীতি বা কমিশন শিক্ষার মানোন্নয়নে আদৌ ভূমিকা রাখছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হয় না। 

এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার কম হওয়ার জন্য শিক্ষার অভিভাবকেরা যেসব কারণ চিহ্নিত করেছেন, তাকে ‘ঐচ্ছিক’ হিসেবে ধরে নেওয়া যায়। মূল কারণ তাঁরা এড়িয়ে গেছেন। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, ‘আমাদের কোনো টার্গেট ছিল না যে পাসের হার এত করব, বাড়াব, নাকি কমাব। আমাদের মিশন ছিল পরীক্ষা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা।’ 

সুন্দরভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করা শিক্ষা বোর্ড তথা সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্ব। এতে কৃতিত্ব নেওয়ার কিছু নেই। মূল কথা হলো নীতিনির্ধারকেরা শিক্ষার সমস্যাটি কীভাবে দেখেছেন এবং তার প্রতিকারে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন। করোনার কারণে দুই বছর ঠিকমতো বিদ্যালয়ে পাঠদান হয়নি, এটা সত্য; কিন্তু তার আগে কিংবা পরেও পাঠদান সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছে, এ কথা জোর দিয়ে বলা যায় না। প্রতিটি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর মান যাচাই করার কথা থাকলেও সেটা হয় না। এ কারণেই এসএসসিতে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী অকার্যকর হয়।

আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি, শ্রেণিকক্ষের চেয়ে কোচিং করতে শিক্ষার্থীদের বেশি উৎসাহিত করা হয়। আগে কোচিং সেন্টার ছিল শহরাঞ্চলে, এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলেও প্রসারিত হয়েছে। কোচিং মানে শিক্ষা নয়, পরীক্ষায় কী প্রশ্ন আসবে, কী উত্তর  হবে; সেটা শিক্ষার্থীকে জানিয়ে দেওয়া। বহু বছরের কু–অভ্যাসে আমরা শিক্ষাকে এই স্তরে নিয়ে এসেছি। 

প্রতিটি দেশের একটি শিক্ষা–দর্শন থাকে, যার উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীর মানসিক বিকাশ ও ভবিষ্যতে তাকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা। আমাদের শিক্ষার নীতিনির্ধারকেরা এর ওপর কখনো জোর দেননি।  অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের অনেকের পড়াশোনা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। বিশেষ করে মেয়েশিক্ষার্থীদের। এটা কেবল পরিবার বা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি নয়, মানবসম্পদেরও অপচয়। 

শিক্ষা খাতের প্রতি পূর্বাপর সব সরকারই উদাসীনতা দেখিয়ে আসছে। এমনকি গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আসা সরকারও শিক্ষার প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি। শিক্ষার মানোন্নয়নে সর্বস্তরে মেধাবী শিক্ষকদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, সময়মতো পাঠ্যবইসহ শিক্ষার সব উপকরণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে হবে। আর মেধাবীরা তখনই এই পেশায় আসবেন, যখন সম্মানজনক বেতন–ভাতা পাবেন। 

এসএসসি পরীক্ষায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর অকৃতকার্য হওয়া ঠেকাতে সরকারকে শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি ঠকমতো পাঠদান ও মান যাচাই হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে তদারকি জোরদার করার বিকল্প নেই।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ য় সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মোংলা বন্দরে ৯ম থেকে ২০তম গ্রেডে চাকরি, ১১৩ পদে নিয়োগ

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সরাসরি নিয়োগযোগ্য রাজস্ব খাতভুক্ত ১১৩টি শূন্য পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ৯ম থেকে ২০তম গ্রেডের এসব পদে আবেদন শুরু হবে ১৬ অক্টোবর। আবেদনের শেষ তারিখ আগামী ৯ নভেম্বর।

পদের নাম ও বিবরণ
১. হাইড্রোগ্রাফার
পদসংখ্যা: ১
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: গণিত, পদার্থ ও ভূগোল বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। হাইড্রোগ্রাফিতে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থী অগ্রাধিকার পাবেন।
বেতন স্কেল ও গ্রেড: ২২,০০০–৫৩,০৬০/– (গ্রেড–৯)
২. সহকারী প্রকৌশলী (নৌযান/ নৌ–ভান্ডার)
পদসংখ্যা: ১
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: নৌ অথবা নৌ স্থাপত্য বিষয়ে কমপক্ষে স্নাতক প্রকৌশল ডিগ্রি বা ডিওটি দ্বিতীয় শ্রেণি।
বেতন স্কেল ও গ্রেড: ২২,০০০–৫৩,০৬০/– (গ্রেড–৯)
৩. উপসহকারী প্রকৌশলী (নৌ)
পদসংখ্যা: ১
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: নৌ বা জাহাজ তৈরি বিষয়ে প্রকৌশল ডিপ্লোমা।
বেতন স্কেল ও গ্রেড: ১৬,০০০–৩৮,৬৪০/– (গ্রেড–১০)
৪. প্রথম শ্রেণির ড্রাইভার
পদসংখ্যা: ১
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: প্রথম শ্রেণির ড্রাইভার হিসেবে সনদসহ অষ্টম শ্রেণি পাস। অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থী অগ্রাধিকার পাবেন।
বেতন স্কেল ও গ্রেড: ১২,৫০০–৩০,২৩০/– (গ্রেড–১১)
৫. ওয়্যারলেস অপারেটর
পদসংখ্যা: ৫
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: কমপক্ষে এসএসসি পাস ও ওয়্যারলেস অপারেটর হিসেবে সনদসহ কমপক্ষে প্রতি মিনিটে ১২টি শব্দ আদান–প্রদানে সক্ষম হতে হবে।
বেতন স্কেল ও গ্রেড: ১০,২০০–২৪,৬৮০/– (গ্রেড–১৪)
৬. লাইটকিপার
পদসংখ্যা: ৪
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: অষ্টম শ্রেণি পাস।
বেতন স্কেল ও গ্রেড: ৯,৭০০–২৩,৪৯০/– (গ্রেড–১৫)
৭. দ্বিতীয় শ্রেণির ড্রাইভার
পদসংখ্যা: ২
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: দ্বিতীয় শ্রেণির ড্রাইভার হিসেবে উপযুক্ত সনদসহ অভিজ্ঞতা।
বেতন স্কেল ও গ্রেড: ৯,৭০০–২৩,৪৯০/– (গ্রেড–১৫)
৮. গ্রিজার কাম পাম্প ড্রাইভার
পদসংখ্যা: ১
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: অষ্টম শ্রেণি পাস। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ট্রেড সার্টিফিকেটসহ তিন বছরের অভিজ্ঞতা।
বেতন স্কেল ও গ্রেড: ৯,৩০০–২২,৪৯০/– (গ্রেড–১৬)
৯. কার্পেন্টার
পদসংখ্যা: ১
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: অষ্টম শ্রেণি পাস। কার্পেন্টারশিপে ট্রেড সার্টিফিকেটসহ তিন বছরের অভিজ্ঞতা।
বেতন স্কেল ও গ্রেড: ৯,৩০০–২২,৪৯০/– (গ্রেড–১৬)
১০. গ্যাস কাটার
পদসংখ্যা: ১
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: কমপক্ষে এসএসসি পাস ও ডিপিটিসি সনদ।
বেতন স্কেল ও গ্রেড: ৯,৩০০–২২,৪৯০/– (গ্রেড–১৬)

আরও পড়ুনএই ‘ভুলে ভরা’ বিসিএস প্রশ্নপত্র কারা তৈরি করল১৪ অক্টোবর ২০২৫আবেদনের ক্ষেত্রে প্রার্থীকে নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে একটি অনলাইন অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মোংলা বন্দরে ৯ম থেকে ২০তম গ্রেডে চাকরি, ১১৩ পদে নিয়োগ
  • বিনা মূল্যে কেয়ারগিভিং প্রশিক্ষণ কোর্স, আবেদন এসএসসি পাসে