জোতার স্মৃতিকে ‘চিরস্থায়ী’ করতে অবসরে লিভারপুলের ২০ নম্বর জার্সি
Published: 12th, July 2025 GMT
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও ইঙ্গিতটা আগেই দিয়ে রেখেছিল লিভারপুল। সড়ক দুর্ঘটনায় দিয়েগো জোতার মৃত্যুর পরপরই তাঁর ২০ নম্বর জার্সিকে ‘অমর’ করে রাখার ঘোষণা দিয়েছিল ক্লাবটি। সেই ঘোষণায় জোতার জার্সিকে অবসরে পাঠানোর বিষয়টি স্পষ্ট না করলেও অনেক ভক্ত–সমর্থক তেমনটিই ধরে নিয়েছিলেন।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেই অনুমানই সত্য হলো। আনুষ্ঠানিকভাবে জোতার জার্সিকে অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে অ্যানফিল্ডের ক্লাবটি। এর ফলে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডই লিভারপুলের চিরকালীন ২০ নম্বর খেলোয়াড় হয়ে থাকবেন। জোতার স্ত্রী রুতে কারদোসো ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপের পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ বিবৃতিতে লিভারপুলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘দিয়োগোর সম্মানে ও স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই নম্বরটি সব পর্যায়ে অবসর দেওয়া হবে।’ এ সিদ্ধান্ত শুধু পুরুষ দলের জন্যই নয়, বরং নারী দল ও পুরো একাডেমিতে কার্যকর হবে।
আরও পড়ুনজোতার ২০ নম্বর জার্সিকে ‘অমর’ করে রাখবে লিভারপুল০৪ জুলাই ২০২৫বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এ সিদ্ধান্ত কেবল দলের সাফল্যে আমাদের পর্তুগিজ তারকার গত পাঁচ বছরের অসামান্য অবদানকে স্বীকৃতি জানাতেই নয়, বরং সতীর্থ, সহকর্মী এবং সমর্থকদের ওপর যে গভীর ব্যক্তিগত প্রভাব তিনি ফেলেছিলেন সে জন্যও। তাদের সঙ্গে গড়ে তোলা চিরস্থায়ী বন্ধনকে সম্মান জানাতেও (এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে)।’
দিয়োগো জোতা (৪ ডিসেম্বর ১৯৯৬–৩ জুলাই ২০২৫).উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শতবর্ষের মাইলফলক পেরোলেন মাহাথির
শতবর্ষের মাইলফলক পেরোলেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার হিসেবে পরিচিত মাহাথির মোহাম্মদ। আজ বৃহস্পতিবার ছিল তাঁর শততম জন্মদিন। দীর্ঘ এই জীবনে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে তিনি সাফল্যের এক অনুপ্রেরণা। শততম জন্মদিনেও তাই থামতে নারাজ মালয়েশিয়ার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মতে—‘অবসর মানে আপনি কিছুই করছেন না।’
মাহাথির ২৪ বছর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। প্রথমে ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত—টানা ২২ বছর। পরের দুই বছর ছিল ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত। মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন এনেছিলেন তিনি। অবকাঠামোগত নজিরবিহীন পরিবর্তন এসেছিল তাঁর হাত ধরে। তবে মাহাথিরের বিরোধী মত দমন, মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে সীমিত অঙ্গীকার নিয়েও কম আলোচনা হয়নি।
মাহাথিরের জন্ম ১৯২৫ সালের ১০ জুলাই, মালয়েশিয়ার কেদাহ রাজ্যের প্রধান শহর আলোর সেতারে। তাঁর দাদা ভারতের কেরালা থেকে সেখানে অভিবাসী হন। বাবা মোহাম্মদ ইস্কান্দার ছিলেন একটি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের প্রধান শিক্ষক। মাহাথির চল্লিশের দশকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় সিতি হাসমাহর। পরিচয় থেকে পরিণয়। এরপর বিয়ে।
গাইনোকোলজিতে এমবিবিএস শেষ করে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন মাহাথির। শুরু করেন চিকিৎসাসেবা। একসময় তাঁর মধ্যে ধারণা আসে, বিপুল মানুষের সেবা করতে হলে রাজনীতির বিকল্প নেই। সেই চিন্তা থেকে রাজনীতির ময়দানে পা রাখেন। ১৯৮১ সালে ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও) থেকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন মাহথির মোহাম্মদ।
আশির দশকে ‘লুক ইস্ট পলিসি’ বা পূর্বকে অনুসরণ করার নীতি গ্রহণ করেন মাহাথির। অর্থনীতির পশ্চিমা মডেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমান। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাহাথিরের প্রথম ২২ বছরে মালয়েশিয়ায় পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, এক্সপ্রেসওয়ে, বিমানবন্দরসহ নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। ১৯৯৭ সালের অর্থনৈতিক সংকটও দক্ষতার সঙ্গে সামাল দেন তিনি।
শততম জন্মদিনেও শারীরিক ও মানসিকভাবে এখনো সক্রিয় মাহাথির। আজ মালয়েশিয়ার পুত্রজায়া শহরে নিজ অফিসে পরিচিত সাফারি স্যুট পরে সকাল সকাল হাজির হন তিনি। জন্মদিন উপলক্ষে এক পডকাস্টে মাহাথির বলেন, ‘আমি সব সময় কাজকর্মের মধ্যে থাকি। মানুষ কেন বিশ্রাম নিতে চায়, তা আমি বুঝি না। বলতে চাচ্ছি যে আপনি অবকাশের জন্য ছুটি নিতে চান, তার মানে আপনি কিছু করছেন। অবকাশযাপনও একটি কাজ। তবে কিছু মানুষ অবসর নিতে চান এবং বিশ্রাম করতে চান। বিশ্রামের অর্থ কী? আপনি কিছুই করছেন না।’