আবারো জোড়া গোল আর এমএলএসে মেসির নতুন রেকর্ড
Published: 13th, July 2025 GMT
ইন্টার মায়ামির হয়ে লিওনেল মেসির প্রতিটি ম্যাচ যেন নতুন কোনো কীর্তির জন্ম দিচ্ছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। ন্যাশভিল এসসির বিপক্ষে জোড়া গোল করে মেসি শুধুই দলকে জেতাননি, বরং গড়েছেন এক নজিরবিহীন রেকর্ড; মেজর লিগ সকারে টানা পাঁচ ম্যাচে একাধিক গোল করার প্রথম খেলোয়াড় এখন তিনি। বাংলাদেশ সময় রোববার (১৩ জুলাই) সকালে ফোর্ট লডারডেলে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ইন্টার মায়ামি ২-১ ব্যবধানে জয় তুলে নেয়, আর দুটি গোলই আসে মেসির জাদুকরী বাঁ পা থেকে।
ম্যাচের ১৭ মিনিটেই আলো ছড়ান আর্জেন্টাইন মহাতারকা। অসাধারণ এক ফ্রি কিকে বল পাঠান সরাসরি জালে, যা তার ক্যারিয়ারের ৬৯তম ফ্রি কিক গোল। ইন্টার মায়ামির হয়ে এটি তার ষষ্ঠ ফ্রি কিক গোল, আর এমএলএসে টানা ষষ্ঠ ম্যাচে গোল করার নজিরও গড়ে ফেলেছেন এদিন। দ্বিতীয়ার্ধের ৬২ মিনিটে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক জো উইলিসের একটি ভুল পাস কেড়ে নিয়ে আবারও নিখুঁত দক্ষতায় বল জালে ঠেলেন মেসি। যেন ভুল ধরিয়ে দেওয়া নয়, বরং প্রতিপক্ষকে শাস্তি দেওয়ার নিপুণ উপায় জানার নামই মেসি।
এই পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ২০১২ সালের পর প্রথমবারের মতো কোনো লিগে টানা পাঁচ ম্যাচে একাধিক গোল করলেন তিনি। সেই সময় বার্সেলোনার হয়ে করেছিলেন ছয় ম্যাচে টানা জোড়া গোল, এবার মায়ামির জার্সিতে সেই পুরনো মেসিকে দেখা যাচ্ছে নতুন চেহারায়। ১৫ ম্যাচে ইতিমধ্যেই ১৬ গোল করে ফেলেছেন, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলদাতা ন্যাশভিলের স্যাম সারিজের সঙ্গে তাকে যৌথভাবে শীর্ষে বসিয়েছে। যদিও মেসি খেলেছেন ছয় ম্যাচ কম।
ন্যাশভিলের হয়ে একমাত্র সান্ত্বনার গোলটি করেন হানি মুখতার, অ্যান্ডি নাজারের কাছ থেকে পাওয়া এক পাসে। কিন্তু জয়টা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখে মায়ামিই, যারা ধারাবাহিকভাবে জিতে পাঁচ ম্যাচের জয়ের রেকর্ড গড়েছে এবং পূর্বাঞ্চলীয় কনফারেন্সের শীর্ষ দুই দল ফিলাডেলফিয়া ও সিনসিনাটির সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে এনেছে মাত্র পাঁচ পয়েন্টে।
ম্যাচ শেষে মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাসচেরানো মেসির ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “সে যা করছে, আমরা ভাবতাম সেটা আর কখনও দেখা যাবে না। লিও এক বিশেষ খেলোয়াড়, ইতিহাসের সেরা।” সঙ্গে যোগ করেন, “বুসকেটস আর মেসির বোঝাপড়া অতুলনীয়—তারা একে অপরকে না দেখেও জানে কার কোথায় থাকা উচিত। দ্বিতীয় গোলটাই তার প্রমাণ।”
মেসির পায়ে বল থাকলে শুধু গোল আসে না, আসে ইতিহাস। আর সেই ইতিহাসেই বারবার নিজের নাম তুলছেন ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এমএলএস যেন মেসির রাজত্ব
মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ২০২৫ মৌসুম শেষের পথে। ১৯ অক্টোবর ভোরে নাশভিলের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে নিয়মিত মৌসুমের শেষ ম্যাচটি খেলবে লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি। এবারের নিয়মিত মৌসুমটা ইন্টার মায়ামির জন্য খানিকটা হতাশারই বলা যায়। গত মৌসুমে প্রথমবারের মতো লিগে সবার ওপরে থেকে সাপোর্টাস শিল্ড জিতেছিল তারা। কিন্তু এবার সেই শিরোপা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে দলটি। মায়ামিকে পেছনে ফেলে শিরোপা জিতেছে ফিলাডেলফিয়া।
দল হিসেবে মায়ামি শিরোপা ধরে রাখতে ব্যর্থ হলেও, ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে মেসি ছিলেন বরাবরের মতোই উজ্জ্বল। মৌসুমজুড়েই আলো ছড়িয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ম্যাচের পর ম্যাচে দলকে সামনে থেকে পথ দেখিয়েছেন।
গোল করা এবং গোলে সহায়তার পাশপাশি অনেক নৈপুণ্যের সূচকে চূড়ায় অবস্থান করছেন মেসি। এমএলএসে এখনো অবশ্য একটি করে ম্যাচ বাকি আছে দলগুলোর। কিন্তু তারপরও খুব বেশি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই, মেসি নিজেকে এতোটাই সামনে নিয়ে গেছেন।
আরও পড়ুনমেসি যেন একটি নদীর নাম০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫মৌসুমে এখন পর্যন্ত হওয়া ৩৩ ম্যাচের ২৭টিতে মাঠে নেমেছেন মেসি। এই ২৭ ম্যাচে সর্বোচ্চ ২৬ গোল করেছেন মেসি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লস অ্যাঞ্জেলেস এফসির ডেনিস বুয়াংগার চেয়ে ২ গোল বেশি। গ্যাবন উইঙ্গার অবশ্য মেসির চেয়ে ৩ ম্যাচ (৩০) বেশি খেলেছেন।
গোলে সহায়তায়ও সবার ওপরে মেসি। এই তালিকায় মেসির মতো ১৮ গোলে সহায়তা করে যৌথভাবে শীর্ষে আছেন ডেনিশ উইঙ্গার আন্দ্রেস ড্রেয়ের। কিন্তু ড্রেয়ের মেসির চেয়ে ৬ ম্যাচ বেশি খেলেছেন। মূল দুই পরিসংখ্যানের বাইরে ম্যাচে একাধিক গোল, সুযোগ তৈরি এবং সফল ড্রিবলসহ বেশ কিছু পরিসংখ্যানে সবার ওপরে মেসি।
শুধু পরিসংখ্যান দিয়ে অবশ্য মেসিকে মাপার সুযোগ নেই। নিউক্লিয়াস হয়ে পুরো মায়ামিকে অনেকটা একাই এগিয়ে নিয়েছেন মেসি। রক্ষণ থেকে আক্রমণভাগ সব জায়গায় মেসি ছিলেন সূত্রধরের ভূমিকায়। যখন যেখানে প্রয়োজন হয়েছে দলের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুনমেসিকে দেখে লজ্জায় কথা বলতে না পারা সেই ছেলেটিই এখন আর্জেন্টিনার ভবিষ্যৎ১০ অক্টোবর ২০২৫তবে মেসির জন্য দলকে শিরোপা জেতানোর স্বপ্ন এখনো শেষ হয়ে যায়নি। শিল্ড না জিতলেও মায়ামিকে এমএলএসের প্লে অফে নিয়ে গেছেন মেসি। এখন সুযোগ আছে প্রথমবারের মতো দলকে এমএলএস কাপ জেতানোর। সেটি জিততে পারলে শিল্ড হারানোর যন্ত্রণা অনেকটাই ভুলে যেতে পারবেন আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী।