বাদাম যে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, তা আমরা কমবেশি সবাই জানি। যদিও বাদামে ফ্যাটের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি, তবে সেটি মূলত স্বাস্থ্যকর আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট।

বাদামে থাকে প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন ই ও ফাইবার। আর থাকে আয়রন, পটাশিয়াম, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিংক ও কপারের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান। এসব খনিজ হৃৎস্বাস্থ্য ভালো রাখে, ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

বিশেষ করে আখরোটে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড স্মৃতিশক্তি ও মানসিক স্বচ্ছতা উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তবে অনেকেই জানেন না, এসব উপকারী বাদাম দিনের ঠিক কোন সময়ে খেলে পুষ্টিগুণ সবচেয়ে ভালোভাবে কাজে লাগে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট (পরিপাকতন্ত্রের রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক) ডা.

সৌরভ শেঠি, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং ২৫ বছরের বেশি সময় চিকিৎসা অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ। তিনি জানাচ্ছেন বাদাম নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য, অর্থাৎ কোন সময় কোন বাদাম খেলে তা পেটের স্বাস্থ্য, হরমোনের ভারসাম্য এবং সামগ্রিক সুস্থতায় কীভাবে সহায়তা করে।

চলুন, জেনে নেওয়া যাক কোন সময় কোন বাদাম খাওয়া সবচেয়ে উপকারী।

সকালে কোন বাদাম

ডা. সৌরভ শেঠি বলছেন, দিনটা শুরু করুন কাঠবাদাম দিয়ে। এই বাদামে ভিটামিন ই ও ম্যাগনশিয়ামে ভরপুর। এই বাদাম রক্তে চিনির মাত্রা ঠিক রাখে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়। তাই সকালের শুরুতে বাদাম খেলে বিপাকক্রিয়া উন্নত হয় এবং মানসিক স্বচ্ছতা বাড়ে।

সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার দিকে

পাইনবাদাম খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় সকাল ১০টা বা বেলা ১১টার দিকে। এই বাদামে আছে পাইনোলেনিক অ্যাসিড, যা ক্ষুধা দমন করে এবং ফ্যাট মেটাবলিজম বা চর্বি বিপাকে সাহায্য করে। এটি খেলে দুপুরে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়

দুপুরে কোন বাদাম

কাজুবাদাম খাওয়ার জন্য সেরা সময় হলো দুপুরবেলা। ড. শেঠি বলছেন, কাজুতে থাকা জিংক ও আয়রন রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং শক্তি উৎপাদনের জন্য জরুরি। আপনি চাইলে সালাদে মিশিয়ে বা খাবারের সঙ্গে কাজু খেতে পারেন। তবে কাজুতে ক্যালরি বেশি, তাই পরিমাণমতো খাওয়াই ভালো।

আরও পড়ুনকেন মিলেনিয়াল ও জেন-জিদের মধ্যে বাড়ছে কলোরেক্টাল ক্যানসার১৭ ঘণ্টা আগেবিকেলে কোন বাদাম

পেস্তাবাদাম খাওয়ার আদর্শ সময় বিকেল। সাধারণত বেলা তিনটা বা চারটার দিকে। এটি বিকেলের ক্লান্তি কাটাতে সাহায্য করে। পেস্তা প্রোটিন ও ফাইবারে ভরপুর, যা শক্তি ধরে রাখতে ও ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। বিকেলের এ সময়ে কিছু পেস্তা বাদাম খেলে আপনি রাতের খাবার খাওয়ার আগপর্যন্ত মনোযোগী ও পরিতৃপ্ত থাকতে পারবেন

সন্ধ্যায়

আপনি যদি আখরোট খেতে ভালোবাসেন, তবে সবচেয়ে উপযোগী সময় সন্ধ্যা। আখরোটে আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও মেলাটোনিন, যা ঘুমের মান উন্নত করে এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তাই রাতে খাওয়ার আগে আখরোট খেলে ঘুম ভালো হয় এবং মন প্রশান্ত থাকে।

রাতের খাবারের পর

পেকান বাদাম হৃৎস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। রাতের খাবারের পর ডেজার্টের সঙ্গে পেকান খেতে পারেন। এতে থাকা পলিফেনল এলডিএল কোলেস্টেরল কমায় এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা মেটাতে ফলের সঙ্গে পেকান খেতে পারেন।

যেকোনো সময় কোন বাদাম

চিনাবাদাম আপনি যেকোনো সময় খেতে পারেন। চিনাবাদামে থাকা রেজভেরাট্রল ও নিয়াসিন হৃদ্‌যন্ত্র ও মস্তিষ্কের সুস্থতায় সহায়ক। সকাল, বিকেল বা যেকোনো সময়ই আপনি এটি খেতে পারেন।

মনে রাখবেন

বাদাম স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী, তবে তা খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে। বেশি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।


সূত্র: এমএসএন

আরও পড়ুনমাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের পর ছেলের খোঁজে রুদ্ধশ্বাস ৪ ঘণ্টা১৩ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স হ য য কর র জন য আখর ট উপক র সবচ য়

এছাড়াও পড়ুন:

আসামি শতবর্ষী ইদ্রিস শেখের আদালতে হাজিরা ও প্রিজন ভ্যানে যাত্রা

তখন সময় দুপুর ১২টা ৩ মিনিট। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের তৃতীয় তলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১–এর এজলাস কক্ষ থেকে একজন বৃদ্ধ ব্যক্তিকে একজন পুলিশ সদস্য হাত ধরে সিঁড়ির কাছে নিয়ে যেতে থাকেন। সেই বৃদ্ধের ডান হাতে একখানা লাঠি। লাঠির ওপর ভর দিয়ে তিনি সিঁড়ির কাছে যেতে থাকেন।

সিঁড়ির কাছে যাওয়ার পর তিনি কোনোভাবেই সেই সিঁড়ি বেয়ে তৃতীয় তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় আসতে পারছিলেন না। দুজন পুলিশ কনস্টেবল অশীতিপর এই বৃদ্ধের দুই বাহু ধরে রাখেন।

পরে ইদ্রিস শেখের দুই বাহু ধরে দ্বিতীয় তলায় আনা হয়। তখন ইদ্রিস শেখ হাঁপাচ্ছিলেন। পরে দুজন কনস্টেবল আবার ইদ্রিস শেখের দুই বহু ধরে রাখেন। এরপর খুব সাবধানে দুই তলার সিঁড়ি দিয়ে ইদ্রিস শেখ লাঠির ওপর ভর করে নিচতলায় নামেন। তৃতীয় তলা থেকে নিচতলায় নামতে ইদ্রিস শেখের সময় লেগেছে পাঁচ থেকে সাত মিনিট। ইদ্রিস শেখকে যখন নিচতলার সিঁড়ি দিয়ে হাজতখানার সামনে আনা হয়, তখন তাঁর ছেলে বাবুল শেখ কেঁদে ফেলেন।

বাবুল শেখ তখন চিৎকার দিয়ে বলে ওঠেন, ‘আমার বাবার বয়স এখন ১২০ বছর। এই ১২০ বছর বয়সেও আমার বাবাকে জেলের ঘানি টানতে হবে।’

প্রিজন ভ্যানে ইদ্রিস শেখ। মঙ্গলবার ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে

সম্পর্কিত নিবন্ধ