হার প্রায় চোখের সামনে! কিন্তু রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দরের ব্যাট যেন হয়ে উঠল এক দুর্ভেদ্য ঢাল। ইংল্যান্ডের মাটিতে চতুর্থ টেস্টের শেষ দিনে ভারত যখন ধীরে ধীরে ব্যাকফুটে যাচ্ছিল, তখন এই দুই বাঁহাতির ২০৩ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি ফিরিয়ে আনল আশার আলো। টেস্ট ম্যাচ শেষ হলো এক মর্যাদাপূর্ণ ড্রয়ে।

চতুর্থ ইনিংসে শুরুটা ছিল ধাক্কাময়। শূন্যরানেই নেই ২ উইকেট। এরপর কেএল রাহুল ৯০ রানে ফিরে গেলেও অধিনায়ক শুভমন গিল পূর্ণ করেন এই সিরিজে তার চতুর্থ শতক। এই সেঞ্চুরির মাধ্যমে গিল ১৯৯০ সালে শচীন টেন্ডুলকারের পর প্রথম ভারতীয় হিসেবে ম্যানচেস্টারে সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব অর্জন করেন। তবে গিলের ইনিংস থেমে যায় ১০৩ রানে, দল তখনও পিছিয়ে।

এরপর মাঠে নামে জাদেজা-সুন্দর জুটি। যাদের ব্যাটে ধীরে ধীরে ভরসা ফিরে পায় ‘মেন ইন ব্লু’। দ্বিতীয় সেশনে কোনও উইকেট না হারিয়ে ভারত নেয় ম্যাচের রাশ। তখনই বোঝা যায়, পরাজয়ের পথ থেকে অনেকটাই সরে এসেছে দল। চা-বিরতির সময় ভারতের লিড ছিল ১১ রান, জাদেজা অপরাজিত ৫৩ ও সুন্দর ৫৭ রানে।

আরো পড়ুন:

রাহুল-গিলের ব্যাটিং দৃঢ়তা, শেষ দিনে হবে কি শেষ রক্ষা?

ডাকেট-ক্রাউলির তাণ্ডবে ছায়ার মতো পিছিয়ে ভারত

শেষ সেশনে বেন স্টোকস ড্র মেনে করমর্দনের প্রস্তাব দেন। কিন্তু তখনই তো সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় দুই ব্যাটার। ভারতের পক্ষ থেকে সেই প্রস্তাবে তখনই সাড়া দেওয়া হয়নি। হ্যারি ব্রুককে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে জাদেজা পূর্ণ করেন টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি। এরপর দু’ওভার বাদেই ওয়াশিংটন সুন্দরও তুলে নেন তার প্রথম টেস্ট শতক।

শেষ পর্যন্ত, ১৮৫ বলে ১০৭ রানে অপরাজিত থাকেন জাদেজা। সুন্দর অপরাজিত থাকেন ২০৬ বলে ১০১ রানে। তাদের ধৈর্য ও প্রতিরোধই নিশ্চিত করে ভারতের জন্য এই ড্র, যা সিরিজ হারের হাত থেকে রক্ষা করেছে এবং শেষ টেস্টকে সুযোগ হিসেবে রেখেছে সিরিজে সমতা ফেরানোর। অবশ্য ওই টেস্টটিও যদি ড্র হয় তাহলে ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতবে।

ব্যাট হাতে ১৪১ রান ও বল হাতে দুই ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দর

এছাড়াও পড়ুন:

ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থও দেখতে হবে

সরকারের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বন্দর কর্মকর্তারা বলছেন, বর্ধিত মাশুল কার্যকর হলে গড়ে ৪০ শতাংশ কম–বেশি হারে বন্দরের আয় বাড়বে। অর্থাৎ বাস্তবে মাশুলের গড় হার বাড়বে ৪০ শতাংশ। এ ঘোষণা এমন সময়ে এল, যখন বাংলাদেশের ওপর ট্রাম্পের ৩৫ শতাংশ বাড়তি শুল্কের খড়্গ ঝুলছে। দর–কষাকষিতে বাংলাদেশ কতটা সফল হবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দরের সব ধরনের মাশুল বাড়ানোর সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা।

তৈরি পোশাকশিল্পের সংগঠন বিজিএমইএর নেতাদের বক্তব্য হলো ব্যবহারকারীদের সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনা ছাড়াই বন্দরের মাশুল বাড়ানোর পদক্ষেপ যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। বাড়তি মাশুল রপ্তানি খাতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা পিছিয়ে দেবে। অর্থনীতিবিদেরাও অনুরূপ মত পোষণ করেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল আদায়ের প্রধান দুটি খাত হলো জাহাজ ও পণ্য পরিবহনের সেবা বাবদ। বন্দরের হিসাব অনুযায়ী, বিদ্যমান মাশুলের হার অনুযায়ী ২৩-২৪ অর্থবছরের এই দুই খাতে মাশুল আদায় হয়েছে ৩ হাজার ৯১২ কোটি টাকা। বর্ধিত মাশুল থেকে বন্দরের দেড় হাজার কোটি টাকা বাড়তি আয় হবে।

সারা দেশের সমুদ্রপথে কনটেইনার পরিবহনের ৯৯ শতাংশ ও মোট আমদানি–রপ্তানি পণ্যের ৮৭ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আনা-নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, মাশুল বাড়ানোর পরও বিশ্বের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় কম। বিষয়টি কেবল মাশুলের হার দিয়ে বিবেচনা করলে হবে না। সেবার মানও দেখতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দরে যেখানে একটি জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করতে অপেক্ষার সময়সহ পাঁচ–ছয় দিন লেগে যায়, অন্যান্য বন্দরে সেটি এক দিনে খালাস হয়। স্বল্প সময়ে কনটেইনার খালাস করা গেলে মাশুল বাড়ালেও ব্যবসায়ীদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে না। সে ক্ষেত্রে সরকারের উচিত ছিল আগে সেবার মান বাড়ানো, এরপর মাশুল বাড়ানোর কথা চিন্তা করা।

দ্বিতীয়ত সরকারকে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে হবে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে। গত ২ জুন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ব্যবহারকারীদের সঙ্গে মাশুল নিয়ে এক দফা আলোচনা করে, যেখানে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ২০ শতাংশ মাশুল বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। এরপর তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা আলোচনা না করেই মাশুল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ১৯৮৬ সালের পর এই প্রথম মাশুল বাড়ানো হচ্ছে। তাদের এই বক্তব্যের মধ্যেও শুভংকরের ফাঁকি আছে। মাশুল নির্ধারিত হয় ডলারের হিসাবে, অর্থাৎ ১৯৮৬ সালে ডলারের দর ছিল ৩০ টাকা ৪১ পয়সা, বর্তমান দর ১২২ টাকা। সে ক্ষেত্রে সরকার ঘোষণা দিয়ে না বাড়ালেও ব্যবহারকারীদের চার গুণ মাশুলই গুনতে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের কিছু টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশি কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস নিজেও চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনকালে বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়ার পক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরেন।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার জন্যই মাশুল বাড়ানো হয়েছে। সাধারণত যে কোম্পানি টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব পায়, তারা মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ করে। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরের যে টার্মিনালটি নিয়ে ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে, সেটি স্বয়ংসম্পূর্ণ, নতুন করে বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই। অন্তর্বর্তী সরকার বন্দরের বিষয়ে যে সিদ্ধান্তই নিক না কেন, সেটা হওয়া উচিত রাজনৈতিক দল ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
  • চার দিনের জ্বরে ভুগে মারা গেল কিশোর
  • নারী এশিয়ান কাপে বাংলাদেশের ম্যাচ কবে, কোথায়
  • সাংলাং থেকে বেডং, সমুদ্র আমাদের সাথী  
  • আর রাহিকুল মাখতুম: এক আশ্চর্য সিরাতগ্রন্থ
  • ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার
  • লাইভ কনসার্টে পোশাক বিড়ম্বনায় জেনিফার লোপেজ (ভিডিও)
  • কুয়েট শিক্ষক সমিতির আন্দোলন স্থগিত, ১৬০ দিন পর মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে ক্লাস
  • ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থও দেখতে হবে