প্রাথমিক পর্যায়ে ঐকমত্যের তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে
Published: 29th, July 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, “মার্চ মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনায় অনেকগুলো বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আবার এসবের মধ্য থেকে কিছু কিছু বিষয় দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায়ও ফিরে এসেছে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার একটা তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোকে বুধবার পাঠানো হবে।”
মঙ্গলবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো.
আরো পড়ুন:
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে আমরা কাজ করছি: প্রধান উপদেষ্টা
কিছু দল পিআর ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে শপথ করেছে: ফখরুল
নারীর সংসদীয় প্রতিনিধিত্ব সংক্রান্ত আলোচনার অগ্রগতির বিষয়েও সাংবাদিকদের অবহিত করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি জানান, প্রায় সব রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদে নারী আসন সংখ্যা ১০০ এ উন্নীত করার বিষয়ে একমত হয়েছে। যদিও এই আসনগুলো কেমন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত হবে, তা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত ঐকমত্য হয়নি। তবে বর্তমানে সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, “পর্যায়ক্রমে নারীদের আসন কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে আমরা অনেকটাই ঐকমত্যের জায়গায় এসেছি৷ কমিশনের পক্ষ থেকে আগামীকাল একটি লিখিত ভাষ্য দেওয়া হবে, যা গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশা করছি।”
মঙ্গলবারের আলোচনায় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিষয়ে আলী রীয়াজ জানান, কমিশনের পক্ষ থেকে আজ একটি সংশোধিত ও সমন্বিত প্রস্তাব রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। ৫ সদস্যবিশিষ্ট বাছাই কমিটির প্রস্তাব নিয়ে কোনো দলই আপত্তি করেনি। তবে র্যাংক চয়েজ পদ্ধতির ব্যবহার নিয়ে এখনো দ্বিধা রয়েছে। বিশেষ করে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের ভিন্নমত রয়েছে। এ বিষয়ে আলোচনা করে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি।
ঢাকা/এএএম/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’
কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে