মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ‘৩৬ জুলাই উদ্যাপন’ অনুষ্ঠান শুরু
Published: 5th, August 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ‘৩৬ জুলাই উদ্যাপন’ শীর্ষক অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান শুরু হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন অনুষ্ঠানে এসেছেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিকেল পাঁচটায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে দেখা যায়, অনেকে নানা স্লোগান দিচ্ছেন। তাঁরা স্লোগানে স্লোগানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দ্রুত বিচার দাবি করছেন। বর্তমান সংবিধান বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন।
বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নওশীন নওয়ার বলেন, ‘এক বছর আগে আমাদের ভাই-বোনের রক্তের বিনিময়ে বিজয় এসেছিল। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। আজকে আমরা যে মন খুলে সব কথা বলতে পারছি, সেটি হাসিনা থাকলে বলতে পারতাম না। ফলে এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ। তাই আজ এখানে আসা।’
রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে এই অনুষ্ঠান দেখতে এসেছেন মুহাম্মদ ইউসূফ নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যান। তাঁর পালানোর এক বছর হলো আজ। এ জন্য তাঁর ভালো লাগছে। তবে দুঃখের বিষয় হলো, শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের হত্যার বিচার এখনো হয়নি। তিনি চান যাঁরা অপরাধী, যাঁরা হত্যাকারী, তাঁদের যেন দ্রুত বিচার করা হয়।
অনুষ্ঠানস্থলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে যে অনুষ্ঠানগুলো হয়ে আসছে, তার প্রত্যেকটি সফলভাবে, সুন্দরভাবে শেষ করতে তাঁরা সহযোগিতা করেছেন। আজকের অনুষ্ঠানও সুন্দরভাবে শেষ হবে। নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি আছে বলে তিনি মনে করেন না। তবুও সর্বাত্মক প্রস্তুতি র্যাবের আছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার সামর্থ্য র্যাবের আছে। এই অনুষ্ঠানসহ পুরো ঢাকা শহরে র্যাবের নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিল্পীগোষ্ঠী গান পরিবেশ করবে। বেলা ২টা ২৫ মিনিটে উদ্যাপন করা হবে ফ্যাসিস্টের পলায়নের ক্ষণ। এরপর বিভিন্ন ব্যান্ড গান পরিবেশন করবে। বিশেষ ড্রোন ড্রামা হবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত। অনুষ্ঠানের সবশেষ আয়োজন হিসেবে থাকছে আর্টসেলের গান।
অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় থাকছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, সহযোগিতায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন শ র
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক