দাবি মেনে শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে ফেরানোর আহ্বান সিপিবির
Published: 20th, October 2025 GMT
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে টানা নবম দিন ‘লাগাতার অবস্থান’ কর্মসূচিতে থাকা এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকদের তিন দফা দাবি দ্রুত মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর পুরনো পল্টন মোড়ে অনুষ্ঠিত সংহতি সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রামে সড়কের পাশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
জুবায়েদ হত্যা: জবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
সিপিবির সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন দলের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, শিক্ষকনেতা জাহাঙ্গীর হোসেনসহ অন্য নেতারা। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থানরত শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে।
শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো, ১.
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকার অনেক অপ্রয়োজনীয় ও এখতিয়ারবহির্ভূত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, অথচ শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির প্রতি কান দিচ্ছে না। এর বিপরীতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশি দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’
সিপিবির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘‘দাবি আদায়ের আন্দোলনে সরকারের কালক্ষেপণের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষকরা যাতে দ্রুত শ্রেণিকক্ষে ফিরতে পারেন, সেই জন্য অবিলম্বে দাবিগুলো মেনে নিতে হবে। আর তাদের খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকতে বাধ্য করলে সরকারকে এর দায় নিতে হবে।’’
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন বলেন, ‘‘সরকারি চাকরিজীবীরা যেখানে মূল বেতনের ৪০-৫৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ি ভাড়া ভাতা পান, সেখানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পান মাত্র ১ হাজার টাকা। এতে করে একজন শিক্ষকের মেসের সিট ভাড়া দেওয়াও সম্ভব নয়। অথচ তারা মাত্র ২০ শতাংশ ভাড়া ভাতার দাবি করেছেন, এর বদলে পেয়েছেন অপমান ও পুলিশি নির্যাতন।’’
তিনি আরো বলেন, “শিক্ষকদের প্রতি সরকারের এই অবমাননাকর আচরণ কোনো সভ্য সমাজে কাম্য নয়। সিপিবি ও বাম গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে থেকে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। আগামীতে বামপন্থি সরকার গঠন হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করা হবে।”
‘শিক্ষক সংহতি দিবস’ পালনের ঘোষণা
সিপিবি আগামী ২৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী ‘শিক্ষক সংহতি দিবস’ পালনের ঘোষণা দিয়েছে। এ দিন প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হবে।
ঢাকা/এএএম/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষকদ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ও সংহতি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। একই সঙ্গে ১২ অক্টোবর আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের ওপর পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়েছে সংগঠনটি।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলেছে, ইউনেসকোর সুপারিশ অনুযায়ী বাংলাদেশ কখনোই ৫ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষা বরাদ্দ দেয়নি। চব্বিশের গণ–আন্দোলনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষায় বরাদ্দ আগের চেয়েও কমিয়েছে। সরকার ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করলেও সেখানে শিক্ষা সংস্কারে কোনো কমিশন নেই।
শিক্ষকদের দাবির প্রতি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো (শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়) ইতিবাচক মনোভাব পোষণ না করলে তা নতুন রাজনৈতিক সংকট তৈরি করবে বলে সতর্ক করেছে শিক্ষক নেটওয়ার্ক। বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষক নেটওয়ার্ক মনে করে, শিক্ষক–কর্মচারীদের উত্থাপিত তিনটি দাবি ন্যায্য। অবিলম্বে দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য সরকারকে আহ্বান জানায় শিক্ষকদের সংগঠনটি।
শিক্ষকদের তিনটি দাবি হলো মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা) বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা দেড় হাজার টাকা করা এবং কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ বাড়ানো।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের দাবিদাওয়া বর্তমান সময়ের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট ও মূল্যস্ফীতিতে জীবনযাপনের জন্য অতি সামান্য বলে মনে করে শিক্ষক নেটওয়ার্ক। আন্দোলনরত শিক্ষক–কর্মচারীদের প্রতি বৈষম্য চলছে উল্লেখ করে তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা যেখানে মূল বেতনের ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ বাড়িভাড়া পান, সেখানে বেসরকারি শিক্ষকেরা হাজার টাকা বরাদ্দ পান।
এই ব্যবস্থাকে বেসরকারি শিক্ষকদের প্রতি অবমাননা বলে মনে করে শিক্ষক নেটওয়ার্ক। বিবৃতিতে তারা বলেছে, এই ব্যবস্থা পুরো জাতির জন্য লজ্জাজনক। যার কারণে শিক্ষকেরা শিক্ষকতায় পূর্ণ মনোযোগী থাকতে পারেন না। প্রাইভেট পড়ানো-কোচিং থেকে শুরু করে দলীয় রাজনীতিসহ অন্যান্য অশিক্ষকসুলভ কাজে জড়াচ্ছেন।
বিবৃতিতে শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে চলতি অর্থবছরে শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ১০ শতাংশ বৃদ্ধি এবং আগামী অর্থবছরে আরও ১০ শতাংশ বাড়ানোর নিশ্চয়তা প্রদান, চিকিৎসা ভাতা ন্যূনতম দেড় হাজার টাকা নির্ধারণ এবং উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করা।
এ ছাড়া আগামী অর্থবছর থেকে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৩ শতাংশ বরাদ্দ নিশ্চিত করা এবং তা পর্যায়ক্রমে ৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে শিক্ষক নেটওয়ার্ক। একই সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের তদন্ত করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।