বাংলামোটর–গুলশানে ঝটিকা মিছিল, আওয়ামী লীগের ১২ কর্মী গ্রেপ্তার
Published: 13th, September 2025 GMT
রাজধানীর বাংলামোটর ও গুলশান এলাকায় শুক্রবার ঝটিকা মিছিল করার সময় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার মিরপুর ও দারুস সালাম এলাকায় ঝটিকা মিছিল করার সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ১৮ নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির কার্যালয়ের (এনসিপি) সামনে জড়ো হয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের দিকে মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী ও অনুসারীরা। মিছিলে ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়। এ সময় রমনা থানার পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। অন্যরা পালিয়ে যান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেলা সোয়া তিনটা থেকে চারটার মধ্যে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সদস্যরা রাজধানীর গুলশানে ঝটিকা মিছিল বের করেন। সেখান থেকে পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তাঁরা সংঘবদ্ধ হয়ে আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
বাংলামোটর ও গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মো.
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের বেশ কিছু নেতা–কর্মী দারুস সালাম থানার টেকনিক্যাল মোড়ে জড়ো হয়ে ঝটিকা মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় থানার টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে। অন্যরা পালিয়ে যান। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নাটোর জেলার বড় বড়াই গ্রামের যুবলীগের সদস্য আল আমিন, আওয়ামী লীগের সদস্য আক্কাস মিয়া, চাঁদপুর সদর চন্দ্রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক সোহাগ মাঝি, আওয়ামী লীগের সদস্য নেছার মিয়া, ইউসুফ আলী, ফারুক হোসেন, মকবুল মৃধা, মানিক মিয়া, মো. শাহীন, মো. নাঈম, এমদাদুল হক ও আবদুল আলীম।
মিরপুরে গ্রেপ্তার ৬গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মিরপুরে অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ৬ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। তাঁরা হলেন জুয়েল রানা, আল নোমান সাইফ, মো. জুলহাস, ইমন হোসেন খান মানিক, সাগর হোসেন ও ওহিদুল ইসলাম সুমন।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ রোমন প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে খবর আসে, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের বেশ কিছু নেতা-কর্মী মুখে মাস্ক পরে পাইকপাড়া ডি-টাইপ স্টাফ কোয়ার্টারের ১ নম্বর ফটকের সামনের রাস্তায় জড়ো হয়েছেন। তাঁরা বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করছিলেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর র সদস য স গঠন র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।