নতুন প্রজাতির তৃণভোজী ডাইনোসরের জীবাশ্ম আবিষ্কার
Published: 18th, September 2025 GMT
মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমিতে নতুন প্রজাতির তৃণভোজী ডাইনোসরের জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটি ও নর্থ ক্যারোলাইনা মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসের বিজ্ঞানীরা। ‘জাভাসেফাল রিনপোচে’ প্রজাতির এই ডাইনোসরের দুটি পা ছিল। তৃণভোজী ডাইনোসরটির মাথার খুলি বেশ আলাদা, গম্বুজাকৃতির। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন যে অপ্রাপ্তবয়স্ক ডাইনোসরের জীবাশ্মটি প্রায় ১০ কোটি ৮০০ বছর পুরোনো। এই প্রজাতির ডাইনোসর আর্লি ক্রিটেসিয়াস পিরিয়ডে পৃথিবীতে বসবাস করত।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, নতুন সন্ধান পাওয়া জীবাশ্মটি ডাইনোসরের অন্য জীবাশ্মগুলোর চেয়ে প্রায় দেড় কোটি বছর আগের। তাই জীবাশ্মটিকে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্যাকেসেফালোসর প্রজাতির জীবাশ্মের মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো ও পূর্ণাঙ্গ বলা হচ্ছে। বয়সে ছোট ডাইনোসরটির মাথার খুলির দৈর্ঘ্য প্রায় এক মিটার। মাথায় থাকা গম্বুজটি একটি মাত্র খুলির হাড় দিয়ে তৈরি, যা পরের প্রজন্মের প্যাকেসেফালোস প্রজাতি থেকে ভিন্ন। জীবাশ্মটির মাথার পেছনের অংশে ছোট ছোট কাঁটা ও নোড ছিল।
নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটি ও নর্থ ক্যারোলাইনা মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসের বিজ্ঞানী লিন্ডসে জ্যানো জানান, অনেকেই মনে করেন যে এ ধরনের ডাইনোসর তাদের গম্বুজাকৃতির মাথা সামাজিক ও যৌন আচরণের জন্য ব্যবহার করত। ডোম শিকারির হাত থেকে বাঁচতে বা দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ছিল না। সম্ভবত নিজেদের আকর্ষণীয় করে তোলা ও জীবনসঙ্গী পাওয়ার প্রতিযোগিতার জন্য ব্যবহার করা হতো। কিশোর ডাইনোসরটির মাথার ডোম সম্পূর্ণ গঠিত হয়েছে। বলা যায়, পূর্ণবয়স্ক হওয়ার আগেই প্যাকেসেফালোসররা সামাজিক ও প্রজননমূলক আচরণে অংশ নিত।
বিজ্ঞানী জ্যানো আরও বলেন, জাভাসেফাল যে পরিবেশে বাস করত, তা ছিল হ্রদ ও পাহাড়ে ঘেরা একটি উপত্যকা। এর আশপাশে আরও অনেক গাছপালাভোজী ডাইনোসর, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, কচ্ছপ ও কুমিরের নিকটাত্মীয় প্রাণীর দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। জাভাসেফাল রিনপোচের আগে প্যাকেসেফালোসরদের সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান ছিল কম। এই জীবাশ্মে গ্যাস্ট্রোলিথস বা পেটে পাথর থাকারও প্রমাণ মিলেছে। এমন পাথর খেয়ে ডাইনোসররা খাদ্য হজমে গতি আনত।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’