প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে ১২টি পদক পেল বাংলাদেশ
Published: 9th, October 2025 GMT
প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত আন্তর্জাতিক গণিত ও বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে (আইএমএসও) বাংলাদেশ দলের শিক্ষার্থীরা দুটি রৌপ্যপদক ও ১০টি ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে মালয়েশিয়ার কেদাহ প্রদেশের রাজধানী আলোর সেতারে আইএমএসওর সমাপনী অনুষ্ঠানে এই ফলাফল ঘোষণা করা হয়ে।
বাংলাদেশের পক্ষে সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিজিৎ সাহা গণিতে এবং মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহমিদ হাসান বিজ্ঞানে রৌপ্যপদক অর্জন করেছে। বাংলাদেশ দল ‘বেস্ট কো–অপারেটিভ দল’ হিসেবেও স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এ ছাড়া ‘স্টেম এক্সপ্লোরেশন’ প্রতিযোগিতায় প্রথম রানারআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
অলিম্পিয়াডে সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো.
শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশের দলনেতা বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সহসভাপতি জাহিদুল আমিন বলেন, প্রথমবারের মতো অংশ নিয়ে বাংলাদেশ দলের সব সদস্যের পদক পাওয়া একটি অনন্য অর্জন। তিনি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দলের মেন্টরদের অভিনন্দন জানান।
চারজন শিক্ষার্থীর পদক পাওয়ায় আনন্দিত সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ ব্রাদার লিও পেরেইরা শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মেধা বিশ্বমানের, তাই অর্জনে তিনি খুশি হয়েছেন বটে, তবে অবাক হননি। তিনি মনে করেন, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক পর্যায় থেকে বিজ্ঞান ও গণিতে দক্ষ করে তোলার জন্য এ রকম উদ্যোগ আরও বাড়ানো দরকার।
৫ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত মালয়েশিয়ার আলবুখারি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এই অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৩টি দেশের চার শতাধিক প্রাথমিক শিক্ষার্থী এই অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়েছে।
এবার ২২তম আসর হলেও বাংলাদেশ এই প্রথম আয়োজনে অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির যৌথ উদ্যোগে গত ২২ আগস্ট দেশে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ গণিত ও বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ধাপে ধাপে ১২ জন শিক্ষার্থীকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জন্য নির্বাচিত করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অল ম প য় ড
এছাড়াও পড়ুন:
গ্যালারিতে অন্য লড়াই: ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ বনাম ‘ওয়ান টিম ওয়ান হংকং’
কারও হাতে লাল-সবুজ পতাকা, কারও কপালে ‘বাংলাদেশ’ লেখা স্টিকার, কেউ আবার জাতীয় দলের জার্সি পরে হাজির। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের বাংলাদেশ-হংকং ম্যাচ ঘিরে এই মানুষগুলো হাজির ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণে।
হংকংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের ফুটবল দ্বৈরথের বয়স পঞ্চাশ বছর। দীর্ঘ এই যাত্রায় এ নিয়ে পঞ্চমবার মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। আগের চারবারে বাংলাদেশ হেরেছে তিনবার, একবার হয়েছে ড্র। এবারের আগে সর্বশেষ ২০০৬ সালে ঢাকা সফরে এসেছিল হংকং। সেই দলের কেউ আর বর্তমান দলে নেই।
১৯ বছর পর হংকং যেন নতুন এক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যদিও তাদের খেলার ধরন ও দর্শনে তেমন পরিবর্তন আসেনি—আক্রমণাত্মক ফুটবলই তাদের মূল অস্ত্র। ২০০৬ সালের পর আবার বাংলাদেশ সফরে আসা হংকংকে ঘিরে গত কদিন ধরে ফুটবল অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা। অতীতে বাংলাদেশ এই হংকংকে হারাতে না পারলেও এবার সেই বৃত্ত ভাঙার স্বপ্নই দেখেছেন দেশের ফুটবল সমর্থকেরা।
আজ ম্যাচ দেখতে আসা দর্শকও একই আশায় বুক বেঁধেছেন। পুরান ঢাকার কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী মহিবুল হাসান গত জুনে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাংলাদেশকে হারতে দেখেছেন। এবার এসেছেন ভিন্ন অভিজ্ঞতার আশায়। তিনি বললেন, ‘সিঙ্গাপুর ম্যাচে আমরা জিততে পারতাম, কিন্তু পারিনি। এবার অন্তত জয়ের খবর নিয়ে বাসায় ফিরতে চাই। হামজা ভাই, শমিত সোম, ফাহামিদুলরা ভালো খেললে জেতা সম্ভব।’
জাতীয় স্টেডিয়ামে রাত ৮টায় শুরু হবে ম্যাচ। তার আগে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যেও দেখা গেল মধুর এক লড়াই। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা দু-এক আগে হংকংয়ের দর্শকেরা গ্যালারিতে বসতেই অন্য পাশে থাকা বাংলাদেশি সমর্থকেরা চিৎকার শুরু করেন। প্রায় ৩০-৪০ জন বাংলাদেশি নিজেদের গ্যালারির শেষ প্রান্তে গিয়ে ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ ধ্বনিতে গ্যালারি মুখরিত করেন। হংকংয়ের দর্শকেরাও বসে থাকেননি। ‘One Team One Hong Kong’, ‘Fight for Glory’ লেখা টিফো হাতে স্লোগানে স্লোগানে দিয়েছেন জবাব।
প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হংকংয়ের ১১০ জন সমর্থক বাংলাদেশে এসেছেন ম্যাচ দেখতে। তাদের একজন চ্যান সিও। প্রথমবার ঢাকায় এসে উচ্ছ্বসিত তিনি, ‘প্রথমবার বাংলাদেশে এলাম। খুবই ভালো লাগছে। এখানকার মানুষ ফুটবলকে অনেক ভালোবাসেন।’ কে জিতবে এমন প্রশ্নে খানিকটা দ্বিধায় পড়ে মুচকি হেসে যোগ করলেন, ‘তোমরা আমাদের বন্ধু... তবে আমরাই জিতব।’
সব লড়াইয়েই থাকে উত্তাপ, থাকে রোমাঞ্চ। বাংলাদেশ-হংকং ম্যাচও তার ব্যতিক্রম নয়। সর্বশেষ ২০০৬ সালে জাতীয় স্টেডিয়ামে হয়েছিল দুই দলের ফুটবল ম্যাচ। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের গোলকিপার ছিলেন বিপ্লব ভট্টাচার্য।
১৯ বছর আগের দ্বৈরথ এখনো চোখে ভাসে বিপ্লবের। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হংকং অনেক আগে থেকেই পেশাদার। আমরা যখন খেলেছি তখনো তাদের দলে অনেক বিদেশি বংশোদ্ভূত খেলোয়াড় ছিল। ম্যাচটা বেশ উপভোগ্য হয়। তখন আমাদের বাঙালি দর্শকও ছিল, আবার ওদের দর্শকও ছিল গ্যালারিতে।’