দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনটা ছিল ভারতের তরুণ ব্যাটারদের দিন। একদিকে যশস্বী জয়সওয়ালের অনবদ্য অপরাজিত ১৭৩ রান, অন্যদিকে  সাই সুদর্শনের প্রায় নিখুঁত ৮৭ রানের ইনিংস। এই দুই তরুণের জুটিতেই ভারত প্রথম দিনে দাপট দেখিয়েছে। দিন শেষে ভারতের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৩১৮ রান। জয়সওয়ালের সঙ্গে ২০ রানে অপরাজিত আছেন শুভমান গিল। তারা দুজন আগামীকাল শনিবার দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নামবেন।

প্রথম দিনে নিজের ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরিটি করে জয়সওয়াল প্রমাণ করে দিলেন, তিনিই এখন ভারতের টেস্ট ব্যাটিংয়ের ভবিষ্যৎ স্তম্ভ। ইনিংসের শুরুতে তিনি ছিলেন ধৈর্যশীল, বলের গতি-প্রকৃতি বুঝে এগিয়েছেন ধীরে ধীরে। কিন্তু একটু সুযোগ পেলেই পঞ্জা মেলেছেন দারুণ সব শটে।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশকে ১০০ রানে হারিয়ে নিউ জিল্যান্ডের প্রথম জয়

নাসিরের ফিফটিতে ফাইনালে রংপুর

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসাররা বারবার একই ভুল করেছেন। কখনো বেশি ফুল লেংথে, কখনো ছোট লেংথে বল দিয়েছেন। আর সেসবই ঠান্ডা মাথায় কাজে লাগিয়েছেন জয়সওয়াল। প্রথম ঘণ্টায় যেখানে তিনি ১০ রান করেছিলেন ৩৫ বলে, সেখান থেকে লাঞ্চের আগেই পৌঁছে যান ৪০-এ। আর শেষ পর্যন্ত থামলেন ২৫৩ বলে ১৭৩ রানে।

এই সেঞ্চুরির মাধ্যমে জয়সওয়াল এখন গ্রায়েম স্মিথের সঙ্গে যৌথভাবে সমান সংখ্যক সেঞ্চুরির মালিক (২৪ বছর বয়সের আগেই একজন ওপেনার হিসেবে)। ভারতের ইতিহাসে ২৪ বছর বয়সের আগেই তার চেয়ে বেশি শতক আছে কেবল শচীন টেন্ডুলকারের। আর আশ্চর্য তথ্য হলো- জয়সওয়ালের সাতটি সেঞ্চুরির মধ্যে পাঁচবারই তিনি পেরিয়েছেন ১৫০ রানের মাইলফলক! এই কৃতিত্বে তার ওপরে আছেন কেবল ডন ব্র্যাডম্যান।

২৩ বছর বয়সী সাই সুদর্শন হয়তো আজ নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন। তুলনামূলকভাবে অভিজ্ঞতার দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও আজ তার ব্যাটিংয়ে ছিল মুগ্ধতা। নামার পর থেকেই তিনি খেলেছেন আত্মবিশ্বাসে ভরপুর শট।

লোকেশ রাহুল দ্রুত আউট হলে শুরুতেই চাপে পড়ে ভারত। কিন্তু সুদর্শন এসে জয়সওয়ালের সঙ্গে ১৯৭ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি গড়ে চাপ সামলে নেন। ৫৮ রানে একবার ক্যাচ মিস হলেও বাকি ইনিংসে প্রায় নিখুঁত ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত জোমেল ওয়ারিকানের এক দারুণ টার্নিং বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন। কিন্তু তার ১৬৫ বলে ৮৭ রানের ইনিংস ছিল ধৈর্য, মেধা ও পরিণতির এক নিদর্শন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা যদিও দিনজুড়ে অতিরিক্ত রান দেননি একটিও। কিন্তু কার্যকারিতার দিক থেকে ছিলেন অনুজ্জ্বল। শুরুতে তিন পেসার ১২ ওভারে মাত্র ২৯ রান দিলেও পরের দুই সেশন পুরোপুরি ছিল ভারতের নিয়ন্ত্রণে। দ্বিতীয় সেশনে তো কোনো উইকেটই তুলতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। বরং ভারত তুলেছে ১২৬ রান।

জোমেল ওয়ারিকান ও খারি পিয়ের কিছুটা টার্ন পেলেও ধারাবাহিকতা ছিল না কারো বোলিংয়ে। রাহুল ৩৮ রানে স্টাম্পড হওয়ার পর থেকেই ভারতের ব্যাটাররা আর পেছনে তাকাননি।

দিনের শেষ দিকে, যখন আলোর মাপকাঠি কমছিল, তখনও জয়সওয়াল ছিলেন ক্ষুধার্ত। শেষ দুই ওভারে তুললেন ১৭ রান। আর দিনের শেষে অপরাজিত থাকলেন ১৭৩ রানে। তার সঙ্গে ছিলেন অধিনায়ক শুভমান গিল।

আগামীকাল মাঠে নামলে ভারতের লক্ষ্য থাকবে স্পষ্ট- জয়সওয়ালকে ডাবল সেঞ্চুরিতে পৌঁছে দেওয়া। আর লিডটা এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া, যেখান থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আর হারানোর সুযোগ থাকবে না।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইন ড জ ক র ক ট জয়সওয় ল র স প রথম দ ন

এছাড়াও পড়ুন:

জয়সওয়ালের আক্ষেপের দিনে গিল কীর্তিতে ভারতের রান পাহাড়

যশস্বী জয়সওয়াল ডাবল সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু শনিবারের দিনটা নিশ্চিতভাবেই তিনি ভুলে যেতে চাইবে ন৷ ১৭৫ রানে তাকে রান আউট হতে হবে তা হয়তো কল্পনাও করেননি। সতীর্থ গিল তার ডাকে সাড়া না দেওয়ায় রান আউট হতে হয়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শনিবার দ্বিতীয় দিনে ভারতের অধিনায়ক গিল অবশ্য সেঞ্চুরি পেয়েছেন৷ তাতে দিল্লিতে রানের পাহাড় ছুঁয়েছে ভারত। ৫ উইকেটে তাদের রান ৫১৮। তাড়া করতে নেমে ৪ উইকেটে ১৪০ রান করে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ এখনো তারা ৩৭৮ রানে পিছিয়ে।

আরো পড়ুন:

টিভিতে আজকের খেলা

এবার বোলার মোসাদ্দেক জেতালেন ঢাকাকে 

২০ রানে দিন শুরু করে অনায়েস ব্যাটিংয়ে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলেন গিল। আর তাতে অন্যরকম এক রেকর্ডও করেছেন। ভারতের অধিনায়ক হিসেবে এক বর্ষপঞ্জিকা ৫ টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ড করেছেন। যেই রেকর্ডের একমাত্র মালিক আগে ছিলেন বিরাট কোহলি।  ২০১৭ ও ২০১৮ পরপর দুই বছর কোহলির ৫টি করে সেঞ্চুরি করেছিলেন। গিল এই বছর ৫টি সেঞ্চুরি করলেন অধিনায়ক হিসেবে। সব মিলিয়ে তার সেঞ্চুরি ১০টি।গিল ১২৯ ও আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি পাওয়া জুরেল ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনিং জুটি ভাঙেন রবীন্দ্র জাদেজা। নিজের দ্বিতীয় বলে জন ক্যাম্পবেলকে ফিরিয়ে দেন তিনি। এরপর তেজনারাইন চান্দারপল ও আলিক আথানেজ প্রতিরোধ গড়েন। এই জুটিও ভাঙেন জাদেজা।  ১ ছক্কা ও ৪টি চারে ৩৪ রান করা চান্দারপলকে ফিরিয়ে দেন। এরপর দ্রুত ফেরেন ১ ছক্কা ও ৫ চারে ৪১ রান করা আথানেজ। রোস্টন চেইসের টিকতে দেননি জাদেজা।
দিনের বাকি সময়ে পার করেন ইমলাচ ও শেই হোপ। ৩৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে করেন তারা। ৫ চারে ৩১ রান করেন হোপ। ২ চারে ১৪ রান ইমলাচ।

ঢাকা/ ইয়াসিন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জয়সওয়ালের আক্ষেপের দিনে গিল কীর্তিতে ভারতের রান পাহাড়
  • সেঞ্চুরিতে কোহলির পাশে গিল