“জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের নকশা ও নির্মাণে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতি ও ইতিহাসকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।’’ 

রবিবার (১২অক্টোবর) ঢাকার ওসমানী উদ্যানে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে এ সব কথা বলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের  উপদেষ্টা  আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

আরো পড়ুন:

টাঙ্গাইলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা: যুবক গ্রেপ্তার

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: দু-এক দিনের মধ্যে সরকারকে সুপারিশ দেবে কমিশন

তিনি বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে কোনো কাজ করতে গেলেই একটি মহল বাজেট নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলে। কিন্তু এ সব প্রশ্ন জনগণের টাকার প্রতি দায়বদ্ধতা নয়, বরং রাজনৈতিক অপচেষ্টা। ফ্যাসিবাদী শাসনামলে এসব প্রশ্ন কেউ তোলে নাই। তখন শুধু পরামর্শক ফি দিয়েই যে পরিমাণ ব্যয় হতো, তাতে আজ পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব।”

উপদেষ্টা আরো বলেন, “সরকার সকল অপচেষ্টাকে মোকাবিলা করেই আহত ও শহীদদের আত্মত্যাগের স্মৃতি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর। ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ সেই চেতনার বাস্তব প্রতিফলন।”

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) বাস্তবায়নে এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের অর্থায়নে নির্মিতব্য এই স্মৃতিস্তম্ভ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হচ্ছে ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে।

স্থাপত্য পরিকল্পনা অনুযায়ী, স্মৃতিস্তম্ভটি একটি বৃত্তাকার বেদির উপর নির্মিত হবে। এর দু’পাশে থাকবে চারটি করে মোট আটটি আয়তাকার পার্সিভড কলাম এবং মাঝখানে থাকবে একটি ৯০ ফুট উচ্চতার স্বতন্ত্র বৃত্তাকার কলাম। দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য থাকবে দুটি প্রবেশপথ এবং প্রতিটি প্রবেশপথে একটি করে এপিটাফ স্থাপন করা হবে। পুরো এলাকায় কৃষ্ণচূড়া জাতীয় বৃহদাকার ফুলের চারা রোপণ করা হবে, যা স্মৃতিস্তম্ভের আবহ ও সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলবে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক  শাহজাহান মিয়া বলেন, “যখন কেউ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়নি, তখন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার নির্দেশনায় ডিএসসিসি এই গৌরবময় কাজ হাতে নেয়।” তিনি জানান, স্মৃতিস্তম্ভের পাইলিং কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো.

রেজাউল মাকছুদ জাহেদীসহ স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ডিএসসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে উপদেষ্টা শহীদদের স্মরণে মোনাজাত পরিচালনা করেন এবং একটি ঔষধি বৃক্ষ রোপণ করেন।

ঢাকা/এএএম/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ল ই গণঅভ য ত থ ন গণঅভ য ত থ ন ই স ম ত স তম ভ স থ ন য় সরক র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা

জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।

দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপট

হাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’

এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)

আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।

দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকত

এই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯

আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।

আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।

দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ