চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ছাবেকুন নাহার চাকসু নির্বাচন নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত। নির্বাচনে তিনি সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন। প্রচারেও বেশ সরব ছিলেন।

ছাবেকুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন হচ্ছে। ইতিহাসের সাক্ষী হতে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। টিউশনির জমানো টাকা ভেঙে সীমিত পরিসরে প্রচার চালিয়েছি। হয়তো সব শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছাতে পারিনি, তবে চেষ্টা করেছি।’

শুধু ছাবেকুন নন, তাঁর মতো আরও শতাধিক শিক্ষার্থী স্বতন্ত্রভাবে এবার চাকসু নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। বড় ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে তাঁরাও পাল্লা দিয়ে প্রচার চালিয়েছেন। কেউ কেউ অনলাইন ও ডিজিটাল মাধ্যমকে প্রাধান্য দিয়েছেন। লিফলেট না ছেপে ডিজিটাল লিফলেট পাঠিয়েছেন ই–মেইল ও হোয়াটসঅ্যাপে। প্রচারণায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এমন উদ্ভাবনী কৌশল পছন্দ করছেন ভোটাররাও। ভোটাররা বলছেন, সাংগঠনিক শক্তি না থাকায় প্রচারে কিছুটা পিছিয়ে ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তবে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছেন শিক্ষার্থীদের কাছে নিজেদের লক্ষ্য তুলে ধরার।

চাকসু নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিন গতকাল সোমবার বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে দেখা গেল ক্যাম্পাসে প্রচারণা চালাতে। তাঁদেরই একজন জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগে স্নাতকোত্তরে পড়ছেন। জান্নাতুল বলেন, ‘২০১৯ সালে ফেসবুকে পেজ খুলে খাবারের ব্যবসা শুরু করেছিলাম। পাশাপাশি টিউশনিও করি। জমানো টাকা ভেঙে নির্বাচনে কিছু খরচ করেছি। তবে প্রচারপত্র বেশি ছাপাইনি। অনলাইনে প্রচার করে ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করেছি।’

ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন। তিনি বলেন, ‘স্বতন্ত্রভাবে যাঁরা লড়াই করছেন, তাঁদের জন্য এটা সত্যিই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। একার পক্ষে ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানো সহজ নয়। আমি চেষ্টা করেছি, যতটা সম্ভব বেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে। কাছের বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সহযোগিতায় প্রচারণা চালিয়েছি। একা হলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছি।’

সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মো.

মাহফুজুর রহমান অনলাইন মাধ্যমকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে জানালেন। তিনি বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালানো কঠিন। আমি অনলাইন মাধ্যমকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। বিভিন্ন হলে, কটেজে ও বাসায় গিয়ে প্রচার চালিয়েছি। শহরে যেতে চাইলেও একা হওয়ায় সম্ভব হয়নি। অর্থনৈতিক দিক থেকে বড় কোনো সমস্যা হয়নি। কারণ, আমার বাজেট সীমিত ছিল।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক পদপ্রার্থী তাজ উদ্দিন প্রচারে নতুনত্ব এনেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি লিফলেট ছাপিনি। ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রচারণা চালিয়েছি। ট্যাবের মাধ্যমে ডিজিটাল লিফলেট দেখিয়েছি। শিক্ষার্থীরা চাইলে সেটার ছবি তুলে নিয়েছে। এতে পরিবেশও রক্ষা হয়েছে। পরে আমি শিক্ষার্থীদের ই–মেইল নিয়ে তাদের কাছে ইশতেহার পাঠিয়েছি। বাসা থেকে আর্থিক সহায়তা না পাওয়ায় এমন অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করেছি।’

প্রায় ৩৫ বছর পর আগামীকাল বুধবার চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন হচ্ছে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট দিতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। ভোট গ্রহণ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এরই মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। শিক্ষার্থীরাও ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।

এবারের নির্বাচনে ৯০৮ জন প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে মোট ২৬টি পদে লড়ছেন ৪১৫ প্রার্থী। একই সঙ্গে ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলে প্রার্থী হয়েছেন ৪৯৩ জন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স বতন ত র প র র থ ল ফল ট করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

হোয়াইটওয়াশ এড়াতে বাংলাদেশকে করতে হবে ২৯৪ রান

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষটিতে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং টার্গেট ছুড়েছে আফগানিস্তান। আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তান টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৯৩ রান করেছে। জিততে বাংলাদেশকে করতে হবে ২৯৪ রান।

ব্যাট করতে নেমে শুরুটা অবশ্য ভালো হয়েছিল আফগানদের। উদ্বোধনী জুটিতে রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান তোলেন ৯৯ রান। এই রানে গুরবাজ ফিরেন ৫টি চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রান করে।

আরো পড়ুন:

পেনাল্টি গোলে প্রথমার্ধে পিছিয়ে বাংলাদেশ

শেষ হলো বাকৃবিতে কৃষিতে বালাই ব্যবস্থাপনা-বিষয়ক প্রশিক্ষণ

সেখান থেকে ইব্রাহিম ও সেদিকুল্লাহ অটল গড়েন ৭৪ রানের জুটি। ১৭৩ রানের মাথায় অটল ফিরেন ৩ চারে ২৯ রান করে। এরপর অবশ্য দ্রুত বেশ কয়েকটি উইকেট হারায় আফগানরা, নিয়মিত বিরতিতে। ১ উইকেটে ১৭৩ থেকে তাদের রান হয়ে যায় ৫ উইকেটে ১৮৮। অবশ্য একপ্রান্তে উইকেট পড়লেও অপর প্রান্ত আগলে খেলেন ইব্রাহিম। তিনি ১১১ বলে ৭টি চার ও ২ ছক্কায় ৯৫ রানের ইনিংস খেলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হন। মাত্র ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি। 

এরপর আজমত উল্লাহ ওমরজাইর ২০ ও মোহাম্মদ নবীর ৩৭ বলে ৪টি চার ও ৫ ছক্কায় খেলা ৬২ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে আফগানিস্তান ২৯৩ রানের বড় সংগ্রহ পায়।

বল হাতে বাংলাদেশের সাইফ হাসান ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ ৬ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। তানভীর ইসলাম ১০ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট। আর ৬ ওভারে ৫৭ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন হাসান মাহমুদ।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ