সিলেটে অনলাইনে বিক্রির পরও কীভাবে ট্রেনের টিকিটের কালোবাজারি হয়, তদন্তের আশ্বাস ডিসির
Published: 15th, October 2025 GMT
অনলাইনে বিক্রির পরও কীভাবে ট্রেনের টিকিটের কালোবাজারি হয়, সেটি তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। তিনি বলেন, অনলাইনে দুই মিনিটের মধ্যে ট্রেনের টিকিট শেষ, এটা তো কোনো সিস্টেম হতে পারে না। স্টেশনের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী এ ধরনের অনিয়মে জড়িত কি না—সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, যাঁরা টিকিট কালোবাজারি করছেন, তাঁরা অনলাইনে একাধিক অ্যাকাউন্ট খুলে মুহূর্তের মধ্যে অনেকগুলো টিকিট সংগ্রহ করছেন, এটি একধরনের কারসাজি। এমন অনৈতিক কার্যক্রম চলতে দেওয়া যায় না। এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সারওয়ার আলম আরও বলেন, ‘অনলাইনে বাংলাদেশের যেকোনো জায়গা থেকে ট্রেনের টিকিট কাটা যাচ্ছে। আজ সকালবেলার যে ট্রেনটা ছিল, সেটির টিকিট কিন্তু কাউন্টার থেকে মাত্র ১টি কাটা হয়েছে, আর অনলাইনে বিভিন্ন জায়গা থেকে কাটা হয়েছে প্রায় ২০০টি টিকিট। অনলাইনে টিকিট আসামাত্র দ্রুত শেষ হয়ে যাবে—সেটি তো কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। অথচ যাত্রীরা ঠিকমতো টিকিট পাচ্ছেন না। সমস্যাটা কোন জায়গায় সৃষ্টি হচ্ছে, সেটি আমরা বের করব।’
জেলা প্রশাসক জানান, যাত্রীসেবার মান বাড়াতে বিশেষ কোচ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে স্টেশনের নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে, যাতে যাত্রীসাধারণ ছিনতাই বা অন্য কোনো অপরাধের শিকার না হন।
রেলস্টেশন পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক স্টেশনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, যাত্রীসেবার মান, নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ সার্বিক কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি একাধিক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সমস্যা ও পরামর্শ শোনেন। পরে জেলা প্রশাসক রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যাত্রীসেবা আরও উন্নত করা, স্টেশনের শৃঙ্খলা বজায় রাখা, ভ্রাম্যমাণ দোকান ও অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং টিকিট বিক্রিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে নির্দেশনা দেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে রেললাইনে শুয়ে ‘ডাবল রেলপথ’ ও নতুন ট্রেন চালুর দাবি
সিলেটের রেললাইনে শুয়ে সিলেট-ঢাকা রেলপথকে ডাবল লাইন করার দাবি জানিয়েছেন একদল মানুষ। পাশাপাশি কর্মসূচি থেকে নতুন ট্রেন চালুরও দাবি জানানো হয়।
আজ বুধবার বেলা তিনটায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার রেলগেটে এ কর্মসূচির আয়োজন করে সিলেটের সামাজিক সংগঠন সিলেট কল্যাণ সংস্থা, সিলেট বিভাগ যুব কল্যাণ সংস্থা ও সিলেট প্রবাসী কল্যাণ সংস্থা। সেখানে নাগরিক সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে দুর্ভোগের কারণে এখন যাত্রীরা রেলপথে কিছুটা স্বস্তি খোঁজেন। রেলপথে যাতায়াতের জন্য চেষ্টা করেন। কিন্তু এ পথে ট্রেনের টিকিট এখন সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। রেলের টিকিট ১০ দিন আগেই বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু বিক্রি শুরুর দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যেই হাওয়া হয়ে যায়। রেলের টিকিট সিন্ডিকেট হচ্ছে। কালোবাজারে দিগুণ থেকে তিন–চার গুণ দামে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু কালোবাজারে টিকিট বিক্রির কথা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে। এতে যাত্রীদের প্রশ্ন থেকে যায়, রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষের কোনো যোগসাজশ ছাড়া টিকিট কেমন করে নিমিষেই হাওয়া হয়ে যায়।
সিলেটকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে পিছিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা। তাঁরা দ্রুত সিলেট-ঢাকা রেলপথকে ডাবল লাইন করা, সিলেট-ঢাকার রেলপথে নতুন ট্রেন সংযোজন, সিলেট-চট্টগ্রাম ও সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে বিরতিহীন নতুন ট্রেন চালু, ট্রেনের মানোন্নয়ন, সিলেট-ছাতক রুটে পুনরায় ট্রেন চালু, যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন ও সিলেটের সঙ্গে চলাচলকারী ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন যুক্ত করার দাবি জানান।
কর্মসূচিতে সিলেট কল্যাণ সংস্থার কার্যকরী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ এহছানুল হক বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে সিলেট-ঢাকা রেলসেবার উন্নতি এবং নতুন রেল যুক্ত করা না হলে রেলের ইঞ্জিনের সামনে শোয়া কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান।