শীতকাল এলেই অনেকের শরীরের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে গিঁটে ব্যথা বেড়ে যায়। এ সময় গরম সেক নিলে আরাম পাওয়া যায়, ব্যথাও কমে। আবার শীতে নাক বন্ধ বা মাথার ব্যথাতেও গরম সেক নিলে উপকার পাওয়া যায়। সাধারণত হট ওয়াটার ব্যাগ, স্টিম ইনহেলেশন বা গরম কাপড় দিয়ে আমরা গরম সেক দিই। কিছু সঠিক নিয়ম মেনে চললে এই সমস্যা থেকে আমরা যেমন উপকার পেতে পারি, তেমনি ত্বকের ক্ষতি রোধ করতে পারি। আসুন জেনে নিই।

তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ

হট ব্যাগ বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেটাই ব্যবহার করি না কেন, সেটা অনেক বেশি গরম হওয়া যাবে না। তাতে ত্বক পুড়ে যাওয়া বা ফোসকা পড়ার আশঙ্কা থাকে। যে তাপমাত্রায় শরীরে আরাম লাগবে, সেই তাপমাত্রা নিতে হবে। ব্যথাযুক্ত স্থানে দেওয়ার আগে হাত দিয়ে তাপমাত্রা অবশ্যই দেখে নিতে হবে।

সঠিক উপাদান ব্যবহার

হিট দেওয়ার জন্য ইলেকট্রনিক হট ওয়াটার ব্যাগ বা ডিভাইস ব্যবহার করা ভালো। ‘অটো শাট অফ সিস্টেম’ থাকলে বেশি গরম হবে না। হট ব্যাগ সরাসরি ত্বকে ব্যবহার না করে একটা পাতলা কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে মুড়িয়ে ব্যবহার করা ভালো।

কতক্ষণ দেওয়া যাবে

একবারে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের বেশি হিট দেওয়া উচিত নয়। তাতে চামড়ায় র‍্যাশ হতে পারে বা পুড়ে যেতে পারে। আবার বেশি সময় হিট দিলে পানিশূন্যতা হতে পারে।

আরও পড়ুনমাসিকের দিনগুলোতে তলপেটব্যথা, কী করবেন২৯ মে ২০২৪অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট থাকলে বুকে ও গলায় হিট দেওয়া যাবে না.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ