বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে রেডিসন হোটেল থেকে বের হলেন পরিচালক আকরাম খান, মঞ্জুর আলমকে নিয়ে। আকরামের কাছে জানা গেল, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন তারা। নিয়ম মেনে চলা ফারুকের হঠাৎ অনিয়ম করার কারণ কী? এর ব্যাখ্যাও দেন আকরাম, দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটারদের চুক্তির টাকা দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন বলে খেতে দেরি হয়েছে। এদিন ফ্র্যাঞ্চাইজি ভ্যালেন্টাইন গ্রুপের মালিক টাকা নিয়ে চট্টগ্রামে না এলে গতকাল রাজশাহীর ক্রিকেটারদের সিলেটের বিপক্ষে মাঠে নামানোই কঠিন হয়ে যেত। অনুশীলন বয়কটের মধ্য দিয়ে বিসিবির দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজশাহীর খেলোয়াড়রা চুক্তির ২৫ শতাংশ টাকা অন্তত আদায় করে নিতে পেরেছে। 

ম্যাচের আগে আংশিক সম্মানী পাওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে টনিকের মতো কাজ করেছে। গতকাল সিলেটের বিপক্ষে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে ৬৫ রানে জিতেছে তারা। সাত ম্যাচের তিনটিতে জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে রাজশাহী। সিলেটের পয়েন্ট ৪।

তবে সিলেটের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ের পরও সম্মানীর বাকি টাকা পাওয়ার দুশ্চিন্তা কাটেনি। দলটির বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলামের কণ্ঠে সে হতাশার সুর বেজেছে সংবাদ সম্মেলনে, ‘দেখেন, পেমেন্ট আমাদের অবশ্যই প্রয়োজন ছিল। আর দেখবেন আজ আমরা চারজন বিদেশি ক্রিকেটার নিয়ে খেলেছি, মানে পুরো শক্তি। আমাদের দল অনুযায়ী যতটুকু ভারসাম্য আনা যায়। সক্ষমতা অনুযায়ী আজ (গতকাল) আমরা মাঠে নামতে পেরেছি। আর সবাই নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরে ম্যাচ জিতেছি।’ 

মালিক পক্ষের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় টাকার অভাবে প্রথম থেকেই সমস্যায় ছিল রাজশাহী। জিম্বাবুয়ের রায়ান বার্ল ছাড়া মানসম্পন্ন বিদেশি ক্রিকেটার আনতে পারেনি। লিগের প্রথম ম্যাচে তিন বিদেশি খেলালেও পরের পাঁচ ম্যাচে খেলেছে দু’জন করে। গতকাল দলে যোগ দিয়েই মাঠে নেমেছেন দুজন– ওয়েস্ট ইন্ডিজের মার্ক ড্রেয়াল ও আফগানিস্তানের আফতাব আলম। সপ্তম ম্যাচে এসে চার বিদেশি নিয়ে খেলার সুযোগ পায়। যে দু’জন নতুন খেলেছে, তাদেরও ভালো মানের ক্রিকেটার বলতে পারবেন না। ক্রিকেটারদের চুক্তির টাকা দিতে দেরি করা, বিদেশি ক্রিকেটার আনতে না পারার মধ্যে আরও কিছু জিনিস চোখে পড়ার মতো। 

রাজশাহী দল থেকে এখনও কিট ব্যাগও দেওয়া হয়নি খেলোয়াড়দের। খুঁজতে গেলে আরও হাজারটা খুঁত পাওয়া যাবে। সানজামুলের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, অনেক ঘাটতি আর অনিশ্চয়তা নিয়ে ম্যাচ খেলা কতটা কঠিন। দলের মধ্যে কোনো প্রভাব ফেলে কিনা? উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা তো অবশ্যই পড়ে। তবে যখন আমরা মাঠে চলে আসি, আমাদের তো সবকিছু ভুলেই আসতে হয়। আমাদের কাজ তো পারফর্ম করা, মাঠে খেলা। চাপটা কমে গেছে আমরা ম্যাচের আগে পেমেন্টটা পেয়ে গেছি। এ জন্য আর আমাদের ওই চাপটা থাকেনি। তাই আমরা নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলার চেষ্টা করেছি।’

রাজশাহী জয়ে ফেরার ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করেছে। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৪ রান করেছে তারা। ব্যাটারদের সবাই ইমপ্যাক্ট ইনিংস খেলেছেন। এনামুল হক বিজয় ৩২ রান করেন ২২ বলে। রায়ার্ন বার্ল ৪১ রান করেন ২৭ বলে, এক চার ও চার চক্কায়। রুয়েল মিয়া তিনটি, নাহিদুল  ইসলাম ও নিহাদুজ্জামান দুটি করে উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে সিলেট অলআউট ১১৯ রানে। জাকির হাসান ২৮ বলে ৩৯, জাকের আলী ২০ বলে ৩১ রান করেন। সানজামুল ২৫ রানে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন। তাসকিন আহমেদ, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও আফতাব আলম দুটি করে উইকেট নেন। বোলারদের উইকেটপ্রাপ্তিতে তিন-তিনটি ক্যাচ নিয়ে প্রশংসিত হন বিজয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল র ন কর গতক ল উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ 

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। 

আগামী বছরের ১-২৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়া কাপ। ১২ দলের এই টুর্নামেন্টের ড্র সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ দুপুরে। যেখানে শক্তিশালী গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ। 

‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, চীন ও উত্তর কোরিয়া। জাঁকজমকপূর্ণ ড্রতে বাংলাদেশ ছিল চার নম্বর প্লটে। সঙ্গী ছিল ইরান ও ভারত। গ্রুপিং ড্রতে টুর্নামেন্টের একমাত্র অভিষিক্ত দল বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের তৃতীয় দল নির্বাচিত হয়। 

পরের রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের চতুর্থ দল হয় উজবেকিস্তান। এরপর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চীন বাংলাদেশের গ্রুপের দ্বিতীয় দল হয়। সবশেষ দল হিসেবে এই গ্রুপে যুক্ত হয় উত্তর কোরিয়া। যারা ২০১০ সালে প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল। 

ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও এএফসি অংশগ্রহণকারী সকল দেশের অধিনায়ক ও কোচকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথমবার নারী এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। গতকাল অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কোচ, খেলোয়াড়রা ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করে হারবার ব্রিজের সামনে। সেখানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া, তাইওয়ান,ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বার। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র‌্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র‌্যাঙ্কিং ৫৫)। র‌্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে বোঝার উপায় ছিল না। 

প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা।

এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ। 

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্বপ্নের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে জুয়েল, অর্থাভাবে অনিশ্চিত ভুটান যাত্রা
  • রোনালদোর অদম্য ক্ষুধা, দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জেতালেন আল-নাসরকে
  • ৪৭ দিন ক্যাম্পে থেকে ১০–১২ দিন অনুশীলন, হতাশ ক্রিকেটাররা
  • অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ