বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে ঢাকাভিত্তিক ক্রিকেট ক্লাবগুলোর মধ্যে দাবি-দাওয়া নিয়ে জটিলতা এখনও কাটেনি। দুই পক্ষ এখনও সমঝোতায় আসতে না পারায় সমস্যায় ভুগছেন ক্রিকেটাররা। ২০ জানুয়ারি প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা বয়কট করে ক্লাবগুলো। অনিশ্চয়তার মধ্যে এবার বিসিবিতে হাজির হন ক্রিকেটাররা। 

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে বোর্ডে আসেন প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের ২০ দলের অধিনায়ক। দুপুর নাগাদ তারা এসে হাজির হলেও অপেক্ষায় ছিলেন বিসিবি প্রেসিডেন্টের। নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুক্ষণ পর ফারুক আহমেদ হাজির হলে শুরু হয় রুদ্ধদ্বার বৈঠক। জানুয়ারির মধ্যে লিগ চালুর আশ্বাস দেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট। 

বৈঠক শেষে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ ক্লাবের অধিনায়ক আসাদুজ্জামান প্রিন্স শুনিয়েছেন ফারুকের সঙ্গে ফলপ্রসু বৈঠকের গল্প, “অনেকক্ষণ কথা হলো। উনি আমাদের একটা জিনিস নিশ্চিত করেছেন কোনো সন্দেহ নেই, লিগ হবেই। তোমরা লিগ পাবা। হয়তো তারিখ ১৯-২০ হচ্ছে। কিন্তু উনার কথা হচ্ছে এ মাসের মধ্যেই প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ হবে।”

আরো পড়ুন:

ক্লাবের আল্টিমেটাম: জরুরি বোর্ড মিটিং ডেকেছে বিসিবি 

বিসিবির বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে ক্লাবগুলো, লিগ বয়কট

বিসিবির গঠনতন্ত্র সংশোধনী নিয়ে ক্লাবের সঙ্গে জটিলতা নিরসনে আগামী শনিবার (২৫ জানুয়ারি) জরুরি বোর্ড মিটিং ডেকেছে বিসিবি। এই বৈঠকে মূলত ঠিক হবে গঠনতন্ত্র সংশোধনীর ভবিষ্যত। ক্লাবগুলোর দাবি অনুযায়ী প্রস্তাবনা বাতিল ও নাজমুল আবেদীন ফাহিমের নেতৃত্বে গড়া আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করলেই মাঠে ফিরবেন তারা। ফারুকও ক্রিকেটারদের কাছে শনিবার পর্যন্ত সময় নিয়েছেন এক হিসেবে।

“স্যার আমাদের ইনফর্ম করছেন, এজ আর্লি এজ পসিবল উনি করবেন। ২৫ তারিখ একটা মিটিং আছে উনাদের, ওটা বা ২৬ তারিখের ভেতর আমাদের একটা ডেট দিয়ে দিবেন, কবে নাগাদ হবে। প্রেসিডেন্ট আমাদের আশ্বস্ত করেছেন কোনো সমস্যা নেই, লিগ ঠিক সময়েই হবে।”

“উনি আমাদের যে হাস্যোজ্জ্বলভাবে নিয়েছেন, আমরা ২০ মিনিটের মতো উনার সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা খুব খুশি উনার রোমাঞ্চ দেখে। উনি আমাদের কথা দিয়েছেন, কোনো মিস হবে না ঢাকা লিগের। আশা করি তোমাদের এই লিগ অবশ্য অবশ্য মাঠে গড়াবে, তোমরা আমাদের ২টা দিন সময় দাও। মিটিংয়ের পর একটা ডেট আমাদের জানিয়ে দেবেন” -বলছিলেন আসাদুজ্জামান। 

২০ তারিখ থেকে লিগ চালু হবে ধরে ক্রিকেটাররা সকলে ঢাকায় চলে আসেন। কিন্তু যেদিন ট্রফি উন্মোচন হওয়ার কথা সেদিন থেকে শুরু হয় অচলাবস্থা। ক্লাব থেকে কাউন্সিলর ও পরিচালক পদ কমিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবনা তৈরির পরই শুরু হয় আন্দোলন। প্রথমে তিন দিনের আল্টিমেটাম, পরবর্তীতে লিগ বয়কটে যায় ক্লাবগুলো।

আসাদুজ্জামান বলেন, “এই মুহূর্তে প্রত্যেকটা ক্লাব এবং বোর্ডের মধ্যে কোনো একটা সমস্যা চলছিল, বিশেষ করে ক্লাবরাও চাচ্ছিল খেলবে না বা কোনো একটা আল্টিমেটাম বোর্ডকে দিয়েছিল। এটা নিয়ে হয়তোবা কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব উনাদের ভেতর চলছিল। যেহেতু আমাদের লিগ, আমাদের সংসার চলাতে হয়, ৭-৯ মাস অপেক্ষা করি শুধু প্রথম বিভাগ ক্রিকেটের জন্য। এই পারিশ্রমিক দিয়ে আমরা আমাদের সংসার চালাই। যে কারণে ২০ দলের সিনিয়র ক্রিকেটার আমরা এ মুহূর্তে আপানাদের সামনে। কারণ একটাই, আমাদের লিগ কবে প্রেসিডেন্ট শুরু করবেন, সেটা জানার জন্য।” 

ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম ব ভ গ ক র ক ট

এছাড়াও পড়ুন:

গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও

রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।

গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।

পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো। 

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।” 

তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।” 

আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”

রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”

গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।” 

উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।

ঢাকা/আমিরুল/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জিএম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা
  • সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ সেই পাকিস্তান, কী করবে ভারত
  • ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
  • মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা
  • গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও