মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোকে লক্ষ্য করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত নতুন এক নির্দেশনা আরেকটি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ভিত্তি তৈরি করছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোমবার প্রকাশিত এই নির্বাহী আদেশটি বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা মুসলিম ধর্মাবলম্বী বিদেশি নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে কথা বলা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও ব্যবহার করা হতে পারে। খবর- আলজাজিরা

আন্তর্জাতিক শরণার্থী সহায়তা প্রকল্পের (আইআরএপি) আইনজীবী দীপা আলাগেনের মতে, ২০১৭ সালে নিজের প্রথম মেয়াদে কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ওপর যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প, নতুন এই আদেশটি তার চেয়েও বড় এবং ক্ষতিকর হতে পারে। নতুন এ নির্দেশনার সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে, এটির মাধ্যমে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের লোকদের দেশটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা লোকজনকে দেশটি থেকে বের করে দেওয়ার ভিত্তি হিসেবেও ব্যবহার করা হতে পারে এটি।

নতুন আদেশে যাচাই-বাছাইয়ের তথ্য ঘাটতি থাকা দেশগুলো থেকে নাগরিকদের প্রবেশের ওপর আংশিক বা সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ জারি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের। সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলে এসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা নাগরিকদের সংখ্যা চিহ্নিত করা এবং তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে ‘প্রাসঙ্গিক’ তথ্য সংগ্রহের আহ্বানও জানানো হয়েছে নতুন ডিক্রিতে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থাগুলোর শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীরা এই আদেশকে ভীতিকর আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘বিদেশি সন্ত্রাসী এবং অন্যান্য জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তা হুমকি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করা’ নামে এই ডিক্রি ২০১৭ সালের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার চেয়েও বেশি ক্ষতি করতে পারে। 

বিশেষজ্ঞরা বলেন, নতুন এই আদেশের অস্পষ্ট ভাষা ‘ভীতিকর’। কারণ, এটি দেশটির প্রশাসনিক সংস্থাগুলোকে তাদের লক্ষ্যবস্তু করা লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করার বিস্তৃত কর্তৃত্ব দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যান্য অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলোও এই আদেশটি প্রকাশের পর থেকে নিন্দা করেছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কিউআর কোডসহ অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ

আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইন কেন্দ্রীয়ভাবে যাচাইয়ে যথাযথ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

‘বংশাল থেকে জনসন, সানসিল্কসহ দামি ব্র্যান্ডের নকল পণ্য জব্দ’ শিরোনামে ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ‘ঢাকার চারপাশে প্রকাশ্যেই বানানো হচ্ছে বিদেশি পণ্য’ শিরোনামে ২ এপ্রিল আরেকটি দৈনিকের অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এ দুটিসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়াসহ ১০ আইনজীবী ২০ এপ্রিল রিটটি করেন।

রিটে আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইনে কেন্দ্রীয় যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তার অধিকার সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব হারানো রোধে অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ডেটাবেজ তৈরিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অন্যতম রিট আবেদনকারী আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া, রাগীব কবির ও আরফান সুলতানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান ও শফিকুর রহমান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

রুলে গণমাধ্যমে আসা বিভিন্ন প্রতিবেদনের আলোকে আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইনে কেন্দ্রীয় যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তার অধিকার সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব হারোনো রোধে অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ডেটাবেজ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইনে কেন্দ্রীয় যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তার অধিকার সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব হারোনো প্রতিরোধে অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ডেটাবেজ তৈরি করতে কমিটি গঠন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

বাণিজ্যসচিব, অর্থসচিব, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের প্রধান নিয়ন্ত্রক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, বিএসটিআই ও ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক—এই সাত বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

হাইকোর্ট সাত বিবাদীকে ওই কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বাজারে প্রচুর অনুমোদিত ও নকল পণ্য বিক্রি হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি; বিশেষত শিশুস্বাস্থ্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এতে করে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

রিট আবেদনকারী আরও বলেন, এসব কারণে কিউআর কোডসহ কেন্দ্রীয় অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা চালু এবং অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় ডেটাবেজ তৈরির নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

রিট আবেদনকারী আইনজীবীরা হলেন—মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া, মো. রোকনুজ্জামান, রাগিব কবির, আবু শাহেদ, রেহেমিন চৌধুরী, আরফান সুলতানা, মো. সাইফুল ইসলাম, হাসান ইসহাক ভূঁইয়া, মো. আরিফ চৌধুরী ও উম্মে আইমান জেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের
  • শ্রম আদালতে ঝুলছে ২২ হাজার মামলা
  • মাওলানা রইস হত্যার বিচার দাবি জানিয়ে ১০২ নাগরিকের বিবৃতি
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও কিশোর গ্যাংয়ের মামলায় আসামিপক্ষে সরকারি আইনজীবীদের না দাঁড়ানোর নির্দেশ
  • চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, রোববার ফের শুনানি
  • চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন, শুনানি হতে পারে রোববার
  • আনিসুল-সালমান-মামুন রিমান্ডে, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আতিক
  • টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন
  • আবারও নিরপরাধ দাবি হিটু শেখের, ভিন্ন কথা সাক্ষীদের
  • কিউআর কোডসহ অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ