ম্যানসিটিকে বিপদে রেখে ক্লাব ছাড়লেন ওয়াকার
Published: 25th, January 2025 GMT
সময়টা ২০১৭ সালের ১৪ জুলাই। টটেনহ্যাম হটস্পার থেকে ইংলিশ রাইট-ব্যাক কাইল ওয়াকার ম্যানচেস্টার সিটি ছেড়ে রেকর্ড ৫০ মিলিয়ন পাউন্ডে যোগ দিলেন ম্যানচেস্টার সিটিতে। একজন ২৬ বছর বয়সী ডিফেন্ডারকে বিক্রি করে এরবেশি আর কী আশা করা যায়? তবে হলো ঠিক উল্টো! স্পার্স ফ্যানদের অসম্ভব মন খারাপ। দলটির সভাপতি ড্যানিয়েল লেভিকে দুয়ো দিতে ছাড়ল না নর্থ লন্ডনের ক্লাবটির সমর্থকরা।
একজন ফুটবলারের ক্লাব পর্যায়ের ক্যারিয়ারে যত শিরোপা জেতা সম্ভব, ম্যানসিটিতে যোগ দিয়ে সবই অর্জন করে ফেলেছেন ওয়াকার। এরপর সিদ্ধান্ত নিলেন নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার। সেই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি, ২০২৫) এই ৩৪ বছর বয়েসী রাইট-ব্যাক চলতি মৌসুমের বাকি সময়ে জন্য এসি মিলানে নাম লেখালেন। আপাতত ধারে খেলবেন, আসছে গ্রীষ্মে তার চুক্তি পাকাপাকি হওয়ার কথা।
আরো পড়ুন:
৭২.
চ্যাম্পিয়নস লিগে বুধবার রাতের ম্যাচের ফলাফল
এমন এক সময়ে ওয়াকার ম্যানসিটি ছাড়ছেন যখন ক্লাবটি শেষ ৯ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অবস্থা অতিক্রম করছে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে টেবিলের পঞ্চম স্থানে আছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ঘরোয়া লিগে তাও সেরা চারের লড়াইয়ে আছে গার্দিওলার দল। তবে ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের আসর চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটা হারলে সেকেন্ড রাউন্ডে উঠতে ব্যর্থ হবে সিটি।
ওয়াকার স্পার্স ছেড়ে ম্যানসিটির জার্সি গায়ে জড়ানোর পর কেটে গিয়েছি ৮টি বছর। এই ডিফেন্ডার সিটির জার্সিতে ৩১৯ ম্যাচ খেলে করেছেন ৬ গোল এবং করিইয়েছেন ২৩টি। ক্যারিয়ারের অন্তিম লগ্নে থালেও এখনো বদলায়নি তার কার্যকরীতা। এজন্যই ওয়াকারকে মিস করবেন কি না, এমন প্রশ্নে গার্দিওলার ডুবে যান হতাশায়। ঠিক ৮ বছর আগে স্পার্স ফ্যানরা যেভাবে কষ্টে ডুবেছিল।
মিলানে যোগ দিয়ে সিটির প্রতি ইনস্টাগ্রামে বিদায়ী বার্তাও দিয়েছেন ওয়াকার, “অনেককেই ধন্যবাদ। কোচিং স্টাফ থেকে শুরু করে ক্লাবের সঙ্গে সংস্লিষ্ট সবাইকে। আপনাদের কারণে প্রতিটি দিন উপভোগ্য হয়েছে, নিজেদের সেরাটা দিতে পেরেছি। সতীর্থদের বলছি, সিটির দরজা দিয়ে প্রথম পা রাখার মুহূর্ত থেকেই নিজের ঘর মনে হয়েছে। দারুণ সব স্মৃতি এবং যেসব সাফল্য আমরা ভাগ করে নিয়েছি, সেসবের জন্য ধন্যবাদ। তোমরা আমার বন্ধু, কিন্তু সারা জীবনের পারিবারিক সদস্যও। পেপ গার্দিওলাকে বলছি, আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য ধন্যবাদ এবং ২০১৭ সালে আমাকে নিয়ে আসতে বহু কাঠখড় পোড়ানোর জন্যও। আমরা একসঙ্গে ১৭টি ট্রফি জিতেছি এবং আপনার নির্দেশনাতেই আমি খেলোয়াড় হয়ে উঠতে পেরেছি। চিরজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।”
ইংল্যান্ডের জার্সিতে ৯৩ ম্যাচ খেলা এই রাইট-ব্যাক মিলানে সতীর্থ হিসেবে পাচ্ছেন স্বদেশি ফিকায়ো তোমোরি, রুবেন লফটাস-চিক ও ট্যামি আব্রাহামকে। ৭ বারের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী মিলানে যোগ দিয়ে ওয়াকার জানান, “আমি এসি ক্লাবে যোগ দিতে পেরে গর্বিত। এটা এমন একটি ক্লাব যার অনেক উজ্জ্বল ইতিহাস আছে। মিলানের জার্সি পরা সম্মানের বিষয়।”
ঢাকা/নাভিদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।