আমি চুপ থাকার মেয়ে নই, অন্যায় হলে কথা বলবই: পরীমণি
Published: 26th, January 2025 GMT
পরীমণি। চিত্রনায়িকা। গত ২৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলে কসমেকিট ব্যান্ড‘হারল্যান স্টোর’-এর শোরুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল । কিন্তু স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে স্থগিত করা হয়েছে অনুষ্ঠানটি। বিষয়টির সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন তিনি। পরের দিন বোটক্লাব কাণ্ডের মামলায় তাকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। ফলে পরীমণির পক্ষে সরব হয়ে উঠে মিডিয়ার মানুষরা। এ বিষয়টি নিয়েই কথা হয় পরীমণির সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- অনিন্দ্য মামুন
কেমন আছেন?
খুব একটা ভালো না। ঠান্ডা-জ্বর ও টন্সিলের ব্যাথায় ভোগছি। তবে আলহামদুলিল্লাহ আমার দুই বাচ্চা ওরা দিব্যি সুস্থ আছে। ওরা সুস্থ আছে দেখে নিজের অসুখকে অসুখ মনে হচ্ছে না।
টাঙ্গাইলে একটি কোম্পানির শোরুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। বাধার মুখে অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। ঘটনাটি আসলে কি ঘটেছিল?
আপনারা জানেন আমি অথেনটিক রিটেইল কসমেটিকস শপ ‘হারল্যান স্টোর’ এর ব্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে আছি। প্রতিষ্ঠানটি আমার পরিবারের মত হয়ে গিয়েছে। নানা সময়ে নানা আয়োজনে এই প্রতিষ্ঠানটির পণ্যের প্রচারণায় অংশ নিয়েছি। দেশব্যাপী প্রতিষ্ঠানটির শো রুম উদ্বোধন করতে নানা সময়ে আর্টিস্টরা যান। তার ধারাবাহিকতায় গত ২৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় ‘হারল্যান স্টোর’ উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা আমার। কয়েকদিন ধরে প্রচার-প্রচারণাও চালানো হয়েছে। আমার ফেসবুক পেজেও প্রচারণা করেছি। কিন্তু হুট করেই যাওয়ার আগের দিন জানানো হয় স্থানীয়দের প্রবল প্রতিরোধের মুখে স্থগিত করা হয়েছে অনুষ্ঠানটি। খবরটি শুনে বেশ খারাপ লাগে। অসহায় লাগে। এমন কেনো হবে? আমার দেশে আমি যেনো নিরাপদে নিজের কাজটা করতে যেতে পারব না।
সেই রাগ আর অভিমান নিয়েই তো ফেসবুকে লিখলেন?
হ্যাঁ, আমার মনে হলো বিষয়টি সামনে আনা দরকার। না হলে ধীরে ধীরে এটা আরও প্রকটা আকার ধারণ করতে পারে। এখনওই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। হয়তো আমার জায়গায় অন্যকেউ হলে চুপ থাকতেন। কিন্তু আমি তো চুপ থাকতে পারি না। আমি চুপ থাকার মেয়ে না। যা সত্যি তা তো বলতেই হবে। এটা তো আমার দেশ, আমার ইন্ডাষ্ট্রি। নিজের দেশে কেনো নিরাপদে কাজ করতে পারব না।
যে প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন সেই প্রতিষ্ঠান কি এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নিচ্ছে?
সেটা আমি জানি না। প্রতিষ্ঠান যেটা ভালো মনে করে সেটা তার আনুষ্ঠানিকভাবে করবে। কিন্তু এটা নিয়ে প্রতিবাদ করা তো আমারও দায়িত্ব। সেই দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকেই আমি কথা বলেছি। ফেসবুকে লিখেছি।
ফেসুবকে লেখালেখির পরের দিনই তো পুরোনো মামলায় আপনার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এলো। এ বিষয়ে মন্তব্য কী?
প্রতিবাদ করার জন্য যদি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় তাহলে কষ্টকর। মানুষ কথা বলা ছাড়া কিভাবে থাকবে। যে চুপ থাকতে চায় সে চুপ থাকুক। কিন্তু যে বলতে চায় তাকে তো বলতে দিতে হবে। তবে এটি যেহেতু আদালতের বিষয়, আইনীপ্রক্রিয়া আমিও আইনিপ্রক্রিয়াতেই হাটব। বিষয়টি আমার আইনজীবীই দেখছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।