পরীমণি। চিত্রনায়িকা। গত ২৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলে কসমেকিট ব্যান্ড‘হারল্যান স্টোর’-এর শোরুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল ।  কিন্তু স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে স্থগিত করা হয়েছে অনুষ্ঠানটি। বিষয়টির সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন তিনি। পরের দিন বোটক্লাব কাণ্ডের মামলায় তাকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। ফলে পরীমণির পক্ষে সরব হয়ে উঠে মিডিয়ার মানুষরা। এ বিষয়টি নিয়েই কথা হয় পরীমণির সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- অনিন্দ্য মামুন

কেমন আছেন?
খুব একটা ভালো না। ঠান্ডা-জ্বর ও টন্সিলের ব্যাথায় ভোগছি।  তবে আলহামদুলিল্লাহ আমার দুই বাচ্চা ওরা দিব্যি সুস্থ আছে। ওরা সুস্থ আছে দেখে নিজের অসুখকে অসুখ মনে হচ্ছে না।

টাঙ্গাইলে একটি কোম্পানির শোরুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। বাধার মুখে অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। ঘটনাটি আসলে কি ঘটেছিল?

আপনারা জানেন আমি অথেনটিক রিটেইল কসমেটিকস শপ ‘হারল্যান স্টোর’ এর ব্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে আছি। প্রতিষ্ঠানটি আমার পরিবারের মত হয়ে গিয়েছে। নানা সময়ে নানা আয়োজনে এই প্রতিষ্ঠানটির পণ্যের প্রচারণায় অংশ নিয়েছি। দেশব্যাপী প্রতিষ্ঠানটির শো রুম উদ্বোধন করতে নানা সময়ে আর্টিস্টরা যান। তার ধারাবাহিকতায় গত ২৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় ‘হারল্যান স্টোর’ উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা আমার। কয়েকদিন ধরে প্রচার-প্রচারণাও চালানো হয়েছে। আমার ফেসবুক পেজেও প্রচারণা করেছি। কিন্তু হুট করেই যাওয়ার আগের দিন জানানো হয় স্থানীয়দের প্রবল প্রতিরোধের মুখে স্থগিত করা হয়েছে অনুষ্ঠানটি। খবরটি শুনে বেশ খারাপ লাগে। অসহায় লাগে। এমন কেনো হবে? আমার দেশে আমি যেনো নিরাপদে নিজের কাজটা করতে যেতে পারব না।

সেই রাগ আর অভিমান নিয়েই তো ফেসবুকে লিখলেন?

হ্যাঁ, আমার মনে হলো বিষয়টি সামনে আনা দরকার। না হলে ধীরে ধীরে এটা আরও প্রকটা আকার ধারণ করতে পারে। এখনওই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। হয়তো আমার জায়গায় অন্যকেউ হলে চুপ থাকতেন। কিন্তু আমি তো চুপ থাকতে পারি না। আমি চুপ থাকার মেয়ে না। যা সত্যি তা তো বলতেই হবে। এটা তো আমার দেশ, আমার ইন্ডাষ্ট্রি।  নিজের দেশে কেনো নিরাপদে কাজ করতে পারব না। 

যে প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন সেই প্রতিষ্ঠান কি এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নিচ্ছে?

সেটা আমি জানি না। প্রতিষ্ঠান যেটা ভালো মনে করে সেটা তার আনুষ্ঠানিকভাবে করবে। কিন্তু এটা নিয়ে প্রতিবাদ করা তো আমারও দায়িত্ব। সেই দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকেই আমি কথা বলেছি। ফেসবুকে লিখেছি। 

ফেসুবকে লেখালেখির পরের দিনই তো পুরোনো মামলায় আপনার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা  এলো। এ বিষয়ে মন্তব্য কী?

প্রতিবাদ করার জন্য যদি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় তাহলে কষ্টকর। মানুষ কথা বলা ছাড়া কিভাবে থাকবে। যে চুপ থাকতে চায় সে চুপ থাকুক। কিন্তু যে বলতে চায় তাকে তো বলতে দিতে হবে। তবে এটি যেহেতু আদালতের বিষয়, আইনীপ্রক্রিয়া আমিও আইনিপ্রক্রিয়াতেই হাটব। বিষয়টি আমার  আইনজীবীই দেখছে। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ