হোটেলবন্দী বার্ল-হারিসরা, পাচ্ছেন না দেশে ফেরার টিকিট
Published: 2nd, February 2025 GMT
দুর্বার রাজশাহী বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গেছে গতকাল। খুলনা টাইগার্স শেষ চারে জায়গা করে নেওয়ায় তাদের সফর আটকে গেছে রাউন্ড রবিন লিগেই।
পারিশ্রমিক জটিলতা নিয়ে দলটি এমনিতেই ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এবার তারা আবারো টক অব দ্য টাউন। বিদেশী ক্রিকেটারদের দেশে ফেরার টিকিট দিতে পারছে না ফ্রাঞ্চাইজিটি। ফলে সকাল থেকেই হোটেলেবন্দী হয়ে আছেন জিম্বাবুয়ের রায়ান বার্ল, পাকিস্তানের মোহাম্মদ হারিস, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মার্ক ডেয়াল ও মিগুয়েল কামিন্স এবং আফগানিস্তানের আফতাব আলম।
বার্ল ও হারিস প্রতিযোগিতার শুরু থেকে রাজশাহীর হয়ে খেলেছেন। আফতাব, ডেয়াল ও মিগুয়েল যোগ দিয়েছেন পরে। তারা কেউ কেউ ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক পেয়েছেন। কেউ কোনো অর্থও পাননি। প্রত্যেকেরই ১১ দিনের দৈনিক ভাতা বকেয়া। প্রত্যেককেই আজ রাজশাহীর টিম হোটেল শেরাটনের লবিতে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। জানা গেছে, হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে রাজশাহী। তাদের ম্যানেজার মেহরাব হোসেন অপি, অপারেশন ইনচার্জ জায়েদ আহমেদ এবং মিডিয়া ম্যানেজার ইশতিয়াক পারভেজ কেউই ফোন ধরছেন না।
আরো পড়ুন:
আলো ছড়িয়ে উজ্জ্বল তারা
বিপিএলে নানা অনিয়ম, আসিফ মাহমুদের কড়া হুঁশিয়ারি
শঙ্কার কারণ দুইটি, হোটেলের বিল বকেয়া এবং দেশে ফেরার টিকিট। খেলোয়াড়রা চাইলেই হোটেল থেকে বেরিয়ে যেতে পারবেন না। এক্ষেত্রে ফ্রাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে কাউকে উপস্থিত থাকতে হবে। দেশে ফেরার রিটার্ন টিকিট না পেলে কিভাবে ফিরবেন সেটা নিয়েই উদ্বেগ।
শোনা গেছে, রাজশাহীর মালিক শফিকুর রহমান আজ রাত ৮টা পর্যন্ত সময় চেয়েছেন। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে টিকিট না পেলে পরবর্তী করণীয় কি তা বুঝতে পারছেন না বার্ল-হারিসরা। হারিস ও আফতাব নিজ নিজ দেশের বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। সংশ্লিষ্ট বোর্ড টিকিট কেটে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে কোচ হিসেবে তারা এনেছিল পাকিস্তানের এজাজ আহমেদ ও রাও ইফতেখারকে। তাদেরও পারিশ্রমিক বকেয়া রয়েছে। দেয়া হয়নি দৈনিক ভাতা।
বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাইলে বিসিবির ডিরেক্টর মনজুর আলম রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘‘পারিবারিক কারণে আমি ঢাকার বাইরে। বিষয়গুলো নিয়ে আমার কোনো ধারনা নেই। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল এটা পরিস্কার করতে পারবে।’’
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন ফাহিম। তিনি জানিয়েছেন, খেলোয়াড়দের থেকে আনুষ্ঠানিক কিছু তারা এখনো জানতে পারেননি। তাই কোনো সিদ্ধান্তও নিতে পারছেন না।
ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।