কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় প্রাচীন একটি বৌদ্ধবিহারে চুরির ঘটনা ঘটেছে। বৌদ্ধবিহার কর্তৃপক্ষের দাবি, চোরেরা গেটের তালা ভেঙে ১০ ইঞ্চি উচ্চতার শতবর্ষী অষ্টধাতুর একটি মূর্তি, পাঁচটি তামার মূর্তি এবং আইপিএসের দুটি ব্যাটারি চুরি করে নিয়ে গেছে। অষ্টধাতুর মূর্তিটি বেশ মূল্যবান।

গত মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের আলোকদিয়া মধ্যমপাড়ার ধর্মদূত বৌদ্ধবিহারে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বুধবার বিকেলে লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

শাহ আলম ও পুলিশ সদস্যরা বিহারটি পরিদর্শন করেন। চুরির ঘটনায় ধর্মদূত বৌদ্ধবিহার পরিচালনা কমিটির সদস্য মিন্টু সিংহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লালমাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

মিন্টু সিংহ বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার পরে চোরেরা পিকআপ ভ্যানে করে এসে বিহারের গেটের তালা ভেঙে একটি শতবর্ষী অষ্টধাতু মূর্তি, পাঁচটি তামার মূর্তি ও আইপিএসের দুটি ব্যাটারি নিয়ে গেছে। অন্য আরেকটি মূর্তি বিহারের মাঠে ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে। হয়তো চোরেরা নিয়ে যাওয়ার সময় সেটি পড়ে ভেঙে গেছে।

চুরি যাওয়া বিহারের পাশেই অবস্থিত আলোকদিয়া শাক্যমুনি প্যাগোডার দায়িত্বরত বৌদ্ধভিক্ষু প্রজ্ঞাদীপ্তি বলেন, আলোকদিয়া মধ্যমপাড়া এলাকায় অবস্থিত ধর্মদূত বৌদ্ধবিহারটি প্রায় শতবছরের পুরোনো। তবে সেখানে রাতে কোনো ভিক্ষু অবস্থান করেন না, শুধু দিনে ধর্মীয় কার্যক্রম চলে। ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিরাপত্তা ও নজরদারি বাড়াতে তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। যেসব মূর্তি চুরি হয়েছে, সেগুলো শতবর্ষী এবং অনেক মূল্যবান। তাঁদের চাওয়া প্রশাসন চোরদের শনাক্ত করে মূর্তিগুলো দ্রুত উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেবে।

লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, বিহারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েই বিহারটি পরিদর্শন করেছেন। রাতে ওই বিহারে কেউ থাকেন না। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরাও ছিল না। এই সুযোগে বিহারের গেটের তালা ভেঙে চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া মূর্তি উদ্ধার এবং চোরদের শনাক্ত করতে আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

আসামি শতবর্ষী ইদ্রিস শেখের আদালতে হাজিরা ও প্রিজন ভ্যানে যাত্রা

তখন সময় দুপুর ১২টা ৩ মিনিট। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের তৃতীয় তলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১–এর এজলাস কক্ষ থেকে একজন বৃদ্ধ ব্যক্তিকে একজন পুলিশ সদস্য হাত ধরে সিঁড়ির কাছে নিয়ে যেতে থাকেন। সেই বৃদ্ধের ডান হাতে একখানা লাঠি। লাঠির ওপর ভর দিয়ে তিনি সিঁড়ির কাছে যেতে থাকেন।

সিঁড়ির কাছে যাওয়ার পর তিনি কোনোভাবেই সেই সিঁড়ি বেয়ে তৃতীয় তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় আসতে পারছিলেন না। দুজন পুলিশ কনস্টেবল অশীতিপর এই বৃদ্ধের দুই বাহু ধরে রাখেন।

পরে ইদ্রিস শেখের দুই বাহু ধরে দ্বিতীয় তলায় আনা হয়। তখন ইদ্রিস শেখ হাঁপাচ্ছিলেন। পরে দুজন কনস্টেবল আবার ইদ্রিস শেখের দুই বহু ধরে রাখেন। এরপর খুব সাবধানে দুই তলার সিঁড়ি দিয়ে ইদ্রিস শেখ লাঠির ওপর ভর করে নিচতলায় নামেন। তৃতীয় তলা থেকে নিচতলায় নামতে ইদ্রিস শেখের সময় লেগেছে পাঁচ থেকে সাত মিনিট। ইদ্রিস শেখকে যখন নিচতলার সিঁড়ি দিয়ে হাজতখানার সামনে আনা হয়, তখন তাঁর ছেলে বাবুল শেখ কেঁদে ফেলেন।

বাবুল শেখ তখন চিৎকার দিয়ে বলে ওঠেন, ‘আমার বাবার বয়স এখন ১২০ বছর। এই ১২০ বছর বয়সেও আমার বাবাকে জেলের ঘানি টানতে হবে।’

প্রিজন ভ্যানে ইদ্রিস শেখ। মঙ্গলবার ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শতবর্ষী ‘হাতির বাংলো’
  • আসামি শতবর্ষী ইদ্রিস শেখের আদালতে হাজিরা ও প্রিজন ভ্যানে যাত্রা