Samakal:
2025-05-01@04:44:09 GMT

বিআইজেএফ নতুন কমিটির অভিষেক

Published: 6th, February 2025 GMT

বিআইজেএফ নতুন কমিটির অভিষেক

নবনির্বাচিত (২০২৪-২৬) মেয়াদের বিআইজেএফ কার্যনির্বাহী কমিটিকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেন দেশের তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠন ও ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ নেতার।

সংগঠনের সদস্য আর গুণী তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী ব্যক্তিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মিলনমেলায় রূপ নেয় নতুন কমিটির অভিষেক আয়োজন। রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত রাওয়া ক্লাবের ঈগল হলে বুধবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় অভিষেক অনুষ্ঠান।

সূচনা পর্বে কোরআন তিলওয়াত শেষে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে নীরবতা পালন করা হয়। তারপর মঞ্চে একে একে ফুলেল শুভেচ্ছা আর দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিয়ে করণীয় বিষয়ে বক্তব্য দেন অতিথিরা। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সংগঠনের ২২ বছরের অতীত স্মৃতিচারণ করে ভবিষ্যতের পথ চলায় অনুপ্রেরণা দেন বক্তারা।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নেতৃত্বে থাকা সংগঠন বিসিএস, আইএসপিএবি, বাক্কো, ইক্যাব, বেসিস, বিডিকম অনলাইন, সার্কেল নেটওয়ার্ক, প্রিমিয়াম কানেক্টটিভি লিমিটেড, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন, স্মার্টফোন ব্র্যান্ড ও বেশ কিছু তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

অভিষেকে নতুন নেতৃত্বের ওপর আস্থা রেখে পরামর্শ ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান ও ডিএনএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাফেল কবীর, টেকনো হেভেনের প্রধান নির্বাহী হাবিবুল্লাহ এন করিম, ড্যাফোডিল পরিবারের চেয়ারম্যান সবুর খান, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সাবেক সভাপতি শাহিদ-উল-মুনীর, আইআইজিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) সভাপতি তানভীর ইব্রাহীম, সাবেক সভাপতি (বেসিস) রাসেল টি আহমেদ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট খাতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

নির্বাচিত নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি হিটলার এ.

হালিম, সহ-সভাপতি ভূঁইয়া ইনাম লেনিন, সাধারণ সম্পাদক সাব্বিন হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তুষার, কোষাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম শান্ত, প্রকাশনা ও গবেষণা সম্পাদক মাহবুবুর রহমান এবং নির্বাহী সদস্য নাজনীন নাহার ও এনামুল করিম ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন।

অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয় বিআইজেএফ অভিষেক মঞ্চ। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ সব সংগঠন ফুল দিয়ে নতুন কমিটিকে শুভেচ্ছা জানায়। ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বাংলালিংকের হেড অব কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান, গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশন্স শারফুদ্দিন আহমেদ, বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আলিম, ওয়ালটন ডিজিটেকের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রবিউল ইসলাম মিলটন, গ্রামীণফোনের এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান আংকিত সুরেকা, মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মনিরুল বাসার, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, ইনফো পাওয়ারের এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট জুবাইয়া ঝুমা, অনর মোবাইলের সিনিয়র মার্কেটিং ম্যানেজার ফারুক রহমান, বিকাশ-এর জেনারেল ম্যানেজার রুখসানা মিলি, ব্যাকপেজ পিআরের অ্যাসোসিয়েট অ্যাকাউন্ট ডিরেক্টর আজম চৌধুরী, গিগাবাইট ব্র্যান্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার খাজা মো. আনাস খান, এক্সনহোস্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সালেহ আহমেদ, হুয়াওয়ে বাংলাদেশের মিডিয়া বিভাগের প্রধান তানভীর আহমেদ, ভিভো বাংলাদেশের কান্ট্রি ব্র্যান্ড ম্যানেজার তানজীব আহমেদ, অপো বাংলাদেশের ব্র্যান্ড প্রমোশন ম্যানেজার নাজমুস সাকিব, রিয়েলমি ব্র্যান্ডের পাবলিক রিলেশন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শাহেদ মোরশেদ জায়গীরদার, শাওমি বাংলাদেশের মার্কেটিং ম্যানেজার সামিউল মেহেদী হিমেল ও পাবলিক রিলেশন সমন্বয়ক মেহেদী হাসান রুমী, ইউমিডিজি ব্রান্ডের সেলস অ্যান্ড অপারেশন হেড মাসুকুর রহমান প্রমুখ।

শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন ওরাকলের বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাবা দৌলা, রিভ গ্রুপের গ্রুপ প্রধান নির্বাহী এম রেজাউল হাসান, প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা রায়হান হোসেন, ডিএক্স গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান কানন, টেকটাইমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিব আরাফাত, টেলিটকের উপ-ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তোফায়েল আজম চৌধুরী, সি-ডাটার বাংলাদেশ প্রধান হ্যামলেট সাহা, বাংলালিংক ডিজিটালের কর্পোরেট হেড অব কমিউনিকেশন্স গাজী তৌহিদ আহমেদ প্রমুখ। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ কম ট র র এক স রহম ন স গঠন আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

ইউটিউবে ভুয়া ‘টক শো’র ছড়াছড়ি, বিভ্রান্ত মানুষ

এক পাশে বেগম খালেদা জিয়া, অন্য পাশে শেখ হাসিনা, মাঝখানে খালেদ মুহিউদ্দীন—ইউটিউবে একটি ‘টক শো’তে তিনজনকে এভাবেই দেখা যায়। যদিও বিষয়টি পুরোটাই ভুয়া।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা কখনোই সুপরিচিত উপস্থাপক খালেদ মুহিউদ্দীনের টক শোতে (আলোচনা অনুষ্ঠান) যাননি; কিন্তু ইউটিউবে কারসাজি করে ভুয়া টক শো তৈরি করা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে খণ্ড খণ্ড ভিডিও চিত্র (ক্লিপ)। মনে হয়, যেন টক শোর অতিথিরাই কথা বলছেন।

সুপরিচিত নবীন ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ, আলোচিত ব্যক্তিত্ব, জনপ্রিয় বিশ্লেষক, সাংবাদিক, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ‘ইনফ্লুয়েন্সার’দের নিয়ে এ ধরনের ভুয়া টক শো তৈরি করা হচ্ছে। তথ্যব্যবস্থায় প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ডিজিটালি রাইটের তথ্য যাচাইয়ের উদ্যোগ ডিসমিসল্যাব বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে, ইউটিউবে এমন ভুয়া টক শো অনেক রয়েছে।

ইউটিউবে কারসাজি করে ভুয়া টক শো তৈরি করা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে খণ্ড খণ্ড ভিডিও চিত্র (ক্লিপ)। মনে হয়, যেন টক শোর অতিথিরাই কথা বলছেন।

ডিসমিসল্যাব ২৮৮টি ভিডিও পর্যালোচনা করেছে। তারা বলছে, অধিকাংশ ভিডিওতে মূল সাক্ষাৎকারগুলোকে প্রাসঙ্গিকতার বাইরে গিয়ে কাটাছেঁড়া করে এমনভাবে বানানো হয়েছে, যা আদতে ঘটেনি। এসব ভিডিও গড়ে ১২ হাজারবার দেখা হয়েছে।

‘ভুয়া টক শোকে উসকে দিচ্ছে ইউটিউব, যেখানে আসল কনটেন্ট জায়গা হারাচ্ছে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন গতকাল বুধবার প্রকাশ করে ডিসমিসল্যাব। এতে বলা হয়, ভুয়া টক শোতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয়। অর্থাৎ সেখান থেকে অর্থ আয়ের সুযোগের সম্ভাবনাও রয়েছে। ইউটিউবের নিজস্ব নীতিমালা ভঙ্গ করে বানানো এ ধরনের ভিডিও প্রচার করে ইউটিউব নিজেও লাভবান হচ্ছে।

ডিজিটালি রাইটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের ভুয়া টক শো অনেকে বিশ্বাস করেন, যার ফলে সমাজে বিভাজন তৈরি হয় এবং রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ওপর প্রভাব পড়ে।

খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে বানানো ভিডিওটি পর্যালোচনা করে ডিসমিসল্যাব বলেছে, ভিডিওতে দেখা যায়, ক্যামেরার দিকে মুখ করে দুই নেত্রী অনলাইনে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ‘ভার্চু৵য়াল টক শো’তে অংশ নিয়েছেন। যেখানে সঞ্চালক খালেদ মুহিউদ্দীন শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানান, ২০২৪ সালের আগস্টে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে; কিন্তু কিছুক্ষণ যেতেই দর্শক বুঝবেন, ভিডিওটি ভুয়া। খালেদা জিয়ার নড়াচড়া স্বাভাবিক না। শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বর তাঁর মুখভঙ্গির সঙ্গে মিলছিল না। খালেদার ভিডিও ফুটেজ বিকৃত বা টেনে লম্বা করা হয়েছে। উপস্থাপকের হাতের অঙ্গভঙ্গি বারবার একই রকম দেখা যাচ্ছিল। বিভিন্ন উৎস থেকে ক্লিপ কেটে জোড়া লাগিয়ে কথোপকথন তৈরি করে এই ভুয়া টক শো বানানো হয়েছে।

এ ধরনের ভুয়া টক শো অনেকে বিশ্বাস করেন, যার ফলে সমাজে বিভাজন তৈরি হয় এবং রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ওপর প্রভাব পড়ে।ডিজিটালি রাইটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী

ডিসমিসল্যাব জানায়, ভুয়া টক শোটি চলতি মাসের শেষ নাগাদ ফেসবুকে দুই লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে। ভিডিওটির ওপর একটি লোগো ছিল ‘টক শো ফার্স্ট নিউজ’ নামে, যা একই নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে মিলে যায়। সেখানে একই ভিডিওটি আরও ১ লাখ ৩৫ হাজারবার দেখা হয়েছে। ওই চ্যানেলে এমন বেশ কিছু ক্লিপ ছিল, যা একইভাবে বিকৃত বা সাজানো হয়েছিল।

প্রবাসী সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউবে ‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’ নামে একটি চ্যানেলে টক শো উপস্থাপনা করেন। সম্প্রতি তাঁর ছবি, ফুটেজ ব্যবহার করে বিভিন্ন ক্লিপ যুক্ত করে প্রচুর ভুয়া টক শো তৈরি করে প্রচার করা হয়েছে। ডিসমিসল্যাব এ বিষয়ে গবেষণা করেছে। তারা ইউটিউবে ‘খালেদ মুহিউদ্দীন টক শো’ লিখে খোঁজ করে অন্তত ৫০টি চ্যানেল চিহ্নিত করেছে। খালেদ মুহিউদ্দীন ছাড়াও এসব চ্যানেলে অন্যান্য উপস্থাপক ও রাজনৈতিক বক্তাদের বিভিন্ন বক্তব্যের ক্লিপ জুড়ে দিয়ে ভুয়া টক শো তৈরি করা হয়েছে। গত ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মার্চে খুঁজে পাওয়া এসব চ্যানেলের মধ্যে ২৯টি চ্যানেল অন্তত একটি বিকৃত টক শো প্রচার করেছে।

ডিসমিসল্যাব বলছে, চিহ্নিত ২৯টির মধ্যে ২০টি চ্যানেল তৈরি হয়েছে ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। বাকি চ্যানেলগুলো ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে তৈরি। পর্যালোচনার আওতায় আসা ভিডিওগুলোর মধ্যে অন্তত ৫৮ জন রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও টক শো উপস্থাপকের ছবি, ফুটেজ বা বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) সমালোচনা করে তৈরি করা হয়েছে ২০ শতাংশ ভুয়া টক শো। বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে নিয়ে সমালোচনামূলক বক্তব্য রয়েছে ১০ শতাংশ করে ভুয়া টক শোতে।

পর্যালোচনা করা ভিডিওগুলোতে ‘ব্যাকগ্রাউন্ড’ (নেপথ্যের দৃশ্য) বদলানো, ফুটেজ কাটাছেঁড়া বা জুম করা এবং মূল প্রসঙ্গ বিকৃত করা হয়েছে। অধিকাংশ ভিডিও ইউটিউব, টেলিভিশন শো, ফেসবুক লাইভ এবং অডিও রেকর্ডিং থেকে ক্লিপ জোড়া লাগিয়ে তৈরি। অনেক ক্ষেত্রে, মূল বক্তার ফুটেজে এমন ভয়েসওভার (কথা) জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যা ভিন্ন প্রেক্ষাপট থেকে নেওয়া এবং যার সঙ্গে কথোপকথনের কোনো সম্পর্ক নেই; কিন্তু বাস্তব ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিওর শিরোনাম ছিল, ‘ড. ইউনূস চীন সফরের পরপরই পদত্যাগ করলেন’। যেখানে যমুনা টিভির লোগো ব্যবহার করা হয়। যমুনা টিভির সঙ্গে ডিসমিসল্যাব যোগাযোগ করে জানতে পারে যে তাদের অনুমতি ছাড়া লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে উপস্থাপক খালেদ মুহিউদ্দীন এবং রাজনীতিবিদ গোলাম মাওলা রনির আলাদা আলাদা ফুটেজ জোড়া লাগানো হয়েছে।

ডিসমিসল্যাব বলছে, রাজনীতিবিদদের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলের নেতা ফজলুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না, এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের ফুটেজও এসব ভুয়া টক শোতে ব্যবহার করা হয়েছে।

পর্যালোচনার আওতায় আসা ভিডিওগুলোর মধ্যে অন্তত ৫৮ জন রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও টক শো উপস্থাপকের ছবি, ফুটেজ বা বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে।

ভুয়া টক শোর বিষয়ে ডিসমিসল্যাবকে খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন, তিনি দর্শকদের তাঁর ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলের আধেয়র ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানান।

ডিসমিসল্যাব বলেছে, ভুয়া টক শোগুলোতে বক্তব্য তুলে ধরা হয় মূলত রাজনৈতিক দল ও সরকারকে নিয়ে। ভুয়া টক শোগুলোর ৪০ শতাংশেই অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনামূলক বক্তব্য রয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) সমালোচনা করে তৈরি করা হয়েছে ২০ শতাংশ ভুয়া টক শো। বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে নিয়ে সমালোচনামূলক বক্তব্য রয়েছে ১০ শতাংশ করে ভুয়া টক শোতে।

বেশিবার দেখা হয়েছে, এমন পাঁচটি ভুয়া টক শো খুঁজে বের করেছে। এসব টক শোতে প্রচার করা হয়েছে অশনিবার্তা, আলোর রাজনীতি ও রাজনৈতিক আলোচনা নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে। পাঁচটি টক শো দুই থেকে ছয় লাখ বার দেখা হয়েছে।

নিজের নিয়মই মানছে না ইউটিউব

ইউটিউবের স্প্যাম ও প্রতারণামূলক আচরণ নীতিমালায় বলা হয়েছে, এমন শিরোনাম, থাম্বনেইল বা বিবরণ ব্যবহার করা যাবে না, যার সঙ্গে ভিডিওর প্রকৃত বিষয়বস্তুর মিল নেই এবং যা দর্শকদের বিভ্রান্ত করে। এসব ভুয়া টক শোতে এ নীতি মানা হয়নি।

ইউটিউবের ছদ্মবেশ ধারণ নিষেধাজ্ঞা নীতিমালায় বলা আছে, অন্য কারও আসল নাম, ব্যবহারকারী নাম, ছবি, ব্র্যান্ড, লোগো বা ব্যক্তিগত কোনো তথ্য ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুমতি ছাড়া সাংবাদিক, টক শো উপস্থাপক ও কনটেন্ট (আধেয়) নির্মাতাদের ফুটেজ ব্যবহার করায় এগুলো ইউটিউবের কপিরাইট নীতিমালাও লঙ্ঘন করতে পারে।

ডিজিটাল মিডিয়া–বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিজস্ব নীতিমালা থাকলেও ইউটিউব এ ধরনের ভুয়া ভিডিওকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে দিচ্ছে। এতে গুণগত সাংবাদিকতা পিছিয়ে পড়ে।

২০২২ সালে একটি খোলাচিঠিতে ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক অভিযোগ করেছিল, ইউটিউব তাদের প্ল্যাটফর্মকে অপব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে—যেখানে অসাধু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বিভ্রান্তি ছড়ানো, মানুষকে প্রতারিত করা, এমনকি সংগঠিত হয়ে অর্থ সংগ্রহ পর্যন্ত করছে।

মিরাজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, এ ধরনের ভুয়া কনটেন্ট বা আধেয় বন্ধ করতে প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব নীতি মনে করিয়ে দিয়ে তাদের ওপর চাপ তৈরি করতে হবে। নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে উদ্যোগী হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ