পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয় অভিমুখে যাওয়ার সময় ম্যাটস শিক্ষার্থীদের ধাওয়া
Published: 9th, February 2025 GMT
পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আন্দোলনকারী মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করলে তাদেরকে ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
এর আগে আজ রোববার বিকেল ৪টার পর শাহবাগে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন ম্যাটস শিক্ষার্থীরা।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম সমকালকে বলেন, শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের হটিয়ে দেওয়া হয়। এসময় তারা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে উষ্কানীমূলক স্লোগান দেয়। তারপরও পুলিশ শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
তবে শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। এসময় কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এদিকে, বিকেল ৩টার পর শাহবাগ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলকে সচিবালয়ে নিয়ে যান স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা তুহিন ফারাবী।
প্রতিনিধি দলে রয়েছেন সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের আজহারুল হক রামিম, মুজাহিদুল ইসলাম, হাসিবুল ইসলাম শান্ত, আহমদ উল্লাহ মানসুর ও শামীম মিঞা।
এর আগে, দুপুর ২টার দিকে শাহবাগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা তুহিন ফারাবী।
তুহিন ফারাবী শিক্ষার্থীদের বলেন, উপ সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদে নিয়োগের বিষয়ে আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সার্কুলার হবে। আপনাদের দাবির বিষয়ে কথা বলতে একটি প্রতিনিধি দলকে আমি নিয়ে যেতে এসেছি।
এসময় সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের সদস্য শামীম মিঞা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কথা বলতে যাচ্ছি।
সেখানে আমরা আমাদের দাবির বিষয়ে কথা বলব। সেখানের যেসব সিদ্ধান্ত হবে তা আমরা ফিরে এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জানাব। তারপর আমরা আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব; আমরা চলে যাব, নাকি থাকব।বিক্ষোভকারী ম্যাটস শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘ তিন মাস একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে আন্দোলন করলেও তাদের দাবি পূরণ করা হয়নি। এজন্য তারা চার দফা দাবিতে সড়কে নেমে আন্দোলন শুরু করেছেন।
চার দফা দাবি হচ্ছে অনতিবিলম্বে দশম গ্রেডে শূন্য পদে নিয়োগ, কর্মসংস্থান ও সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পদ সৃজন, কোর্স কারিকুলাম সংশোধন ও প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট করা, প্রস্তাবিত ‘অ্যালাইড-হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড’ বাতিল করে স্বতন্ত্র ‘মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ বোর্ড গঠন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও বিএমঅ্যান্ডডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম য টস শ ক ষ র থ ম য টস শ ক ষ র থ
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস