কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ভবিষ্যৎ ঝুঁকি সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করেছেন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। চাকরির ধরন পরিবর্তন ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য এআই নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি। সম্প্রতি এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনাকালে এসব কথা বলেন বিল গেটস।

 অনুষ্ঠানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত বিকাশে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে উল্লেখ করে বিল গেটস বলেন, ‘এটা একটু ভীতিকর।’ এআইয়ের কারণে ভবিষ্যতে কাজের ক্ষেত্রে মানুষের প্রয়োজন হবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে বিল গেটস জানিয়েছেন, বেশির ভাগ কাজের জন্য মানুষের প্রয়োজন হবে না। তবে এআইয়ের দ্রুত অগ্রগতি সত্ত্বেও বিশ্বজুড়ে নিয়ন্ত্রক কাঠামো এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়ে গেছে।

শ্রমবাজারের ওপরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব বিষয়ে বিল গেটস জানিয়েছেন, মানুষ নতুন এক যুগে প্রবেশ করেছে। এখন ভবিষ্যতে সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ করতে হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এআই মানুষের চেয়ে অনেক বেশি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে। এআই যেহেতু রুটিন ও নানা ধরনের জটিল বিশ্লেষণনির্ভর কাজ করতে পারে, তাই কাজের পরিবেশ ও কাঠামোকে পুনর্বিবেচনা করতে হতে পারে। তখন হয়তো সপ্তাহে বর্তমানের তুলনায় কম সময় কাজ করতে হবে।

ভবিষ্যৎ ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করলেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে বলে মনে করেন বিল গেটস। তাঁর মতে, এআই শিগগিরই উচ্চমানের শিক্ষা ও চিকিৎসাসংক্রান্ত পরামর্শ প্রদান করতে পারবে। দক্ষতাবিষয়ক শিক্ষাও বর্তমানের তুলনায় আরও বেশি সহজলভ্য হয়ে উঠবে। বিল গেটস মনে করেন, এই পরিবর্তন প্রচলিত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। এরই মধ্যে দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্যসেবায় এআই-চালিত ডায়াগনস্টিক সেবা প্রশিক্ষিত ব্যক্তিদের তুলনায় নির্ভুলভাবে রোগ শনাক্ত করার ক্ষমতা অর্জন করেছে। বিল গেটস বিশ্বাস করেন, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে চিকিৎসাসেবার যে ঘাটতি রয়েছে, তা পূরণে সাহায্য করতে পারে এআই। যেসব অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোর অভাব রয়েছে, সেখানে এআই ভূমিকা রাখতে পারে। একইভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে এআই–নির্ভর শিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত প্রয়োজন মেটাবে।

 সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

আরও পড়ুন২০২৫ সালের প্রযুক্তি–দুনিয়া কেমন হবে, জানালেন বিল গেটস ও স্যাম অল্টম্যান০৮ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ব ল গ টস ক জ করত

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ