সম্পর্ক মানেই আশা এবং প্রত্যাশার মেলবন্ধন । প্রেমিকরা প্রেমের শপথ নিয়ে বলেন, 'প্রিয়, আমি সব সময় তোমার পাশে থাকব, তোমার বিশ্বাস ভাঙব না, আমি তোমার সুখে-দুঃখে সঙ্গী হব । এই প্রতিশ্রুতি একে অপরকে পাশে থাকার ভরসা যোগায় ৷ তাই প্রতি বছর  ১১ ফেব্রুয়ারি  (প্রমিড সে) প্রতিশ্রুতি দিবস পালিত হয় । এই দিনে সঙ্গীরা একে অপরের কাছে প্রেমের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং সারা জীবন একসঙ্গে থাকার শপথ নেয় । 

শোবিজ অঙ্গনেও প্রতিশ্রুতি দেয়া-ভাঙার বিষয়টি স্পষ্ট। জনম জনম ধরে সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি মিলিয়ে যায় মুহুর্তেই। কেউ যেমন ধরে রাখতে চায় নিজের সঙ্গীকে দীর্ঘকাল, তেমনি কেউ কেউ ভঙ্গ করে প্রতিশ্রুতি। নিজের কাছে প্রতিশ্রুতির মুল্য কতটা, সেই অভিমত জানিয়েছেন টালিউডের বেশ কয়েকজন তারকা। 

প্রতিশ্রুতি রক্ষা নিয়ে নিজের মনের কাছে ভীষণভাবে পরিষ্কার অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চ্যাটার্জি। প্রেমের সপ্তাহে তার উপলব্ধি, ‘এমন কোনও প্রতিশ্রুতি কাউকে দিতে পারব না, যেটা আমি রক্ষা করতে পারব না। তাই আমি চাইব না, আমার কাছেও কেউ এমন প্রতিশ্রুতি দাবি করুন।’ কথা রাখতে না পারলে যে নিজের মধ্যেই একটা ভীষণ কষ্ট হয়, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।

আবার কাউকে দিয়ে জোর করে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করানোর পক্ষপাতীও তিনি নন। এমনকি ছেলের কাছেও তার সে দাবি নেই।

সঙ্গীতশিল্পী অনুপম রায় কিন্তু মনে করেন, সম্পর্কে প্রতিশ্রুতি না থাকলে সে সম্পর্কটা গড়েই ওঠে না। কিন্তু সেগুলি খুবই ব্যক্তিগত। তাই রাখা বা না-রাখা নিয়ে খুব বেশি ভাবতে বা বাইরের কাউকে জানাতে নারাজ তিনি।

বরং অনুপমের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নিজেকে দেওয়া কথাগুলি। শিল্পীর কথায়, “অন্যকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করলেও খানিক মিথ্যা দিয়ে ধামাচাপা দেওয়া যায়। কিন্তু নিজেকে দেওয়া কথা না রাখতে পারলে পার পাওয়া যায় না।” 

প্রতিশ্রুতি আসলে ভঙ্গ করার জন্যই যে দেওয়া হয়— মনে করেন অভিনেত্রী পাওলি দামও। তিনি বলেন, “সকলেই যে ইচ্ছা করে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন তা নয়। পরিস্থিতির চাপ থাকে। কিন্তু সেগুলো বোঝা যায়। আমি তাই কথা বলিই কম। আমি কাজে করে দেখাতে চাই।” বলিউডের ভাইজান সালমান খান তাঁর বিখ্যাত সংলাপে বলেন, “একবার কথা দিলে আমি নিজের কথাও আর শুনি না।” সে ভাবেই পাওলিও দাবি করেন, তিনি দেওয়া কথা আজীবন রক্ষা করার চেষ্টা করেন। আবার পরিস্থিতির শিকার হয়ে কেউ কথা রাখতে না পারলেও তেমন দুঃখ পান না অভিনেত্রী। তাই পরিজনদের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত বোঝাপড়াটা ভালই।

প্রতিশ্রুতি দিবস নিয়ে আবার খুব একটা ভাবতে রাজি নন অভিনেতা-পরিচালক পরমব্রত চ্যাটার্জি। তার সাফ কথা, এ সব প্রতিশ্রুতির বিষয়-আশয় তার ‘জমে না’। পরমের বক্তব্য, “ভ্যালেন্টাইনস ডে ঠিক আছে, মিষ্টি একটা ব্যাপার। কিন্তু তার আগে-পিছে এতগুলো দিন আমি মনে রাখতে পারি না। খুব একটা প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করি না।” তবে প্রতিশ্রুতি তো কাউকে না কাউকে দিয়েছেন বটেই। পরমের দাবি, তা কোনও দিনক্ষণ মেনে নয়।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত ৪, আহত ২৯

ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট। পরে বিবিসি আরেকজন নিহতের খবর দেয়। এতে নতুন হামলায় চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেল।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ