বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে নির্বাচনই একমাত্র পথ। যার হাত ধরে আমরা গণতন্ত্রে ফিরে যেতে পারি।’

আজ রোববার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় বড় মাঠে জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে জেলা বিএনপি। জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে জেলা বিএনপির রংপুর বিভাগের আটটি দল অংশ নিচ্ছে। উদ্বোধনী খেলায় পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলা বিএনপির দল অংশ নেয়।

অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ আমি আবেগাপ্লুত। আমি দীর্ঘদিন পর একটা বর্ণাঢ্য ফুটবল টুর্নামেন্টের শুরুটা দেখতে পারছি। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই জাতীয়তাবাদী দল ঠাকুরগাঁও জেলা শাখাকে, তারা টুর্নামেন্টটি আয়োজন করে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষকে নির্মল বিনোদনের পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনে একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে। যদিও কাজটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার। বিএনপি যে কাজটি শুরু করল, আমি মনে করি, তার ধারাবাহিকতা জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও অন্যরা বজায় রাখবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দেশ একটা ভয়ংকর সময় পার করে এসেছে। প্রায় ১৫ বছর একটা পাথর আমাদের বুকের মধ্যে চেপে ছিল। সেই পাথর আমাদের সব প্রতিষ্ঠানকে দানবের মতো ধ্বংস করে দিয়েছে। এই খেলার মাঠগুলোকেও ধ্বংস করে ফেলেছিল। এই মাঠে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ছাত্র-তরুণেরা যেভাবে একটা অভ্যুত্থান সংঘটিত করে আমাদের নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিল, এই সুযোগটা যেন আমরা গ্রহণ করি। শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নয়, আমরা খেলাধুলা, সংস্কৃতি, সামাজিক জীবন, শিক্ষা—সব ক্ষেত্রে যেন একটা নতুন বাংলাদেশ দেখতে পাই।’

ফুটবলে আমিনুল ও সাব্বিরের ফ্যান ছিলেন মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তাঁরা (আমিনুল ও সাব্বির) যখন মাঠে খেলতেন, তখন মাঠে অসংখ্য দর্শক ছিল। কিন্তু আজ ফুটবলে দর্শক কমে গেছে। ফুটবল বাংলাদেশের খেলা, মানুষের খেলা। এই ফুটবলকে আবার জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। আমিনুল সারা বাংলাদেশে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন শুরু করেছেন। এটা ইউনিক ব্যাপার যে একটা রাজনৈতিক দল ক্রীড়াঙ্গনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ জন্য তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানাতে চান। তাঁর প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনায় আমিনুল সারা দেশে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করছেন।

তরুণ দর্শকদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন ক্ষণজন্মা মানুষ। তিনি একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিলেন। এ দেশে গণতন্ত্রকে মুক্ত করে আমূল পরিবর্তন করেছিলেন। মাঠে খেলাধুলাকে তাঁর উন্নত করার চেষ্টা আজও তাঁরা মনে করেন।

আজ বেলা সোয়া তিনটার দিকে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন টুর্নামেন্টের আহ্বায়ক সৈয়দ মমিনুল হক, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। এ ছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, বিএনপির পল্লী ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ টবল ট র ন ম ন ট র গণতন ত র ব এনপ র আম দ র আম ন ল ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শেষ পর্যন্ত কোনো অগণতান্ত্রিক কিংবা অপশক্তির কাছে বিনা শর্তে আত্মসমর্পণের পথে হাটতে হয় কি-না, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন তারেক রহমান। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মাঠে থাকা সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এমন বিপদের কথাও স্মরণ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।’

বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’

দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তবে তাঁর বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।

শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তাঁর দল।

তারেক রহমান বলেন, ‘দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।’

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
  • গণতন্ত্রের পথে সংকট দেখছেন তারেক
  • এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান
  • সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাই এখন জাতির দাবি
  • জনগণের বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার পতন হবে না: সাকি